লালায় পুকুরে জলে ডুবিয়ে মাকে হত্যা, ধৃত ছেলে
বরাক তরঙ্গ, ১৫ জুন : লালায় সংঘটিত হল নৃশংস হত্যাকাণ্ড। মাকে জলে ডুবিয়ে হত্যা করল ছেলে। লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে লালা শহরের উমেদনগর এলাকায় রবিবার সকালে। এই ঘটনার পর ঘাতক ছেলে মমদীপ নাথকে লালা পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সঙ্গে ঘাতক ছেলের হাত থেকে মৃত মা মঞ্জুরাণি নাথের নিথর দেহ উদ্ধার করে লালা পুলিশ হাইলাকান্দি এসকে রায় সিভিল হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করেছে। এই হত্যাকাণ্ডের খবর চাউর হতে গোটা লাল এলাকায় চাঞ্চল্য দেখা দেয়। এই ঘটনার পর লালা থানায় মঞ্জুরানি নাথের ভাই তপন নাথ পাষণ্ড ভাগিনাকে অভিযুক্ত করে লালা থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন।

জানা গেছে, ঘাতক মমদীপের মা মঞ্জুরানি নাথ (৪৮) রবিবার সকালে ছোট ছেলে রত্নদীপ নাথকে নিয়ে গরুর জন্য ঘাস কেটে বাড়িতে ঢুকছিলেন। তখন ঘড়িতে সকাল প্রায় পৌনে আটটা। এরমধ্যে ঘরে থাকা বড় ছেলে মমদীপ নাথ মায়ের সঙ্গে পারিবারিক বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটি শুরু করে।এরমধ্যে রাগের মাথায় মা-কে টেনে বাড়ির পুকুরে নিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত পুকুরে টেনে হ্যাচড়ে নামিয়ে কোমর জলের মধ্যে মাকে ডুবিয়ে পা দিয়ে গলায় চাপা মেরে ধরে রাখে। এমতাবস্থায় আবার মাকে মেরে ফেলছে বলে চিৎকার করছিল।তখন এমতাবস্থা দেখে আশপাশের লোকজন উদ্ধার করতে আসলে উল্টো ঘাতক ছেলে বলে যারা আসবেন উদ্ধারে তাদেরকে সে একই অবস্থা করবে। তখন এই পরিস্থিতি দেখে ছোট ছেলে দৌড়ে লালায় থাকা মামা তপন নাথকে ডেকে আনতে যায়। এরমধ্যে পাশের বাড়ি থেকে মোবাইলে মামার কাছে কল যায় এই ঘটনার। মামা মোবাইলের মাধ্যমে খবর পেয়ে দ্রুত বোনের বাড়িতে ছুটে আসেন। এবং আসার পথে ছোট ভাগিনাকে রাস্তা থেকে সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। এসে দেখেন পাষন্ডের মতো জন্মধাত্রী মা-কে ঘাতক ভাগিনা জলের তলায় গলায় পা দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এমতাবস্থা দেখে সঙ্গে সঙ্গে লালা পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

খবর পেয়ে লালা থানার ওসি রাজেন রংমাই দলবল নিয়ে দ্রুত ছুটে যায় ঘটনাস্থলে। পুলিশ দেখেও কোন ভয় পায়নি ঘাতক ছেলে। শেষ পর্যন্ত জলে নেমে ঘাতক ছেলেকে পুলিশ সহযোগে অনান্যরা রশি দিয়ে বেঁধে উপরে নিয়ে আসেন। এরসঙ্গে ঘাতক ছেলের হাত থেকে জলের তলা থেকে মঞ্জুরানি নাথের দেহ উদ্ধার করে দ্রুত লালা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মঞ্জুরানিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপর সেখান থেকে ময়না তদন্তের জন্য নিথর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় হাইলাকান্দি সিভিল হাসপাতালে। এই লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে লালায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি দেখা দেয়। উল্লেখ্য, স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত দু/চারদিন থেকে ঘাতক ছেলে মমদীপ নাথ একটু আবোল তাবোল করছিল। আর আজ যে এভাবে জন্মধাত্রী মা-ছেলের হাতে নির্মমভাবে প্রাণ হারাবেন তা-কি তিনি স্বপ্নেও ভাবছিলেন!
এদিকে, মঞ্জুরানির স্বামী পুলিশ কর্মী মানিককুমার নাথ আজ থেকে মাস তিনেক আগে মারা যান। এদিকে এই প্রতিবেদন পাঠানো পর্যন্ত মঞ্জুরানির লাশ হাইলাকান্দি রয়েছে বলে জানা গেছে। ঘাতক ছেলে লালা থানার লক আপে রয়েছে।