ফিট ইন্ডিয়া মিশনে নাগরিকদের আহ্বান জানালেন জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদব

কাছাড়ে জাতীয় ক্রীড়া দিবস পালন জেলা প্রশাসনের

জনসংযোগ, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ২৯ আগস্ট : জাতীয় ক্রীড়া দিবস উপলক্ষে কাছাড় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শুক্রবার শিলচরের জেলা ক্রীড়া সংস্থার  ইনডোর স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হয় এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। হকির জাদুকর মেজর ধ্যানচাঁদের জন্মবার্ষিকীকে স্মরণ করে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তা থেকে শুরু করে ক্রীড়াপ্রেমী, জনপ্রতিনিধি, প্রাক্তন ক্রীড়াবিদসহ বহু বিশিষ্টজন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে মেজর ধ্যানচাঁদের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদব। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত জেলা আয়ুক্ত ফিলিস হ্রাংচাল,  সহকারী আয়ুক্ত তথা জেলা মিশন সমন্বয়ক, বহ্নিখা চেতিয়া ও সহকারী আয়ুক্ত তথা ভারপ্রাপ্ত উপ -সঞ্চালক তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগের আঞ্চলিক কার্যালয় শিলচর, দীপা দাস। উপস্থিত ছিলেন ডিএসএ সভাপতি শিবব্রত দত্ত, সম্পাদক অতনু ভট্টাচার্য এবং শিলচরের বিধায়কের প্রতিনিধি দেবাশিস সোম ক্রীড়া মহলের বহু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।

ফিট ইন্ডিয়া মিশনে নাগরিকদের আহ্বান জানালেন জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদব

সভামঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদব জাতীয় ক্রীড়া দিবসের ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, “আজকের দিনটি আমরা উদ্‌যাপন করছি হকির জাদুকর মেজর ধ্যানচাঁদের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে, যিনি তাঁর অসামান্য দক্ষতা দিয়ে ভারতীয় হকিকে বিশ্বদরবারে সগৌরবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। ১৯২৮ থেকে ১৯৩৬ সালের মধ্যে ভারতের অলিম্পিক সাফল্যের পেছনে তাঁর অবদান অপরিসীম।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে ধ্যানচাঁদের অনুপ্রেরণায় ভারত ১৯৪৮, ১৯৫২ ও ১৯৫৬ সালে সোনা জিতেছিল এবং ১৯৬৪ সালে ফিরে এসেছিল স্বর্ণপদক জয়ে। জেলা আয়ুক্ত যাদব বলেন, জাতীয় ক্রীড়া দিবস কেবল স্মরণ নয়, এটি আমাদের কাছে একটি বার্তা খেলাধুলা শুধু প্রতিযোগিতা নয়, বরং শৃঙ্খলা, ঐক্য এবং অধ্যবসায়ের জীবনদর্শন।

ফিট ইন্ডিয়া মিশনে নাগরিকদের আহ্বান জানালেন জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদব

এই বছরের উদ্‌যাপন ফিট ইন্ডিয়া মিশনের আওতায় অনুষ্ঠিত হয়েছে, যার মূল স্লোগান ‘এক ঘণ্টা খেলো মাঠে’। এ বিষয়ে জেলা আয়ুক্ত  বলেন, “এই উদ্যোগ শুধুমাত্র একটি প্রচার নয়, এটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারার জন্য অপরিহার্য পদক্ষেপ। প্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টা শারীরিক অনুশীলন করা উচিত, যাতে আমরা জীবনধারাজনিত অসুস্থতা থেকে মুক্ত থাকতে পারি।” তিনি বিদ্যালয়, কলেজ, সমাজ এবং পরিবারগুলিকে খেলাধুলাকে দৈনন্দিন জীবনের অংশ করার জন্য আহ্বান জানান। তাঁর কথায়, “ফিটনেস কোনো বিলাসিতা নয়; এটি সুস্থ সমাজ গঠনের মূলভিত্তি।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত জেলা ক্রীড়া আধিকারিক সার্চে টেরাং বলেন, জাতীয় ক্রীড়া দিবস পালনের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ক্রীড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়ানো সম্ভব এবং কাছাড় জেলার ঐতিহ্যগত ক্রীড়া সংস্কৃতিকে পুনর্জীবিত করা যাবে। ডিএসএ সভাপতি শিবব্রত দত্ত প্রশাসনের এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন যে, “আজকের দিনটি শুধু উদ্‌যাপন নয়, এটি কাছাড়কে শক্তিশালী ক্রীড়া পরিকাঠামোর পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।” তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে ডিএসএ ভবিষ্যতেও স্থানীয় ক্রীড়াবিদদের উন্নতির জন্য সবধরনের সহযোগিতা করবে।

উদ্‌যাপনের অন্যতম আকর্ষণ ছিল তিনজন প্রবীণ ক্রীড়াবিদকে আজীবন অবদানের জন্য সম্মাননা প্রদান। তাঁদের জীবনের সাফল্যের গল্প শুনে উপস্থিত সকলেই গর্ব অনুভব করেন এবং অনুষ্ঠানস্থল করতালির গর্জনে মুখরিত হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর শুরু হয় জেলা-স্তরের ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতা, যা ক্রীড়াপ্রেমীদের উৎসাহে ভরিয়ে তোলে। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিপ্লব বিশ্বাস।

জাতীয় ক্রীড়া দিবসের কর্মসূচি এখানেই থেমে থাকছে না। আগামী ৩০ আগস্ট নার্সিং হাইস্কুলে অনুষ্ঠিত হবে প্রবীণ নাগরিকদের দাবা প্রতিযোগিতা এবং ৩১ আগস্ট রাজা জিসি হাইস্কুল, বড়খলা থেকে সকাল ৭টায় শুরু হবে সাইকেল র‍্যালি, যার মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব যাতায়াত এবং স্বাস্থ্যসচেতনতার বার্তা দেওয়া হবে।

Spread the News
error: Content is protected !!