রংপুর এলাকার বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে মার্চ ফর সায়েন্স

বরাক তরঙ্গ, ১ জুন : বৃহত্তর রংপুর এলাকার বন্যা পরিস্থিতি শনিবার সরেজমিনে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বন্যার কারণ সন্ধান ও তথ্য সংগ্রহ করে মার্চ ফর সায়েন্স, শিলচর চাপ্টারের এক প্রতিনিধি দল। আশু পাল, হানিফ আহমেদ বড়ভুঁইয়া, ইউনিস আলী চৌধুরী এবং হিল্লোল ভট্টাচার্য রংপুরের আঙ্গারজুর এলাকার বরাক নদীর বাঁধ না থাকা অঞ্চল প্রথমে পরিদর্শন করেন। স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে জানা যায় যে, ২০২২ এর বন্যার পর ওই অংশে বাঁধ নির্মাণের নামে অতি নিম্নমানের কিছু কাজ করা হয়েছিল যদিও কিন্তু বরাকের এবারের বন্যার জল তা ধুয়ে মুছে সাফ করে দিয়েছে। ফলে এবারও বাধাহীনভাবে বন্যার জল সেদিকে প্রবেশ করে বৃহত্তর রংপুর এলাকা প্লাবিত করেছে। প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য আশু পাল জানান যে বিগত বন্যার পর মার্চ ফর সায়েন্স, শিলচর চাপ্টারের পক্ষ থেকে সেই ভাঙা জায়গা পরিবর্তন করে আরো কিছু উত্তরদিকে উঁচু স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জানানো হয়েছিল। কিন্তু তাতে প্রয়োজনীয় গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।

বিজ্ঞানসম্মত ভাবে পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়িত হলে এ অবস্থার সৃষ্টি হত না। এছাড়াও আজ সংগঠনের পক্ষ থেকে রংপুর এলাকার বন্যার কারণ অনুসন্ধানে মধুরা নদীর বাঁধ ও স্লুইসগেট পরিদর্শন করা হয়। প্রতিনিধিরা জানান, মধুরা নদীর বাঁধে নাথপাড়া ও মনিপুরী বস্তীর মাঝামাঝি স্থানে একটি স্লুইসগেট বিগত চার বছর ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। ২০২২ সালের বন্যার জল সেদিকে প্রবেশ করে সে অঞ্চল ডুবিয়ে ছিল। এবারও বন্যার জল ভাঙা স্লুইসগেট দিয়ে প্রবেশ করে কান্দিগ্রাম প্লাবিত করেছে। বহু ঘরবাড়ি, ফিশারি, পুকুর ইত্যাদি জলের তলায় চলে গিয়েছে। এছাড়াও এই বাঁধ যথেষ্ট উচুঁ না থাকায় বাঁধ টপকে জল উপরের দিকেও প্রবেশ করেছে। তারা এও বলেন যে মণিপুরী বস্তী এলাকার ইশকেদ আলি লস্করের ঘরের বারান্দা ফুটো করে মধুরা নদীর জল বাঁধের নীচের দিকে প্রবেশ করেছে। সেরকম আরও কিছু কিছু জায়গায় মাটির তলা দিয়ে জল ঢোকার ঘটনা ঘটেছে বলে তারা জানান। এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে জল সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে দেখা না হলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। মার্চ ফর সায়েন্স, শিলচর চাপ্টার এবারের বন্যার জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অকেজো স্লুইসগেটকে দায়ী করেছে। তাদের অভিমত যে, জল সম্পদ বিভাগের মেকানিক্যাল ডিভিশন স্লুইসগেট সারাইয়ে মোটেই গুরুত্ব দিচ্ছে না। বাইশ সালের বন্যার সময়ও এ বিষয়টি প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর করা হয়েছিল। কিন্তু কোনও এক অজানা কারণে তা নিয়ে কেউ উচ্যঁবাচ্য করেন নি, গুরুত্বও দেওয়া হয়নি। এই সরকারি বিভাগের চরম ব্যর্থতা ও গাফিলতির জন্য শিলচরের কালীবাড়িচরের শুঁটকিপট্টি, বেরেঙ্গা খাস ও সাংজুরাই-র ভাঙা, অকেজো স্লুইসগেট দিয়ে বন্যার জল ভেতরে প্রবেশ করেছে।

রংপুর এলাকার বন্যার অন্যতম কারণও ভাঙ্গা স্লুইসগেট। সংগঠনের পক্ষ থেকে অবিলম্বে এগুলো সারাই করা এবং আঙ্গারজুর এলাকায় স্থায়ী নদী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানানো হয়েছে। প্রতি বছর বন্যার হাত থেকে রেহাই পেতে এই সব দাবি নিয়ে সোচ্চার হতে সকল সংগঠন ও সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

Author

Spread the News