জলের স্রোতে ধসে গেল জাতুয়ায় সড়ক, করিমগঞ্জে পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি

মোহাম্মদ জনি, করিমগঞ্জ।
বরাক তরঙ্গ, ২০ জুন : করিমগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার জাতুয়ায় লঙ্গাই নদীর জলের স্রোতে ধসে গেল ফকিরবাজার-লাতু এফএন রোড। এ দিন সকালে জাতুয়ায় বন্যার স্রোতে সড়কটি ধসে পড়ে। এতে নয়া করে প্লাবিত হয় এলাকার প্রায় দশটি গ্রাম। বন্ধ হয়ে পড়েছে যান চলাচল। এতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয় ফকিরবাজার সহ করিমগঞ্জ শহরের সঙ্গে প্রায় কুড়িটি গ্রামের।

এ খবর পেয়ে দফার দফায় ঘটনাস্থলে এসে পরিদর্শন করেছেন এএসটিসির চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন বিধায়ক মিশনরঞ্জন দাস, করিমগঞ্জের সাংসদ কৃপানাথ মালাহ ও জেলাশাসক মৃদুল কুমার যাদব। জাতুয়ায় পৌঁছে মিশনবাবু এই ভয়াবহ অবস্থা দেখে জেলাশাসকের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং অস্থায়ী ভাবে হলেও মানুষের যাতায়াতের উপযোগী করে দিতে জেলাশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কিছুক্ষণ পরেই ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন জেলাশাসক মৃদুলকুমার যাদব ও সাংসদ কৃপানাথ মালা। জেলাশাসক শীঘ্রই যাতায়াতের ব্যবস্থা করে দেবেন বলে আশ্বস্থ করেন।

জলের স্রোতে ধসে গেল জাতুয়ায় সড়ক, করিমগঞ্জে পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি

এ দিকে, করিমগঞ্জ শহরের অবস্থা ভয়াবহ। করিমগঞ্জ জেলা সদর শহরের নীলমণি রোড এবার প্রথম বন্যার জলে ডুবেছে। সুভাষনগর কালীবাড়ির ভেতরে, মদনমোহন রোড জলমগ্ন। বহু দোকানঘরে জল ঢুকেছে।

গত কয়দিনের অবিরাম বৃষ্টিপাতের ফলে নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় বহু নাগরিক উঁচু স্থানের সন্ধানে নদী তীরবর্তী বাঁধের ওপর ত্রিপল টাঙিয়ে সংসার গড়েছেন। তাঁরা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন বৃদ্ধ মা-বাবা, স্ত্রী, পুত্র-কন্যা এবং গবাদি পশু নিয়ে। একই দৃশ্য সুপ্রাকান্দি থেকে পোয়ামারা পর্যন্ত জাতীয় সড়কের পাশেও। এছাড়া লঙ্গাই রেলওয়ে স্টেশনে আশ্রয় নিয়েছে বহু পরিবার।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে করিমগঞ্জ জেলা পুলিশ প্রশাসন সুপ্রাকান্দি থেকে পোয়ামারা পর্যন্ত জাতীয় সড়কে সব ধরনের যানবাহনের চালককে গতি নিয়ন্ত্রণ করে চলাচল করতে আহ্বান জানিয়েছে।

এদিকে বন্যার তোড়ে ভেসে গিয়েছে অনেক গ্রামীণ সড়ক। বেশিরভাগ জায়গায়ই বন্ধ হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বুধবার রাতের টানা বৃষ্টি থেকে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। উদ্বেগ কাটছে না কোনওভাবেই।লঙ্গাই, কুশিয়ারা নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। উপনদী সহ খাল-বিলের জলস্তরও আবার বাড়ছে। অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে এ বছরের দ্বিতীয় দফার বন্যা পরিস্থিতি। আপাতত বৃষ্টি কমলেও, গত কয়দিনের লাগাতার বর্ষণে জেলার প্রায় ২৮০টি গ্রাম বন্যার কবলে পড়েছে। জনমগ্ন জেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

Author

Spread the News