গণেশ নন্দীর ছেঁড়া কাপড়ের চিত্র ও ভাস্কর্য গেল লন্ডনে

গণেশ নন্দীর ছেঁড়া কাপড়ের চিত্র ও ভাস্কর্য গেল লন্ডনে

বরাক তরঙ্গ, ৯ অক্টোবর : করোনা অতিমারির সময় থেকে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃশ্যকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গণেশ নন্দীর ছেঁড়া কাপড়ের ভাস্কর্য ও পেইন্টিং সব মহলের চর্চার বিষয়। এবার তাঁর কাজ পাড়ি দিল শিলচর থেকে সুদূর লন্ডনে। শিলচর থেকে তার একটি ভাস্কর্য ও দু’টি ছবি কিনে নিয়ে গেলেন চিত্র তারকা রাজদীপ চৌধুরী এবং ব্রিটেনের প্রাক্তন সাংসদ তথা বিদেশ দপ্তরের প্রাক্তন প্রাইভেট পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি এরিক অলেরেনশো।

করোনা অতিমারির দরুন দেশজুড়ে হওয়া লকডাউনের সময় থেকে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক গণেশ নন্দীর ছেঁড়া কাপড়ের তৈরি ভাস্কর্য ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। পরবর্তীতে একই মাধ্যমে তৈরি পেন্টিংও সমানভাবে সমাদৃত হয়। মাধ্যমগত অভিনবত্ব এবং ব্যতিক্রমী শৈলীর জন্য সামাজিক মাধ্যম সহ সব মহলেই চর্চার খোরাক যোগায়। তখন থেকেই তার ভাস্কর্যের কৌশল শেখার জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গা সহ বিদেশের অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেন। কেনার জন্যও অনেকেই প্রস্তাব দেন।

গণেশ নন্দীর ছেঁড়া কাপড়ের চিত্র ও ভাস্কর্য গেল লন্ডনে

ব্রিটিশ ফিল্ম দুনিয়া ও বলিউডে কাজ করা শিলচরের জন্মজাত রাজদীপ চৌধুরীও গণেশের কিছু ভাস্কর্য ও ছবি কেনার ব্যাপারে কথাবার্তা বলেন। ব্রিটেন এবং বলিউডের নামিদামি বহু চিত্র তারকার সঙ্গে অভিনয় করছেন রাজদীপ। বেশ কয়েকটি রয়েছে প্রধান চরিত্রে। এ মুহূর্তে তার অভিনীত ছবি ‘এ টিচার্স গিফট’ বিশ্বমঞ্চের মর্যাদা সম্পন্ন ‘ট্রিবেকা ফেস্টিভেল-এও স্থান করতে সমর্থ হয়েছে। রাজদীপ একজন ভালো অভিনেতা, লেখক, ক্রিকেটার হওয়ার পাশাপাশি একজন ভালো সংগ্রাহকও। তার কাছে রামকিঙ্কর বেইজ, মকবুল ফিদা হোসেন সহ দেশি- বিদেশি প্রখ্যাত বহু শিল্পীর অসংখ্য অরিজিনাল কাজ রয়েছে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর হঠাৎ দুপুরবেলা রাজদীপ তার বন্ধু এরিক অলেরেনশোকে নিয়ে হাজির হন অধ্যাপক গণেশ নন্দীর শিলচর তারাপুরের বাড়িতে। এরিক প্রাক্তন ব্রিটিশ সাংসদ এবং বিদেশ দপ্তরের প্রাক্তন পার্লামেন্ট প্রাইভেট সেক্রেটারি। আবার একজন ভালো শিল্প বোদ্ধা ও সংগ্রাহক। লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের স্নাতক এরিক বর্তমানে জনপ্রিয় টেলিভিশনশো ‘চলো ইন্ডিয়া উইথ এরিক জি’র উপস্থাপকও। এরিক এবং রাজদীপ গণেশের ছেঁড়া কাপড়ের ছবি ও ভাস্কর্যের বিশাল ভান্ডার সরাসরি সামনে থেকে দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন। তাঁরা তাঁর শিল্পকর্মের অভিনবত্ব এবং অনন্যতার ভূয়ষী প্রশংসা করেন। বহু কাজ তারা একই সঙ্গে কিনে নিয়ে যাবার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে আগামী দিনে প্রদর্শনীর পরিকল্পনা রয়েছে বলে তাদের নিরস্ত করেন গণেশ। এরপরও তিনটি কাজ তাঁরা নাছোড় হয়ে কিনে নিয়ে যান। তারমধ্যে ছিল বিশাল আকার কচ্ছপ, শস্য ক্ষেতের এরিয়েল ভিউ এবং আরেকটি সদ্য সমাপ্ত আকাশপথে বরাক পরিবেষ্টিত অপরূপ শিলচর শহর। কাজগুলি তারা লন্ডন নিয়ে যান। পাশাপাশি তারা জানিয়ে যান বিষয়গত অভিনবত্ব ও শৈলীর জন্য বেশ কিছু কাজ আন্তর্জাতিক মঞ্চেও সাড়া ফেলার ক্ষমতা রাখে। তাঁরা এ কাজে সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও দিয়ে রাখেন।

Spread the News
error: Content is protected !!