জুয়া ও মদের আসরে হানা, জনতার হাতে আটকে গেলেন সার্কল অফিসের বড়বাবু সহ চারজন
মোহাম্মদ জনি, শ্রীভূমি।
বরাক তরঙ্গ, ১৩ অক্টোবর : সমাজকে রক্ষা করতে শেষমেশ মাঠে নামতে হল রামকৃষ্ণনগর থানার অন্তর্গত রাজারামপুর ষোল পরিবার এলাকার আমজনতার। এলাকার এক বসতবাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে চলছিল জুয়া, মদ্যপান ও অসামাজিক কার্যকলাপ। এতে প্রশাসনের ভূমিকাও ছিল দুর্বল। ফলে পরিবেশ দিন দিন বিষাক্ত হয়ে উঠছিল। এক কথায় সমস্ত অসামাজিক কার্যকলাপের আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছিল। এমতাবস্থা দেখে স্থানীয়রা তাদের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ আর আটকে রাখতে পারেনি। রবিবার রাতে জনতার ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে। ক্ষুব্ধ জনতা ধৈর্য্য হারিয়ে ওই বাড়িতে হানা দেয়। এই আকস্মিক অভিযানে চমকে ওঠে পুরো এলাকা। জনতা যখন বাড়িটি ঘিরে ধরে, তখন দেখা যায় ভেতরে কয়েকজন ব্যক্তি জুয়ার টেবিলে বসে মদ্যপ অবস্থায় মাতলামি করছে। ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে হাতে-নাতে ধরে ফেলেন ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। তাদের মধ্যে ছিলেন রামকৃষ্ণনগর সার্কল অফিসের বড়বাবু সহ আরেক কর্মী।
হানার পর এক উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা চারজনকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে গেলে পরিস্থিতি অন্য মোড় নেয়। উত্তপ্ত আকার ধারণ করে। অভিযোগ, পুলিশ প্রথমে বড়বাবুকে রক্ষা করার চেষ্টা করে, তাতেই জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। শুরু হয় ধস্তাধস্তি ও উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডা।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় রামকৃষ্ণনগর থানার অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী এবং এলাকার কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিও ছুটে আসেন। তাঁদের মধ্যস্থতায় অবশেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে পুলিশ চারজনকে থানায় নিয়ে যায়, সঙ্গে বাজেয়াপ্ত করে কয়েকটি গাড়ি ও বাইক।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার মূল অভিযুক্ত বাড়ির মালিক অভিযানের পর থেকেই পলাতক। তাঁকে ধরতে তল্লাশি চলছে।
প্রতিবেশীদের অভিযোগ, ঘোষ পদবীর এক ব্যক্তির বাড়িতেই প্রতিরাতে চলে জুয়ার আসর, মদ্যপান, এমনকি দেহব্যবসার মতো নোংরা কারবার। বহুদিন ধরেই তাঁরা এইসব কার্যকলাপের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন, কিন্তু তাতে কোনও ফল মেলেনি। স্থানীয়দের দাবি, প্রশাসন যদি আগে থেকেই নজরদারি চালাত, তবে রাজারামপুরে এভাবে অসামাজিক কার্যকলাপ মাথা তুলতে পারত না।