হাইলাকান্দিতেও ভাষা গৌরব সপ্তাহ পালন শুরু
জনসংযোগ, হাইলাকান্দি।
বরাক তরঙ্গ, ৩ নভেম্বর : হাইলাকান্দি জেলায়ও রবিবার থেকে ভাষা গৌরব সপ্তাহ পালন শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়ায় রাজ্য সরকারের নির্দেশে জেলায় সরকারি উদ্যোগে ভাষা গৌরব পালন সপ্তাহ আগামী ৯ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। রবিবার সপ্তাহ পালন উপলক্ষে হাইলাকান্দির এসএস কলেজের প্রেক্ষাগৃহে কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে জেলা আয়ুক্ত নিসর্গ হিভারে জেলার সব ভাষাভাষী নাগরিককে তাদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসারের আবেদন জানান। তিনি বলেন কেন্দ্রীয় সরকার অসমীয়া ও বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়ায় রাজ্য সরকারের নির্দেশে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে এই ভাষা গৌরব সপ্তাহ পালন করা হচ্ছে।। এতে জেলার ১২৫৭ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জেলার ৪০০ পূজা কমিটি, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সহ জেলার সব কয়টি সরকারি বিভাগের অধীন শাখাউপভোক্তাদের মধ্যে ভাষা গৌরব সপ্তাহ পালনের কার্যসূচির আয়োজন করা হবে।
জেলা আয়ুক্ত এইসব কার্যসূচিতে জেলার সব নাগরিকদেরকে অংশগ্রহণ করে নিজস্ব ভাষা সংস্কৃতির উৎকর্ষতা বাড়ানোর আবেদন জানান। পাশাপাশি তিনি জেলার সমৃদ্ধ সাহিত্যচর্চায় যারা অবদান যুগিয়েছেন তাদেরকে অভিনন্দন জানান। প্রসঙ্গত তিনি সিলেবাসে থাকা পাঠ্যসূচি সম্পর্কিত ভাষার পাঠগুলি সম্পর্কে পড়ুয়াদেরকে কিভাবে আরো আগ্রহী করে তোলা যায়, সেবিষয়ে সবাইকে চিন্তা-চর্চা করতেও পরামর্শ দেন। পাঠ্য সূচির বাইরে গিয়েও সরকারি জেলা গ্রন্থাগারে থাকা বাংলা ভাষার গ্রন্থ গুলি অধ্যয়ন করে জ্ঞান আহরণ করার পরামর্শ দেন নিসর্গ হিভারে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে।
অনুষ্ঠানে বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনের হাইলাকান্দি জেলার সভানেত্রী ড. ইন্দিরা ভট্টাচার্য বরাক উপত্যকায় মাতৃভাষার অধিকার আদায়ে ১৯৬১ সাল ১৯৭২ সাল এবং ১৯৮৬ সালে প্রাণ আহুতি দেওয়া শহিদদের স্মরণ করে বাংলা সাহিত্যের ক্রমবিকাশের ধারা বর্ণনা করেন। তিনি বাংলা ভাষার উৎকর্ষতা তুলে ধরে বলেন ভাষা যত সাবলীল হয়, ভাষা তত উন্নত হয়।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট কবি ও ঔপন্যাসিক আশুতোষ দাস, রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী, স্বপন ভট্টাচার্য এবং নীতিশ ভট্টাচার্য প্রাসঙ্গিক বক্তব্য পেশ করেন। রবিবারের কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত সব নাগরিক বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে একটি করে কৃতজ্ঞতাপত্রে স্বাক্ষর করেন। প্রশাসন থেকে এই কৃতজ্ঞতাপত্রগুলি নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
রবিবারের কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে জেলার নয় জন কৃতি সাহিত্যিককে মানপত্র দিয়ে সম্বর্ধনা জানানো হয়। এঁরা হলেন আশুতোষ দাস,দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য, ড. মমতাজ বেগম বড়ভূইয়া, ড. ইন্দিরা ভট্টাচার্য আশিস নাথ, রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী, ড. লক্ষ্মী নাথ, ড. নিজাম উদ্দিন, ড. অপরাজিতা দে। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ সুযোগ বক্তব্য পেশ করার পাশাপাশি সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী শংকর চৌধুরী।