করিমগঞ্জেও স্বাক্ষর অভিযান শুরু ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের
বরাক তরঙ্গ, ১ সেপ্টেম্বর : অল আসাম ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের অসম রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে চূড়ান্ত গ্ৰাহকস্বাৰ্থ বিরোধী প্ৰিপেইড স্মাৰ্ট মিটার ব্যবস্থা ও বিদ্যুতের বৰ্দ্ধিত মাশুল প্ৰত্যাহার করা, বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল-২০২২ বাতিল করা, বিলের কোনো ধারাকে ঘুরপথে চাপিয়ে না দেওয়া এবং বিদ্যুৎ খণ্ডের বেসরকারিকরণের ষড়যন্ত্র বন্ধ করা ইত্যাদি দাবিতে রাজ্যের পাঁচ লক্ষ বিদ্যুৎ গ্ৰাহকের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে মুখ্যমন্ত্রীর নিকট প্রদানের কার্যসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সারা রাজ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শুক্রবার সকাল সাড়ে এগারোটায় করিমগঞ্জ জেলা সদরের ছন্তর বাজার এলাকায় অ্যাসোসিয়েশন এর করিমগঞ্জ জেলা কমিটির পক্ষ থেকে এই স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান শুরু করা হয়। স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান চলাকালে সংগঠনের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন সুনীতরঞ্জন দত্ত, জ্যোতিষ পুরকায়স্থ, সুভাষ নন্দী, সুবীর বরণ রায়, গোপাল পাল, নন্দনকুমার নাথ।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের অসম রাজ্য কমিটির অন্যতম আহ্বায়ক হিল্লোল ভট্টাচার্য। বক্তারা বলেন, বিদ্যুৎ হচ্ছে বর্তমান মানব সভ্যতার অগ্ৰগতির অতি গুরুত্বপূৰ্ণ উপাদান। কিন্তু এই বিদ্যুৎ পরিষেবাকে ক্ৰমান্বয়ে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। স্বাধীনতার পর জনগণের ট্যাক্সের কোটি কোটি টাকা খরচ করে দেশের শিল্পোন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বিদ্যুৎ পরিষেবাকে শক্তিশালী করতে পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়। কিন্তু কেন্দ্ৰীয় সরকার কেন্দ্ৰ-রাজ্যের যৌথ তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ বিভাগের কেন্দ্ৰীকরণ ঘটিয়ে কর্পোরেট গোষ্ঠীর মুনাফা লুটার স্বাৰ্থে বিদ্যুৎ খণ্ডের বেসরকারিকরণ করতে উঠেপড়ে লেগেছে। অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবাকে লাভজনক পণ্যে রূপান্তরিত করতে চাইছে। তাই প্ৰিপেড স্মাৰ্ট মিটার, ‘টিওডি’ নীতি ইত্যাদি প্ৰবৰ্তন করা হয়েছে। স্মাৰ্ট মিটার প্রতিস্থাপনের পর গ্ৰাহকদের বিদ্যুৎ বিল তিন চার গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। প্ৰিপেড ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ ব্যবহারের পূর্বেই গ্ৰাহকদের মাশুল প্রদান করতে হচ্ছে।
প্ৰিপেড স্মাৰ্ট মিটার সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মচারীকে কর্মহীন করে দিচ্ছে। শুধু তাই নয় বিদ্যুৎ উৎপাদনের সরকারি সংস্থাগুলোকে ক্ৰমাগত দুৰ্বল করে কৰ্পোরেট গোষ্ঠীকে অত্যাধিক সুযোগ প্ৰদান করা হচ্ছে। ফলে লোডশেডিং সমস্যা দিন দিন বাড়ছে এবং বিদ্যুতের প্ৰতি ইউনিটের মূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এছাড়াও বিদ্যুৎ খণ্ডের ব্যক্তিগতকরণ, বেসরকারিকরণ প্ৰক্ৰিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সংসদে বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল-২০২২ উত্থাপিত হয়েছে। এই বিল আইনে পরিণত হলে ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষ বিদ্যুৎ ব্যবহার থেকে বঞ্চিত হবে। তাই বিদ্যুৎ পরিষেবাকে রক্ষা করতে সকল জনসাধারণকে স্বাক্ষর প্রদান করার জন্য আহ্বান রাখেন। এদিনের এই কার্যসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বাসুদেব সেন, স্বপন বনিক, পরিমল চক্রবর্তী, পৃথ্বিজিৎ দেব, বিষ্ণু দত্ত পুরকায়স্থ, অমিতাভ চৌধুরী ও সুজিৎ কুমার পাল।
প্রতিবেদক : মোহাম্মদ জনি, করিমগঞ্জ।