মেঘালয়ে হানিমুনে এসে খুন, গ্রেফতার স্ত্রী সহ চার
৯ জুন : মেঘালয়ের হানিমুনে এসে নিখোঁজ হয়েছিল উত্তরপ্রদেশে দম্পতি। নিখোঁজের দশদিন পর যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। এরপর সৃষ্টি হয় রহস্য। পর্যটনস্থলে কে খুন করল তাঁকে? কেন এমন দুর্গম রাস্তা, ঘন শুনসান জঙ্গলে, কোনও গাইড ছাড়াই গিয়েছিলেন নবদম্পতি? রাজাকে খুন করে কি তাঁর স্ত্রীকে লোপাটই করে দেওয়া হল? একাধিক সন্দেহ দানা বাঁধছিল।
শেষ পর্যন্ত সাতদিনের মাথায় মেঘালয় পুলিশ মামলার কিনারা করে। স্ত্রী সোনম-সহ মোট চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
দীর্ঘ খোঁজাখুঁজির পর ২ জুন রাজার দেহ পাওয়া গেলেও সোনমকে কোথাও কোনওভাবেই খুঁজে পাচ্ছিলেন না তদন্তকারী আধিকারিকরা। ড্রোন, স্নিফার ডগ, সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা- কিছুতেই মিলছিল না তরুণীর খোঁজ। বৃষ্টিতে খাদে তলিয়ে যাওয়া থেকে পাচার, একাধিক প্রবণতা সামনে আসে। ডাকাতির সময় খুনের প্রসঙ্গও বাদ যায়নি। প্রশ্ন ওঠে মেঘালয় পর্যটন নিয়ে। কিন্তু সমস্ত আন্দাজ, সংশয়কে মিথ্যা প্রমাণ করে এবার স্বামীকে খুনের দায়ে পুলিশের জালে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া সোনম রঘুবংশী। অভিযোগ, রাজাকে খুনের ছক কষেছিলেন তিনিই।
মেঘালয়ের পুলিশের ডিজি ইদাশিশা নংরাং জানিয়েছেন, এই মামলায় সোনম-সহ মোট চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, হানিমুনে এসে পেশাদার খুনি ভাড়া করে স্বামীকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিলেন সোনম।
কয়েকদিন আগেই বিয়ে হয়েছিল রাজা ও সোনমের। মে মাসে হানিমুনে মেঘালয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। সেখানকার বিভিন্ন পর্যটন এলাকা ঘুরে বেড়ান। শেষবার দেখা যায় ২৩ মে, শিলংয়ের কাছে সোহরা (চেরাপুঞ্জি) এলাকায়। তারপর থেকেই নিখোঁজ হয়েছিলেন।
মিসিং ডায়েরির ভিত্তিতে রাজ্যজুড়ে তল্লাশি শুরু করে মেঘালয় পুলিশ। অবশেষে ২ জুন, গভীর খাদ থেকে উদ্ধার হয় ২৮ বছরের রাজার মৃতদেহ। পরে সোহরারিম এলাকার একটি পার্কিং লট থেকে তাঁদের ভাড়া করা স্কুটারটি পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। স্কুটারটির চাবি তখনও লাগানো ছিল।
তদন্ত চলাকালীন, স্থানীয় এক পর্যটন গাইড পুলিশকে জানান, নিখোঁজ হওয়ার দিন রাজা এবং সোনমকে আরও তিনজন পুরুষের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল। এই সূত্র ধরেই শুরু হয় আরও গভীর তদন্ত।

এরপরই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ জানতে পারে, সোনম নিজেই ভাড়া করেছিলেন খুনিদের। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ধৃত আরও তিনজনের। এই চারজন মিলে পরিকল্পনা করেন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের।
ঘটনায় গোটা মেঘালয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কী কারণে সোনম এই চক্রান্ত করেছিলেন, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ব্যক্তিগত কোনও বিরোধ, আর্থিক কারণ নাকি অন্য কোনও মোটিভ এক্ষেত্রে রয়েছে, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।