পর্যটকদের বাঁচাতে জঙ্গির হাত থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নিতে চাইলে ঝাঁঝরা করে দিল আদিলকে

২৩ এপ্রিল : সৈয়দ আদিল হুসেন শাহ। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় মৃতদের তালিকায় তিনিই একমাত্র স্থানীয় বাসিন্দা। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ যখন হামলা শুরু হয়, প্রাণ বাঁচাতে ছোটাছুটি করছেন পর্যটকরা তখন সাময়িক বিহ্বলতা কাটিয়ে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন স্থানীয় কাশ্মীরি যুবক। জঙ্গিদের হাত থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পারেননি। জঙ্গিদের বুলেট তাঁকে ঝাঁঝরা করে দেয়। সাহস ও মানবিকতা দেখানোর মাশুল দিতে হয় দরিদ্র ঘোড়া চালককে।

হতদরিদ্র কাশ্মীরি পরিবারের একমাত্র রোজগেরে আদিল। পর্যটকদের তাঁর ঘোড়ায় চাপিয়ে বৈসরন ভ্যালি অবধি নিয়ে আসা আর ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়াই ছিল তাঁর পেশা। এতেই পরিবারের পেট চলত। মঙ্গলবারও পর্যটকদের নিয়ে এসেছিলেন আদিল। কিন্তু জঙ্গি হামলা দেখে নিজেকে স্থির রাখতে পারেননি। যাঁদের ঘোড়ায় চাপিয়ে নিয়ে এসেছিলেন তাঁদের উপর হামলা দেখে স্থির থাকতে পারেননি। চুপ থাকলে হয়তো বেঁচে যেতে পারতেন। কিন্তু ঝাঁপিয়ে পড়ে জঙ্গিদের রাইফেল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করার মাশুল নিজের জীবন দিয়ে দিতে হয়েছে আদিলকে। বাড়িতে আদিলের বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী ও সন্তানরা রয়েছে।

বাড়ির একমাত্র রোজগেরে সদস্যের মৃত্যুতে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে পরিবারের। শোকার্ত মা সারাক্ষণ কেঁদেই চলেছেন। কীভাবে পরিবারের পেট চলবে সেই ভাবনাতেই রাতের ঘুম উড়েছে সকলের। কাল ঘটনার খবর পেয়েই ছেলের মোবাইলে ফোন করেন বাবা সৈয়দ হায়দার শাহ। কিন্তু মোবাইল বন্ধ ছিল। ৪টে ৪০ মিনিট নাগাদ ফোন চালু হলেও কেউ ফোন ধরেনি। পরে থানায় গিয়ে জানতে পারেন ছেলে নেই। হায়দার শাহ বলেন, ‘যারা এই হামলা চালিয়েছে, তাদেরও একই পরিণতি হবে।’

পর্যটকদের বাঁচাতে জঙ্গির হাত থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নিতে চাইলে ঝাঁঝরা করে দিল আদিলকে

Author

Spread the News