হাইলাকান্দিতে চড়া দামে টিন বিক্রি, মাঠে সার্কল অফিসার

হাইলাকান্দিতে চড়া দামে টিন বিক্রি, মাঠে সার্কল অফিসার

এবি লস্কর, লালা।
বরাক তরঙ্গ, ১ এপ্রিল : কাটলিছড়া লালা ও হাইলাকান্দি শহরের প্রতিটি হার্ডওয়্যার দোকানগুলিতে সোমবার সকাল থেকে লক্ষ্যণীয় ভিড় ছিল। দোকানিরা চড়া দামে টিন বিক্রি করেছেন অভিযোগ পেয়ে মাঠে নামেন সার্কল অফিসার মৃগাক্ষী দাস। তিনি পুলিশ নিয়ে দোকানগুলিতে অভিযান চালান এবং সুযোগ বুঝে অধিক দাম না নিতে সতর্ক করে দেন।

১০ মিনিটের প্রকৃতির তাণ্ডবে তছনছ কাটিগড়ার বহু গ্রাম___

রবিবার রাতে মাত্র ১০ মিনিটের তাণ্ডবে কাটলিছড়া রাজস্ব সার্কলের কুড়িটি গ্রামের হাজার হাজার পরিবারকে ঝাঝরা করে দিয়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকার উপরে হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। রবিবার মধ্যরাতে এ ভয়াবহ তাণ্ডবলীলা সংঘটিত হয়। কাটলিছড়া রাজস্ব সার্কলের অধিকাংশ গ্রামের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রায় সব ক’টি পঞ্চায়েতের গ্রামগুলির প্রায় আশি শতাংশ মানুষের ঘরের চাল শিলাবৃষ্টি ঝাঝরা করে দিয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারের মানুষ বিনিদ্র রাত কাটাতে বাধ্য হয়েছেন। ভয়ে আতঙ্কে রাত কাটিয়েছেন তারা। সোমবার ভোর রাত থেকে হার্ডওয়্যার দোকান গুলোতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ঢেউ টিন কেনার ভিড় লক্ষণীয় হয়ে ওঠে। দিনভর টিন কিনতে দোকানগুলিতে ভিড় দেখা যায়।

হাইলাকান্দিতে চড়া দামে টিন বিক্রি, মাঠে সার্কল অফিসার

কাটলিছড়া রাজস্ব সার্কলের সাহাবাদ, রংপুর তৃতীয় খণ্ড, হরিশনগর, দীননাথপুর, ধলাই-মলাই, সোনাছড়া-রূপাছড়া, ধলাই বাগান, রাঙাবাক পঞ্চায়েতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে গত রাতের বিধ্বংসী ঝড় আর শিলাবৃষ্টিতে। এই সব পঞ্চায়েতের অগণিত মানুষের ঘরের টিনের চাল ঝাঝরা হয়েছে। ছাউনি ভেদ করে আসা শিলার আঘাতে আহত হন আলেকজাণ্ডারপুর দ্বিতীয় খণ্ড গ্রামের রত্না দাস। তিনি মাথায় আঘাত পেয়ে কাটলিছড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন বলে জানা গেছে। সকাল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অনেক মানুষ কাটলিছড়া সার্কল অফিসে ভিড় জমান।

হাইলাকান্দিতে চড়া দামে টিন বিক্রি, মাঠে সার্কল অফিসার

অন্যদিকে, কাটলিছড়া সার্কল অফিস থেকে প্রত্যেক গ্রামে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপন করতে পাটোয়ারি পাঠানো হয়। আগামীকাল এই ক্ষয়ক্ষতি নিরূপন প্রক্রিয়া চলবে।  কাটলিছড়া সার্কল অফিস থেকেও অনুরূপ পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানা যায়। কাটলিছড়ার ধলাই-মলাই বাগানের শ্রমিক কোয়ার্টার, স্টাফ কোয়ার্টার, ফ্যাক্টরি, গুদাম এবং সোলার প্যানেলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে বাগানের ম্যানেজার অভিজিৎ দেব জানিয়েছেন। সব মিলিয়ে প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রায় ৪০০ হেক্টর জমির চা গাছের ক্ষতি হয় বলে অভিজিৎবাবু জানিয়েছেন।  সোনাছড়া-রূপাছড়া বাগানেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাগানটির সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার শুভদীপ দাস। ফ্যাক্টরি স্টাফ এবং শ্রমিক কোয়ার্টার, চা গাছের যথেষ্ট ক্ষতি হয় বলেও জানান।

হাইলাকান্দিতে চড়া দামে টিন বিক্রি, মাঠে সার্কল অফিসার

এদিকে, খবর পেয়ে কাটলিছড়া ছুটে আসেন সাংসদ প্রার্থী কৃপানাথ মালা। তিনি ক্ষতিগ্রস্থদের খোঁজ খবর নেন। জেলা আয়ুক্তের সঙ্গে ফোনে শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। এ ছাড়াও বিধায়ক সুজাম উদ্দিন লস্কর ক্ষতিগ্রস্তদের খবরাখবর নেন। তিনি ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্টকে দিয়ে ক্ষিপ্রতার সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে আহ্বান জানান। এর আগে এত বড় বিপর্যয় হয়নি বলে মন্তব্য করে বিধায়ক সুজাম অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে টিনের দাম না বাড়ায় সে জন্য জেলা আয়ুক্তকে পদক্ষেপ নিতেও অনুরোধ জানান।

Author

Spread the News