পাথারকান্দিতে বিজেপি মণ্ডল কার্যালয়ের দ্বারোদ্ঘাটন মুখ্যমন্ত্রীর

মোহাম্মদ জনি, পাথারকান্দি।
বরাক তরঙ্গ, ১ সেপ্টেম্বর : সোমবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মা পাথারকান্দি মণ্ডল বিজেপির নবনির্মিত ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এদিন স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীদের ভিড়ে মণ্ডল কার্যালয় চত্বর যেন রূপ নেয় উৎসবের মেলায়। নবনির্মিত কার্যালয় উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গেই দলীয় পতাকা উড়তেই মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠে ধ্বনিত হলো বার্তা এই কার্যালয়গুলো শুধু ভবন নয়, এগুলো হোক ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত করার তীর্থস্থান, হোক মন্দিরের মতো পবিত্র।

“আমাদের কাছে ভারতমাতা ভগবানের আসনে বিরাজমান, আর কংগ্রেসের কাছে গান্ধী পরিবারই ভগবান” __ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা

কার্যালয়ের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিজেপি ও কংগ্রেসের নীতি আদর্শের মধ্যে রয়েছে আকাশ পাতাল ফারাক। কংগ্রেস আজও পরিবারতন্ত্রে বিশ্বাসী, গান্ধী পরিবারের নাম ছাড়া তাদের কিছু নেই। অন্যদিকে, বিজেপি কর্মকর্তাদের উপর বিশ্বাস করে। আমাদের কাছে ভারতমাতা ভগবানের আসনে বিরাজমান, আর কংগ্রেসের কাছে গান্ধী পরিবারই ভগবান। তাঁর কথায় বিজেপি পরিবারতন্ত্র নয়, কর্মকর্তা কেন্দ্রিক দল। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ যেমন ফুটে ওঠে, তেমনি বিজেপির প্রতি এক ধরনের গর্ব ও আত্মবিশ্বাসও ধ্বনিত হয়।

ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানান, কর্মকর্তাদের জন্য রাজ্যের প্রতিটি জেলায় এবং মণ্ডলে আধুনিক কার্যালয় গড়ে তোলা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত রাজ্যে বিজেপির ২২০টি মণ্ডল কার্যালয় নির্মিত হয়েছে। পাথারকান্দির নবনির্মিত কার্যালয় উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সেই সংখ্যা দাঁড়াল ২২১। মুখ্যমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগেই এই সংখ্যা ৩০০-তে পৌঁছে যাবে।

তাঁর ভাষায় আজকের দিনটি আমাদের দলের কার্যকর্তাদের জন্য স্মরণীয়। কারণ এই কার্যালয়গুলোই হবে আগামী দিনের সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু। এখান থেকেই জন্ম নেবে নতুন নেতৃত্ব, এখান থেকেই দলের ভিত্তি হবে আরও শক্তিশালী।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী বিশেষভাবে প্রশংসা করেন স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মৎস্য, পশুপালন, ভেটেরিনারি ও পূর্ত মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু পালের। তিনি বলেন, কৃষ্ণেন্দু পাল শুধু পাথারকান্দির নয়, সমগ্র বরাক উপত্যকার জন্য উন্নয়নের দিশারি হয়ে উঠেছেন। তাঁর নেতৃত্বে এই অঞ্চলে যে উন্নয়ন হয়েছে, তা অভূতপূর্ব। তাই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে এই আসনে প্রার্থী নিয়ে কোনো দ্বন্দ্ব থাকবে না, কৃষ্ণেন্দু পালই হবেন আমাদের প্রার্থী।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন মণ্ডল চত্বরে বেশ কয়েকটি মূল্যবান চারা গাছ রোপণ করেন। পরিবেশ সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলে উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করাও আমাদের দায়িত্ব। কার্যালয়ের আঙিনা শুধু রাজনীতির কেন্দ্র নয়, হোক সবুজায়নেরও প্রতীক। মণ্ডল বিজেপির কার্যলয়ের উদ্বোধনীয় অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী কৌশিক রায়, বিধায়ক বিজয় মালাকার, জেলা বিজেপি সভাপতি সঞ্জীব বণিক, মণ্ডল সভাপতি শশীবাবু সিনহা প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অসংখ্য দলীয় নেতা কর্মী ও শুভানুধ্যায়ী।মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সোমবারের দিনটি কেবল একটি ভবন উদ্বোধন নয়, বরং ছিল বিজেপির রাজনৈতিক শক্তি, ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীকী প্রকাশ। হাজারো কর্মীর কণ্ঠে এক সুরে ধ্বনিত হলো ভ্রাতৃত্বে, আদর্শে, সংগঠনে আমরাই নতুন অসমের পথপ্রদর্শক।

Spread the News
error: Content is protected !!