আজ শবে বরাত, জেনে নিন ফজিলত

বরাক তরঙ্গ, ১৩ ফেব্রুয়ারি : আজ শবে বরাত বা লাইলাতুল বরাত। এ রাত মহিমান্বিত এক রাত। এ রাতে অসংখ্য বান্দা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও কল্যাণ লাভ করেন। প্রতিবছর হিজরি ক্যালেন্ডারের শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে শবে বরাত পালন করা হয়।

শবে বরাত ফারসি ভাষার শব্দ। ‘শব’ অর্থ রাত। আর ‘বরাত’শব্দের অর্থ সৌভাগ্য। আরবিতে একে বলে লাইলাতুল বরাত, সৌভাগ্য রজনী। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, মহান আল্লাহ এ রাতে বান্দাদের গুনাহ মাফ করে দেন, জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন।

শবে বরাত পালন কবে থেকে শুরু হয়েছে-এমন প্রশ্ন অনেকেই করে থাকেন। উম্মুল মু’মিনিন হজরত আয়েশা রা. বলেছেন, একদিন গভীর রাতে রসুলুল্লাহ সা. নামাজ পড়ছিলেন। নামাজ পড়ার সময় তিনি দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে দীর্ঘ সেজদা করেন। এভাবে দীর্ঘ সেজদা করতে দেখে, হজরত আয়েশা রা. এর ধারণা হয়, রসুলাল্লাহ সা. হয়তো নামাজ পড়তে গিয়ে ইন্তেকাল করেছেন।

হজরত আয়েশা রা. তখন তার সন্দেহ দূর করার জন্যে রসুলুল্লাহ সা. বৃদ্ধাঙ্গুলিটি ধরে নাড়া দেন। তাতে রসুলাল্লাহ সা. আঙুল নাড়িয়ে সাড়া দেন। এরপর রসুলাল্লাহ সা. সেজদা থেকে উঠে নামাজ শেষ করে হজরত আয়েশা রা. কে বললেন, হে আয়েশা! তোমার কি ধারণা, আল্লাহর রসুল তোমার হক নষ্ট করবেন? হজরত আয়েশা রা. তখন উত্তরে বলেন, না, ইয়া রসুলুল্লাহ।

তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি জানো এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তার রাসুলই ভালো জানেন।

আজ শবে বরাত, জেনে নিন ফজিলত

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন ইরশাদ করলেন, ‘এটা হলো অর্ধ শাবানের রাত (শবে বরাত)। আল্লাহ তায়ালা অর্ধ-শাবানের রাতে তার বান্দার প্রতি মনোযোগ দেন এবং ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং অনুগ্রহপ্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই।’ (শুআবুল ঈমান, বায়হাকি: ৩/৩৮২-৩৮৩; তাবারানি: ১৯৪)

এই রাতের ফজিলত সম্পর্কে হজরত মুয়াজ বিন জাবাল রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন অর্ধ শাবানের রাতে (শবেবরাতে) আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, অর্ধ শাবানের রাতে (শবেবরাতে) আল্লাহ তায়ালা তার সৃষ্টিজগতের প্রতি মনোযোগ দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ ভাবাপন্ন ব্যক্তি ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন।

এ দিন রাতে ইবাদত করে পরদিন রোজা রাখার কথা বলা হয়েছে হাদিসে। এ বিষয়ে হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘১৫ শাবানের রাত (১৪ তারিখ দিবাগত রাত) যখন আসে তখন তোমরা এ রাতটি ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং দিনের বেলা রোজা রাখো। মাজাহ, হাদিস, ১৩৮৮) (ইবনে

আজ শবে বরাত, জেনে নিন ফজিলত

এই রাতের মূল উদ্দেশ্য হলো তাওবা করা, আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং আত্মা ও মনকে বিশুদ্ধ করা। মুসলমানরা এই রাতে নফল ইবাদত, দোয়া ও তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করে, যাতে তারা আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত লাভ করতে পারে। (সংগৃহীত)

Author

Spread the News