সুটকেসবন্দি পোড়া দেহ, লিভ-ইন নারকীয় হত্যা, গ্রেফতার দুই

২৭ জানুয়ারি : সুটকেসবন্দি একটি পুড়ে যাওয়া দেহ, আর সেই পরিত্যক্ত সুটকেস এবং পোড়া দেহের সূত্র ধরেই প্রকাশ্যে এল তুতো ভাই বোনের প্রেম এবং এক নারকীয় হত্যার ঘটনা!

রবিবার দিল্লির গাজিপুরের এক জনমানবহীন এলাকায় একটি পুড়ে যাওয়া পরিত্যক্ত সুটকেস পড়ে থাকার খবর পায় পুলিশ। ঘটনাস্থলে পৌঁছে সুটকেসটি খুলতেই তাঁর ভেতর থেকে উদ্ধার হয় একটি পুড়ে যাওয়া দেহ। দেহটি পুরোপুরি পুড়ে গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। এরপরেই পুলিশ এই ঘটনায় খুন এবং প্রমাণ লোপাটের মামলা দায়ের করে।

এই প্রসঙ্গে পূর্ব দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার অভিষেক ধানিয়া বলেন, “আমাদের হাতে প্রাথমিকভাবে কোনও প্রমাণ বা সূত্র ছিল না, শুধুই এই পুড়ে যাওয়া সুটকেস এবং একটি পুড়ে যাওয়া দেহ। এরপরেই আমরা ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করা শুরু করি।”

সুটকেসবন্দি পোড়া দেহ, লিভ-ইন নারকীয় হত্যা, গ্রেফতার দুই

আর এই সিসিটিভি ফুটেজ থেকেই পুলিশের নজরে আসে একটি সন্দেহজনক গাড়ি, যেটি ওই ঘটনাস্থল দিয়ে দেহ উদ্ধারের কিছুসময় আগেই যেতে দেখা যায়। ওই গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বরের সূত্র ধরে পুলিশ লোনি এলাকার এক বাসিন্দার খোঁজ পান। কিন্তু তিনি জানান যে, গাড়িটি তিনি অমিত তিওয়ারি নামের এক ব্যাক্তির কাছে বিক্রি করেছিলেন।

এরপরেই পুনরায় সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে পুলিশ ২২ বছর বয়সি এই অমিত তিওয়ারি এবং তাঁর এক বন্ধুকে গ্রেফতার করে। জানা গিয়েছে, অমিত পেশায় একজন গাড়িচালক। গাজিয়াবাদের বাসিন্দা সে। তাঁর বন্ধু অনুজ কুমার একজন ওয়েল্ডিং মেকানিকের কাজ করে। উল্লেখ্য, সিসিটিভি ফুটেজে অমিতের সঙ্গে তাঁর এই বন্ধুটিকেও দেখা গিয়েছিল।

এরপরেই পুলিশি জেরার মুখে অমিত ওই দেহটি তার তুতো বোন শিল্পা পান্ডের বলে সনাক্ত করে এবং এই খুনের ঘটনাটি স্বীকার করে নেয়। সে জানায়, সে এবং শিল্পা একে অপরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল। তাঁরা একই সঙ্গে প্রায় ১ বছর ধরে লিভ-ইনে থাকত। কিন্তু সম্প্রতি শিল্পা নাকি তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিল। শনিবার রাতে অমিত মদ্যপ অবস্থায় এই নিয়ে শিল্পার সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে। সেই সময়েই রাগের মাথায় শিল্পাকে গলা টিপে হত্যা করে অমিত। এরপরে সে শিল্পার দেহটি একটি সুটকেসে ভরে ফেলে এবং দেহটি লোপাটে সাহায্যের জন্য ফোন করে বন্ধু অনুজকে।

সুটকেসবন্দি পোড়া দেহ, লিভ-ইন নারকীয় হত্যা, গ্রেফতার দুই

পুলিশসূত্রে জানা গিয়েছে, অমিতের আসল প্ল্যান ছিল দেহটি পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের কোথাও নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার। সেই উদ্দেশ্যেই বেরিয়েও পড়ে এই দুজনে, কিন্তু রাস্তায় দুটি চেকপয়েন্ট পার করার পরেই অমিত ঠিক করে দেহটি কাছাকাছি কোথাও পুড়িয়ে ফেলতে হবে। সেইমত তাঁরা একটি পেট্রলপাম্প থেকে ১৬০ টাকার ডিজেল কেনে এবং গাজিপুরের ওই শুনশান জায়গাটিতে পৌঁছে শিল্পার সুটকেসবন্দি দেহটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ অমিতকে গ্রেটার নয়ডা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। এছাড়াও শিল্পার অভিভাবকেরা গুজরাতের সুরাতের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।

Author

Spread the News