মাদকবিরোধী দিবসে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের ‘বার্তা’ শিলচরে

সচেতনতা ও চক্ষু আঘাত প্রতিরোধে জোর_____

জনসংযোগ, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ২৬ জুন : “মাদকাসক্তি কেবল একটি ব্যক্তিগত বিপর্যয় নয়, এটি এক ধরনের সামাজিক মহামারী, যার বিরুদ্ধে সচেতনতা, ঐক্য এবং কঠোর পদক্ষেপ একসাথে নিতে হবে।”  এই দৃঢ় বার্তায় বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ‘বার্তা’ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন কাছাড় জেলা অপরাধ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রজতকুমার পাল, আইপিএস। আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস উপলক্ষে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অন্তর্গত প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর, অসমের উদ্যোগে এই আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। বক্তব্যে তিনি জানান, ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সের তরুণ সমাজ মাদকাসক্তির প্রধান শিকার। মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং বন্ধুবান্ধবের প্রভাব তরুণদেরকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দেয়, যা শেষ পর্যন্ত পরিবার ও সমাজে ভয়ানক প্রভাব ফেলে। “প্রতিটি মাদক ট্যাবলেট জব্দ হওয়া মানেই এক সম্ভাব্য জীবন বাঁচানো,” তিনি বলেন।

কাছাড় জেলার বিভিন্ন অংশে পরিচালিত মাদকবিরোধী অভিযানের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান যে ইয়াবা ট্যাবলেট, ব্রাউন সুগার এবং কাশির ওষুধ বিপুল পরিমাণে উদ্ধার করা হয়েছে। এই সফলতার পেছনে পুলিশ বাহিনীর গোয়েন্দা তৎপরতা, গোপন তথ্য ও সচেতন নাগরিকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

শুধু পুলিশি অভিযানের ওপর না নির্ভর করে, সমাজিক সচেতনতা, শিক্ষা এবং প্রাথমিক স্তরের হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন শ্রী পাল। ‘বার্তা’ কর্মসূচিকে তিনি একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ হিসেবে প্রশংসা করেন এবং সংবাদমাধ্যমকে আহ্বান জানান যেন তারা তথ্যভিত্তিক এবং বাস্তবসম্মত প্রতিবেদন পরিবেশন করে দেশের যুবসমাজকে সচেতন করে তোলে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত কাছাড়ের স্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম সঞ্চালক ডাঃ শিবানন্দ রায় চক্ষু আঘাতের বিষয়েও আলোকপাত করেন। তিনি জানান, অধিকাংশ ক্ষেত্রে যারা তাপ, রশ্মি ও রাসায়নিক পদার্থ নিয়ে কাজ করেন তারাই চক্ষু আঘাতের শিকার হন। ইউভি ফিল্টার চশমা, মুখোশ ও সুরক্ষা ফেইস শিল্ড ব্যবহারের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি এই ক্ষেত্রের পুনর্বাসন নীতিকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে তথ্য ও প্রচার দপ্তরের আধিকারিক পন্থৈবী সিংহ ‘বার্তা’ উদ্যোগের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে বলেন, “এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো গণমাধ্যমের সঙ্গে কার্যকর সংলাপের মাধ্যমে মাদক এবং চোখের আঘাত সম্পর্কে সামাজিক দায়বদ্ধতা ও সচেতনতা বৃদ্ধি করা।”

অনুষ্ঠানের শেষে সাংবাদিকদের সাথে এক প্রাণবন্ত ইন্টার‌্যাক্টিভ সেশন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে তারা বক্তাদের বিভিন্ন প্রশ্ন করেন এবং মতামত বিনিময় করেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অধীনে পরিচালিত এই ‘বার্তা’ কর্মসূচির মাধ্যমে সমাজে একটি প্রজ্ঞাসম্পন্ন ও সচেতন পরিবেশ তৈরির সংকল্প গ্রহণ করা হয়, যার লক্ষ্য একটি মাদকমুক্ত এবং নিরাপদ ভবিষ্যৎ গঠন করা।