কাছাড়ে বন্যা বিপর্যয়ের মধ্যেই জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসা পরিষেবা ত্রাণশিবিরে

বরাক তরঙ্গ, ৮ জুন : অসংখ্য মানুষের যন্ত্রণার মধ্যে দাঁড়িয়ে যখন প্রকৃতি যেন থাবা বসিয়েছে কাছাড়ের জনজীবনে, ঠিক তখনই প্রশাসনিক তৎপরতা ও স্বাস্থ্য বিভাগের নিরলস প্রচেষ্টা যেন আশার আলো হয়ে উঠেছে জেলার প্রতিটি কোণায়। বন্যার ভয়াল চেহারা ছাপিয়ে, জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদব, মন্ত্রী কৌশিক রায়ের সক্রিয় ও মানবিক নেতৃত্বে শিলচর ও আশপাশের প্লাবিত অঞ্চলে গড়ে উঠেছে এক নিরলস চিকিৎসা আন্দোলন—যা শুধু পরিসংখ্যান নয়, বরং প্রতিটি অসহায় প্রাণে প্রাণসঞ্চার করেছে।

জেলার বহু ত্রাণ শিবিরে মোতায়েন হয়েছে প্রশিক্ষিত চিকিৎসক, নার্স, প্যারা-মেডিক্যাল ও স্বাস্থ্যকর্মীদের দল, যারা দিনরাত এক করে কাজ করে চলেছেন—বিনামূল্যে চিকিৎসা, ওষুধ বিতরণ ও স্বাস্থ্যসচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে। কারও শরীরে ডায়ারিয়ার প্রকোপ, কারও উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসে দীর্ঘদিনের কষ্ট—তবুও কোথাও আর অন্ধকার নেই, এই সাহসীরা পৌঁছে দিচ্ছেন সেবা ও সহানুভূতির প্রতীক হয়ে।

কাছাড়ে বন্যা বিপর্যয়ের মধ্যেই জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসা পরিষেবা ত্রাণশিবিরে

ত্রাণ কেন্দ্রগুলি যেন শুধুই চিকিৎসার স্থান নয়, বরং মা ও শিশুর নিরাপত্তায় বিশেষ নজর দিয়ে ‘ব্রেস্টফিডিং কর্ণার’ স্থাপন সহ, স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পুষ্টির পরামর্শেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এবং এর সবকিছুই অত্যন্ত সচলভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম সঞ্চালক ডাঃ শিবানন্দ রায়, জেলা দুর্যোগ স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার নোডাল অফিসার ডাঃ রোহন বিশ্বাস, এনএইচএম-এর ডিপিএম রাহুল ঘোষ এবং তাঁদের নিবেদিত টিম—সজল দেব, হাবুল বর্মন, পিনাকপাণি রায়, হেমাঙ্গ বরা, পিয়ালী চক্রবর্তী, পার্থ রায় ও মৃগাঙ্ক পালের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়।

কাছাড়ে বন্যা বিপর্যয়ের মধ্যেই জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসা পরিষেবা ত্রাণশিবিরে

প্রতিদিন শত শত মানুষ চিকিৎসা শিবিরে এসে পাচ্ছেন শুধু চিকিৎসা নয়, বরং একরাশ আশ্বাস—তাঁরা একা নন। গত ১ থেকে ৬ জুন পর্যন্ত মোট ৪৮৭টি শিবিরে ৭,২৬৯ জন মানুষ চিকিৎসা পেয়েছেন, যেখানে ওআরএস, প্যারাসিটামল, সংক্রমণ ও চর্মরোগের ওষুধ, রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ওষুধ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

অন্যদিকে, রাজ্যের মন্ত্রী কৌশিক রায় প্রত্যন্ত ত্রাণ কেন্দ্রগুলোতে গিয়ে নিজে চিকিৎসা ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা পর্যবেক্ষণ করছেন। তাঁর কথায়, “প্রত্যেক দুর্গত মানুষের কাছে পৌঁছানোই আমাদের প্রধান কাজ। চিকিৎসা ও সেবার একটিও অভাব যেন না থাকে।” এই কথা শুধু মুখের কথা নয়, তার প্রমাণ মিলছে জনমানসের প্রতিক্রিয়ায়।

কাছাড়ে বন্যা বিপর্যয়ের মধ্যেই জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসা পরিষেবা ত্রাণশিবিরে

জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদব অত্যন্ত স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, “পরিস্থিতি যতই কঠিন হোক, মানুষের সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যের প্রশ্নে কোনও আপস নয়। স্বাস্থ্য, খাদ্য, আশ্রয়—সব জায়গাতেই তাৎক্ষণিক সাড়া আমাদের অঙ্গীকার।” প্রশাসনিক, চিকিৎসা ও গ্রাউন্ড-লেভেল কর্মীদের দুর্দান্ত সমন্বয়েই সম্ভব হয়েছে এই নজিরবিহীন উদ্যোগ।

Author

Spread the News