এফআরএস পদ্ধতি বাতিল করার দাবিতে দেশব্যাপী কর্মী-সহায়িকাদের কালোদিবস

বরাক তরঙ্গ, ২১ আগস্ট : অসম রাজ্য অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী সহায়িকা সংস্থা, কাছাড় জেলা কমিটি সারা দেশের সঙ্গে শিলচরেও কেন্দ্রীয় সরকারের এফআরএস পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে কালোদিবস কর্মসূচি পালন করে। ক্ষুদিরাম বসুর মুর্তির পাদদেশে শত শত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী-সহায়িকারা শ্লোগান মুখরিত ছিল। বিভিন্ন বক্তারা বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার এফআরএস পদ্ধতি ব্যবহারে আইসিডিএস এর হিতাধিকারীর সংখ্যা হ্রাস করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। হিতাধিকারীরা ঘরে রেশন যোগান ধরার জন্য দুইধরণের প্রমাণীকরণ নিয়ম মুখ স্বীকৃতি ব্যবস্থা (এফআরএস) এবং ওটিপি বাধ্যতামূলক করার জন্য মন্ত্রনালয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মা ও সহায়িকা এবং হিতাধিকারীরা বিপাকে পড়বে। দুই ধরণের প্রমাণীকরণ নিয়মের জন্য টিএইচ আর হিতাধিকারীর ফটো পরীক্ষা এবং আধারের সংযুক্তকরণ রেজিষ্ট্রেশনভুক্ত মোবাইল নম্বরের ওটিপি পরীক্ষা করা প্রয়োজন হয়। প্রতিবার টিএইচ আর এর সময়ে একই প্রক্রিয়া পুনারাবৃত্তি করতে হয়।

উল্লেখযোগ্য যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রনালয় আমাদের দেশের বিভিন্ন স্থানের পরিস্থিতির কোন ধারণা না জেনে হিতাধিকারীদের পরীক্ষার জন্য এফআরএস ব্যবস্থা প্রচলন করছে। যেখানে পুষ্টিহীনতার প্রাদুর্ভাব অঞ্চল সমূহের হিতাধিকারীদের বিপুল সংখ্যক হচ্ছে দরিদ্র মহিলা যাদের মোবাইল কেনার সামর্থ নেই। বহু পরিবারে একটি মোবাইল আছে যা তাদের পরিবারের প্রতিজন আধার কার্ডের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। বহু পরিবারে মোবাইল নেই অথবা তাদের নম্বর পরিবর্তন করছে। গর্ভবতী মহিলা এবং নবজাতকের মাতৃর ক্ষেত্রে পরিবারের অন্য যেকোন সদস্যই টিএইচআর গ্রহণ করা সাধারণ বিষয়। সবাইকে এফআরএস এর নামে রেশন থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের কাজ হ্রাস করতে ডিজিটাইজেশন আরম্ভ করা হচ্ছে যদিও এখন তাদের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে পড়েছে। ই-কেওয়াইসি হিতাধিকারী মুখ সনাক্তকরণ এবং ডিজিটেল শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এফআরএস। কর্মীরা অহরহ মানসিক চাপ ও আঘাতের সম্মুখীন হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিহারে একজন কর্মীর মৃত্যু হয়। উপযুক্ত পরিকাঠমো ছাড়া নতুন এফআরএস ব্যবস্থা, পুষণ ট্রেকার দ্বারা হিতাধিকারীদের আইনী প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করার যে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে তা ফলে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা হয়রানি সম্মুখীন হচ্ছেন।

এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে এফআরএস পদ্ধিতি বাতিলের দাবিতে অসম রাজ্য অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী সহায়িকা সংস্থা কাছাড় জেলার সাধারণ সম্পদিকা দীপ্তি সিনহা, সভানেত্রী স্বপ্না বেগম, সিআইটিইউ রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তপন শর্মা, সিআইটিইউ কাছাড় জেলা কমিটির সভাপতি সুপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বিক্ষোভ সমাবেশের পর কেন্দ্রীয় মহিলা এবং শিশু উন্নয়ন মন্ত্রনালয়, ড. অর্নপূর্ণা দেবীর কাছে কাছাড় জেলা কমিশনারের মারফত স্মারকপত্র প্রদান করেন।

Spread the News
error: Content is protected !!