কাছাড় জেলায় সরকারি দফতরে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাধ্যতামূলক, নির্দেশকে স্বাগত বিডিএফের
বরাক তরঙ্গ, ১৭ জুন : অবশেষে রাজ্য সরকারের সাম্প্রতিক নির্দেশমর্মে কাছাড় জেলার সকল সরকারি দপ্তরে এখন থেকে ইংরেজি ভাষার পাশাপাশি বাংলা ভাষার ব্যবহারও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। রাজ্য সরকার ১৫ এপ্রিল থেকে রাজ্য স্তরের অফিসগুলোর জারি করা আদেশে অসমিয়ার সঙ্গে ইংরেজি এবং বরাক উপত্যকায় ইংরেজির সঙ্গে বাংলা ভাষা অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু মাস দেড়েক অতিক্রান্ত হলে কাছাড় জেলা প্রশাসন কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না দেখে জেলা অগ্রণী সংগঠন বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন, জয় রাধে, বাঙালি নবনির্মাণ সংস্থা, ড. শ্যামা প্রসাদ মুখার্জি মেমোরিয়াল স্বাৰ্থ সুরক্ষা পরিষদ সহ বেশ কয়েকটি সংস্থা জেলা কমিশনারকে এই নির্দেশনা কার্যকর করার জোরালো দাবি জানায়। শেষমেশ অসম সরকারের রাজনৈতিক (খ) বিভাগের গত ১৪ এপ্রিলের নির্দেশ, অনুসারে ইংরেজি ভাষার পাশাপাশি বাংলা ভাষার ব্যবহারও বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ জারি করেছেন কাছাড়ের জেলা কমিশনার মৃদুল যাদব।
জেলা কমিশনার কার্যালয় থেকে জারিকৃত এই বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে যে, জেলা পর্যায়ের সব সরকারি দপ্তরের প্রধানগণকে সরকারি বিজ্ঞপ্তি, দাপ্তরিক স্মারক, আদেশপত্র ইত্যাদি জারি করার ক্ষেত্রে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ভাষাও ব্যবহার করতে হবে। এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য হল প্রশাসনিক কাজকর্মে মাতৃভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং জনসাধারণের সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ আরও সুসংবদ্ধ ও সহজতর করা।

এই উদ্যোগ রাজ্যের ভাষা নীতি অনুসরণে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা বহুভাষিক জনগোষ্ঠীর আবেগকে সম্মান জানানোর পাশাপাশি সরকারি স্বচ্ছতা এবং ভাষাগত অন্তর্ভুক্তিকেও আরও দৃঢ় করবে। জেলা আযুক্ত মৃদুল যাদব সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগীয় প্রধানকে অবিলম্বে এই নির্দেশ কার্যকর করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

এ দিকে, সরকারি কাজকর্মে বাংলা ভাষার বাধ্যতামূলক ব্যবহারের জন্য কাছাড়ের জেলা কমিশনারের নির্দেশকে স্বাগত জানাল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট। জেলা প্রশাসনের এই সদর্থক পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বিডিএফ মিডিয়া সেলের মুখ্য আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন, বিডিএফ জন্মলগ্ন থেকে এই উপত্যকার সরকারি কাজে বাংলা ভাষা ব্যবহারের দাবি জানিয়ে আসছে, কারণ বাংলা ভাষার এই অধিকার রক্ষায় উপত্যকার একাদশ শহিদ আত্মবলিদান দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, এমনকি ভাষা আইন উলঙ্ঘনের প্রতিবাদ করায় বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ককে আঠারো দিন জেল অবদি খাটতে হয়েছে। তাই জেলা কমিশনারের এই বিজ্ঞপ্তি অবশ্যই সন্তোষজনক। তবে কার্যক্ষেত্রে যাতে এই নির্দেশ যথাযথ পালিত হয় সেই ব্যাপারেও তৎপর থাকার জন্য তিনি জেলা কমিশনারকে আহ্বান জানিয়েছেন।