গ্রীষ্মকালে খুন-খারাবি বাড়ে, বর্ষায় কমে- আজব যুক্তি বিহার পুলিশের

১৮ জুলাই : বিহারে যেন ফিরে এসেছে জঙ্গলরাজ। কখনও প্রকাশ্যে রাস্তায় গুলি করে খুন করা হচ্ছে আইনজীবী বা রাজনৈতিক নেতাকে, কখনও আবার হাসপাতালের ভিতরেই হচ্ছে শুটআউট। বিহারের ঘটনায় ঘুম ছুটেছে সবার। তবে হেলদোল নেই পুলিশের। অপরাধের ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রাজ্য পুলিশের যুক্তি, এটা যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে।

গ্রীষ্মকালে অপরাধ বাড়ে, আবার বর্ষা এলেই অপরাধ কমে যায়। বৃহস্পতিবার পটনার একটি বেসরকারি হাসপাতালের ভিতরেই শুটআউট হয়। আইসিইউ-তে ভর্তি থাকা চন্দন মিশ্র নামক প্যারোলে মুক্তি পাওয়া অপরাধীকে পরপর গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয় পাঁচজন। তারপর তারা হাসপাতাল ছেড়েও পালিয়ে যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই তোলপাড় বিহারের রাজ্য-রাজনীতি।

কেন এভাবে দিনের পর দিন অপরাধ বাড়ছে, এই প্রশ্নের উত্তরে রাজ্য পুলিশের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল কুন্দন কৃষ্ণন বলে বসলেন, “এটাই ঐতিহাসিক ট্রেন্ড। হোলি থেকে বর্ষাকাল আসার আগে পর্যন্ত কাজের বিশেষ সুযোগ থাকে না। তখন অপরাধ বাড়ে। বিগত কয়েক দশক ধরেই দেখা গিয়েছে যে মে, জুন ও জুলাই মাসে খুনের ঘটনা বেড়েছে। আবার বর্ষা আসতেই মানুষ কৃষিকাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তাই এই সময়ে অপরাধ বাড়ে। আবার বর্ষা আসতেই পরিস্থিতি বদলে যায়। কৃষকরা চাষবাসে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।”

অর্থাৎ কার্যত তিনি কৃষকদের দিকেই আঙুল তুললেন। যদিও পরে তাঁর কাছে এই বিতর্কিত মন্তব্যের ব্যাখ্যা চাওয়া হলে তিনি জানান যে এই ধরনের অপরাধের উদ্দেশ্য সবসময় আর্থিক কারণ নয়, ব্যক্তিগত সম্পর্কই।

যদিও এই বিষয়টিকে ভালভাবে গ্রহণ করেননি কৃষকরা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা এলজেপি নেতা চিরাগ পাসওয়ানও এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “অন্নদাতা কৃষকদের পরোক্ষে খুনি বলা শুধু তাদের অসম্মান করাই নয়, তাদের আত্মত্যাগ ও কঠোর পরিশ্রমকেও অপমান। অপরাধীদের ধরার বদলে বিহার পুলিশ অযৌক্তিক মন্তব্য করতেই বেশি ব্যস্ত।”

প্রসঙ্গত, সামনেই বিহারের বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এভাবে অপরাধ বাড়ায়, সাধারণ মানুষ থেকে বিরোধী দলগুলি মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও তাঁর প্রশাসনকেই দুষছেন। কার্যত ব্যাকফুটে এখন নীতীশ কুমার।
খবর : tv9 Bangla.

Spread the News
error: Content is protected !!