কৃষ্ণাই বনাঞ্চলের পঞ্চাশটিরও বেশি এক্সকাভেট দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান
বরাক তরঙ্গ, ১২ জুলাই : গোয়ালপাড়া জেলার পাইকান বনাঞ্চলে প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান। নিরাপত্তা কর্মীদের একটি বৃহৎ দল মোতায়েনের পাশাপাশি উচ্ছেদ অভিযানে পঞ্চাশটিরও বেশি এক্সকাভেটর ব্যবহার করা হয়েছে। প্রশাসনের লক্ষ্য হলো কৃষ্ণাই পাইকান সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ১,০৩৮ বিঘা জমি পুনরুদ্ধার করা। উচ্ছেদ অভিযানটি পাইকান সংরক্ষিত বনাঞ্চলের অন্তর্গত বিদ্যাপাড়া, বেতবাড়ি এবং আশুদুবি এলাকায় চলছে। পাইকান সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ১,০৮০টি পরিবার, একটি ‘জল জীবন মিশন’ প্রকল্প, আটটি মসজিদ, চারটি স্কুল এবং একটি মাদ্রাসা রয়েছে। শনিবার জেলা প্ৰশাসন রণংদেহী মেজাজে এক হাজারের বেশি সশস্ত্র পুলিশ, সিআরপিএফ এবং বন রক্ষী বাহিনী নিয়ে কৃষ্ণাইয়ের পাইকান রিজার্ভ ফরেস্টে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে। আজ সকাল ৬টা থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। সূত্ৰটি জানিয়েছে, নোটিশ পাওয়ার পর প্রায় ৭০ শতাংশ বেদখলকারী স্বেচ্ছায় বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। তবে চোখের সামনে নিজেদের হাতে গড়া বাড়িঘর, গাছপালা ইত্যাদি এক্সক্যাভ্যাটর দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার দৃশ্য দেখে বাসিন্দারা বুকফাঁটা কান্না জুড়েছেন।
এদিকে, উচ্ছেদের বিরুদ্ধে বিরোধী কংগ্রেস ও এআইইউডিএফ-এর বিধায়ক-নেতা এবং ছাত্রমুক্তি সংগ্রাম সমিতির পদাধিকারীরা প্রতিবাদ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাদের উচ্ছেদস্থলের প্রবেশদ্বারে রুখে দেওয়ায় তাঁরা সেখানেই প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। তবে আজকের উচ্ছেদ প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে। বড় ধরনের কোনও প্রতিরোধের খবর পাওয়া যায়নি।

উচ্ছেদের শিকার এবং স্থানীয়রা প্রশাসন তথা রাজ্য সরকারের কাছে তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে আকুল আহ্বান জানিয়েছেন। একজন উচ্ছেদকৃত বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা উচ্ছেদের বিরোধিতা করছি না। তবে কোনও বিকল্প আশ্রয় ছাড়া আমাদের চোখের সামনে আমাদের বাড়িঘর ভেঙে পড়তে দেখা অসহনীয়। সরকারকে আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।’ উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই ধুবড়ি জেলার বিলাসীপাড়া সমজেলার অন্তৰ্গত চিড়াকুটা, চরুয়াবাখরা, সন্তোষপুরে পরিচালিত উচ্ছেদ অভিযান চলে।