হৃদপিন্ডে ক্রুটি ও বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের মেগা শনাক্তকরণ শিবির সম্পন্ন
পর্যবেক্ষণে শিলচরে হাজির মিশন সঞ্চালক লক্ষ্মমনন এস, তদারকি এডিসি খালেদার, অঞ্চলভিত্তিক আয়োজনে শীর্ষে বরাক
ইকবাল লস্কর, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ১০ সেপ্টেম্বর : জন্মগত হৃদপিন্ডে ক্রুটি (সিএইচডি) ও বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের (বিএমটি) জন্য দুদিনের বরাক ভিত্তিক মেগা শনাক্তকরণ শিবির শেষ হল শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সোম ও মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত শিবিরের প্রথম দিন ৩৬৬ জন শূন্য থেকে ১৮ বছর বয়সের হৃদরোগী নাম তালিকাভুক্ত করেন। এরমধ্যে ২৯১ শিশুদের জন্মগত হৃদযন্ত্রে বিসঙ্গতি হিসেবে শনাক্ত করা হয়। তালিকাভুক্ত ও শনাক্তকরণের দুটি ক্ষেত্রেই রাজ্যের অন্যান্য অঞ্চলভিত্তিক শিবিরের মধ্যে শীর্ষস্থান দখল করেছে বরাকভ্যালি জোনের এই শিবির। শিবিরে ৫১ শিশুদের প্রাথমিক চিকিৎসা করে ছেড়ে দেয়া হয়। তাদের দেহে অন্যান্য জটিলতা থাকলেও হৃদপিন্ডে জন্মগত কোন ক্রুটি ধরা পড়েনি।
পরদিন বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের শিবিরে ৮১ শিশুর (অনূর্ধ্ব ১৪ বছর বয়স) পরীক্ষা করা হয়। এরমধ্যে ৪৯ শিশুকে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের জন্য শনাক্ত করা হয় এবং এই শিশু সমেত ১২৭ জনের এইচ এল এ (হিউম্যান লিউকোসাইট এন্টিজেন) গ্রহন করা হয়। বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের শিবির বরাক উপত্যকায় প্রথমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। যে শিবিরে থ্যালাসেমিয়া রোগী ও তাদের পরিবারের সব সদস্যের বোনম্যারো প্রতিস্থাপনের জন্য পরীক্ষা করা হয়। শনাক্ত হওয়া হৃদরোগী ও থ্যালাসেমিয়া রোগীদের দফায় দফায় তাদের চিকিৎসা সরকারী খরচায় নারায়না হৃদয়ালয়ে করা হবে। প্রসঙ্গত, রাজ্যের সবকটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই শিবির আয়োজন করা হয়। এন এইচ এমের রাষ্ট্রীয় শিশু স্বাস্থ্য কার্যসূচীর (আরবিএসকে) অধীনে হৃদপিন্ডে ক্রুটি ও স্নেহস্পর্শ স্কিমের আওতায় বিএমটি এবং সর্বোপরি মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার উদ্দোগে এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। দেশের প্রতিষ্টিত চিকিৎসালয় নারায়ানা হৃদয়ালয়ের কলকাতা, মুম্বই, ব্যাঙ্গালুরু ও গুয়াহাটি ইউনিটের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সহযোগিতায় এর আয়োজন করে অসম সরকার।
এদিকে, শিবির পর্যবেক্ষণে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হাজির হন এন এইচ এমের সঞ্চালক লক্ষ্মমনন এস। শিবিরে উপস্থিত হয়ে শিবির পরিচালনার বিভিন্ন দিক খুঁটিয়ে দেখে সন্তোষ ব্যক্ত করেন। পরে তিনি শিলচর মেডিক্যাল কলেজের কার্ডিওলজি বিভাগ, পেডিয়াট্রিক আইসিইউ ঘুরে দেখেন। অধ্যক্ষ ডাঃ ভাস্কর গুপ্তের কাছ থেকে কলেজের নানা সমস্যার কথাও শোনেন এবং সুরাহার আশ্বাস দেন। তাঁর আগে শিবির তদারকি করেন জেলার অতিরিক্ত আয়ুক্ত ড০ খালেদা সুলতানা আহমেদ। শিবিরকে স্বার্থক করে তুলতে জেলা স্বাস্থ্য সমিতি, প্রশাসন, শিলচর মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ, এনএইচএম-এর কর্মকর্তা, রেগুলার স্বাস্থ্যকর্মী, তিন জেলার যুগ্ম স্বাস্থ্য সঞ্চালক একযুগে কাজ করেন। শিবিরে শিশু সহ অভিভাবক ও পরিবারের সদস্যদের গাড়ি ভর্তি করে নিয়ে আসে তিন জেলার আরবিএসকের সংযোজক, চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট ও এএনএমরা। রোগীদের ব্রেকফাস্ট, দুপুরের খাবার সহ অপেক্ষারত শিশুদের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রেক্ষাগৃহে মুভি দেখানোরও ব্যবস্থা করা হয়।