ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় ‘ভারত মালা’ প্রকল্পের কাজে বাধা জমি মালিকদের ধলাইয়ে

বরাক তরঙ্গ, ১৭ মার্চ : ধলাইয়ের বনগ্রাম ও ইসলামাবাদ সীমান্তবর্তী কমরুল রোড সংলগ্ন এলাকায় ‘ভারত মালা’ সড়ক প্রকল্পের কাজে বাধা দিয়েছেন জমি মালিকরা। তাঁদের অভিযোগ, জমি অধিগ্রহণ করা হলেও এখনও পর্যন্ত ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি।
সোমবার সকালে নির্মাণ সংস্থা কাজ শুরু করতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা বাধা দেন। তাঁরা নির্মাণ সংস্থার এস্ককেভেটর ও ডাম্পার আটকে রাখেন। খবর পেয়ে নির্মাণ সংস্থার আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে আসেন। কিন্তু জমি মালিকরা ক্ষতিপূরণ না পাওয়া পর্যন্ত কাজ করতে দিতে রাজি হননি।

জমি মালিকদের অভিযোগ, প্রায় এক বছর আগে তাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি তারা। এর ফলে তাদের চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে। তারা অবিলম্বে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
নির্মাণ সংস্থার আধিকারিকরা জানিয়েছেন, তারা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন। তবে, জমি মালিকদের অভিযোগের বিষয়ে তারা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
‘ভারত মালা’ সড়ক প্রকল্পটি কেন্দ্রীয় সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। এই প্রকল্পের অধীনে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিকল্পে সারা দেশে সড়ক নির্মাণ কাজ চলছে। এর অংশ হিসেবে শিলচর থেকে লায়লাপুর পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার অংশে সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। এই সড়কটি তৈরি হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গায় প্রকল্প বাস্তবায়নে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট এলাকার জন্য নিয়োজিত পাটোয়ারী কানুনগোরা বিভিন্নভাবে জটিলতার সৃষ্টি করছেন। কোন কারণ ছাড়া দীর্ঘদিন আটকে রাখছেন ফাইল। সাধারণ মানুষ সোনাই সার্কল অফিস ও শিলচর ভুবাসন আধিকারিক কার্যালয়ে বারবার যোগাযোগ করেও কোন সুরাহা পাচ্ছেন না। অনেকের অভিযোগ বাঁকা পথে টাকা রোজগারের জন্য আটকে রাখা হয় ফাইল।

ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় ‘ভারত মালা’ প্রকল্পের কাজে বাধা জমি মালিকদের ধলাইয়ে

অভিযোগকারীরা বলেন, কোনও দাবি আপত্তি না থাকা সত্ত্বেও তাদের ক্ষতিপূরণের ফাইল আটকে রাখা হয়েছে। ক্ষতিপূরণ প্রাপক একজন উল্লেখ করেন ১১ বছর আগে তিনি এক খন্ড জমি ক্রয় করেছিলেন, যার কাছ থেকে তিনি জমি ক্রয় করেছিলেন তিনি অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন সোনাই সার্কেল অফিসের জনৈক পাটোয়ারী তাকে সেই মৃত ব্যক্তির কাছ থেকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট এনে দেওয়ার জন্য বলেছেন। এভাবে বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি করে মহৎ একটি প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে।
পাটোয়ারী কানুনগোদের বাঁকা পথে টাকা রোজগারের মতলব ছেড়ে দিলে কোন জটিলতা থাকবে না বলে উল্লেখ করেন ক্ষতিপূরণ বঞ্চিত জমি মালিকরা।

ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় ‘ভারত মালা’ প্রকল্পের কাজে বাধা জমি মালিকদের ধলাইয়ে

অনেকে অভিযোগ করেন জিরাতের টাকা না দিয়ে তাদের ঘর ভেঙে ফেলার আদেশ দেওয়া হচ্ছে বারবার। বলা হচ্ছে জায়গা ছেড়ে দেওয়ার কথা। একেই তো ক্ষতিপূরণ পাননি অপরদিকে জায়গা ছেড়ে যাবে কোথায়। ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দিলে কোথাও এক খণ্ড জমি ক্রয় করে মাথা গোঁজানোর ঠাঁই করে নিতেন। ক্ষতিপূরণের টাকা না দিয়ে তাদেরকে উঠে যাওয়ার কথা বলায় ক্ষোভ ব্যক্ত করেন অনেকেই। তাঁরা জটিলতা কাটিয়ে দ্রুত ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিষয়ে কাছাড়ের জেলা আয়ুক্তের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন ক্ষতিপূরণ বঞ্চিত জমির মালিকরা।

Author

Spread the News