প্রাক্তন আইএএস সেওয়ালি দেবী শর্মার বিরুদ্ধে ইডির তল্লাশি

বরাক তরঙ্গ, ৫ আগস্ট : মানি লন্ডারিংয়ের মামলায় প্রাক্তন আইএএস সেওয়ালি দেবী শর্মার বিরুদ্ধে গুয়াহাটিতে ইডির তল্লাশি।মঙ্গলবার এমন মামলায় গুয়াহাটির আটটি স্থানে তল্লাশি চালিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। এই মামলায় প্রাক্তন আইএএস অফিসার সেওয়ালি দেবী শর্মা এবং অন্যান্য ব্যক্তির নাম জড়িত।

সেওয়ালি দেবী শর্মা রাজ্যের স্টেট কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (SCERT)-এর অধীনস্থ ওপেন অ্যান্ড ডিস্টেন্স লার্নিং (ODL) সেলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ও ডিরেক্টর ছিলেন। তাঁর কার্যকালীন সময়ে ব্যাপক অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে।

শর্মা ছিলেন দুই বছরের ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টারি এডুকেশন (D.El.Ed) প্রোগ্রাম পরিচালনার দায়িত্বে, যা ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (NCTE) অনুমোদিত দূরশিক্ষার মাধ্যমে চালানো হচ্ছিল। অসম সরকারকে ৫৯টি অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানে এই কোর্স পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয়, যার প্রতিটিতে ১০০ জন করে সরকারি স্কুলের শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। মোট প্রশিক্ষণার্থী সংখ্যা ছিল ২৭,৮৯৭ জন।

কিন্তু অনুমোদিত সীমা উপেক্ষা করে, শর্মা ৩৪৭টি স্টাডি সেন্টার খোলেন এবং ১.০৬ লক্ষেরও বেশি প্রশিক্ষণার্থী ভর্তি করান, যা অনুমোদনের তুলনায় অনেক বেশি। অভিযোগ, অতিরিক্ত কোর্স ফি আদায়ের উদ্দেশ্যেই এই কাজ করা হয়।

অর্থনৈতিক নিয়ম লঙ্ঘন করে, তিনি ODL সেলের জন্য ৫টি আলাদা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলেন, যেগুলির একমাত্র স্বাক্ষরকারী ছিলেন তিনি নিজেই। এটি অসমের আর্থিক দায়িত্ব ও বাজেট ব্যবস্থাপনা আইনের (Assam FRBM Act) পরিপন্থী। প্রায় ১১৫ কোটি টাকা কোর্স ফি হিসেবে আদায় করা হয় এবং তা সরকারি কোষাগারে না জমা দিয়ে এই অ্যাকাউন্টগুলিতে জমা দেওয়া হয়।

এর মধ্যে ১০৫ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয় করা হয় সরকারি বিধি মেনে না চলেই। সরবরাহ ও নির্মাণ সংক্রান্ত চুক্তিগুলি বিনা টেন্ডার ও বিজ্ঞাপনেই প্রদান করা হয় এবং বেশিরভাগ চুক্তি যায় তাঁর পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠদের মালিকানাধীন সংস্থাগুলির হাতে। এর মধ্যে ছিলেন তাঁর মেয়ে, জামাই এবং ঘনিষ্ঠ সহচরগণ।

উল্লেখযোগ্যভাবে, সারং মোড়ে নামক এক চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট এই আর্থিক কেলেঙ্কারির অন্যতম লাভবান ব্যক্তি, যিনি ODL সেলের অডিটর হিসেবেও কাজ করতেন। অধিকাংশ সংস্থার কোনও পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না এবং সরবরাহ বা কাজ শেষ হওয়ার কোনও যাচাই ছাড়াই পরিশোধ করা হয়।

অসমের মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ তদারকি সেল ইতিপূর্বে এই বিষয়ে এফআইআর দায়ের করেছে এবং তদন্ত শেষে সেওয়ালি দেবী শর্মাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে। তদন্তে উঠে এসেছে, অভিযুক্ত শর্মা ৫.৭ কোটিরও বেশি টাকার অবৈধ সম্পত্তি অর্জন করেছেন এই সময়কালে।

Spread the News
error: Content is protected !!