রংপুর শিমুলতলা অঞ্চলের বানভাসিদের পশুখাদ্য ত্রাণ বিতরণের দাবি বিডিএফের

বরাক তরঙ্গ, ৬ জুন : একমাসের ব্যাবধানে পরপর দুবার বন্যাক্রান্ত হয়ে বাঁধের উপর অস্থায়ী শিবির বানিয়ে গৃহপালিত জীবদের নিয়ে বসবাস করছেন রংপুর শিমুলতলা অঞ্চলের বহু পরিবার। সরকারি তরফে সংশ্লিষ্টদের পশুখাদ্য ত্রান বিতরণের দাবিতে শনিবার জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি তুলে দিল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।

এদিন স্মারকলিপি প্রদান করার পর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিডিএফ আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে বলেন যে রংপুর শিমুলতলা অঞ্চলের অনেকেই কৃষিজীবী। ফলে গৃহপালিত গরু, মোষ, ছাগল ইত্যাদি তাঁদের জীবন জীবিকার অন্যতম উপায়। তিনি বলেন, গত বন্যার পর পশুখাদ্য ত্রান বিতরণের উদ্দেশ্যে তালিকা তৈরি করতে সরকারি তরফে এই এলাকার বানভাসিদের নাম, ফোন নং ইত্যাদি সংগ্রহ করা হয়। এই ব্যাপারে স্থানীয়রা খোঁজ খবর নিলে বলা হয় যে এই ত্রান বরাদ্দও হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কেউই এই পশুখাদ্য পাননি। স্থানীয়রা সন্দেহ করছেন যে কোন অসাধু চক্র মধ্যে থেকে এই বরাদ্দ হওয়া পশুখাদ্য হাপিস করে দিয়েছে। এবারে তাই তাঁরা আবার পশুখাদ্য বিতরণের জন্য স্মারকলিপি জেলাশাসকের উদ্দেশ্যে জমা দিয়েছেন। যদি এবারও এই ব্যাপারে কোন দুর্ণীতি হয় তবে তাঁরা অবশ্যই প্রতিবাদী কর্মসূচি গ্রহণ করবেন। তিনি অবিলম্বে প্রশাসনকে উদ্যোগী হয়ে এই ত্রান বিতরণের আহ্বান জানিয়েছেন।

বরাক ডেমোক্রেটিক যুবফ্রন্টের আহ্বায়ক হারাধন দত্ত এদিন বলেন, গত মে মাসের শেষের দিকে রংপুর শিমুলতলা অঞ্চল প্লাবিত হয়েছিল মূলত কান্দিগ্রাম, আঙ্গারজুর ও করাতিগ্রামের অকেজো স্লুইস গেট দিয়ে জল ঢোকার জন্য। তিনি বলেন, এরপর বিডিএফের পক্ষ থেকে অবিলম্বে এইসব স্লুইস গেট মেরামতের দাবিতে জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয় এবং এই স্লুইস গেট মেরামতের কাজ উধারবন্দের বিধায়ক মিহির সোমের তহবিল থেকে ব্যায়িত হবে বলে জেলাশাসক জানান। হারাধন বলেন, এই বিধায়কের তত্বাবধানে এরপর স্লুইসগেট মেরামতির কাজ শুরু এবং শেষ হয়েছে বলে তাঁদের জানানো হয়। কিন্তু একমাসের মাথায় আবার বরাকের জলস্তর বৃদ্ধি হওয়ায় এইসব স্লুইস গেট, বিশেষতঃ কান্দিগ্রামের স্লুইস গেট দিয়ে অবিরাম জল ঢুকেছে। তাই কাজ যে উপর উপর হয়েছে এবং নিম্নমানের হয়েছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। বিধায়কের এই ধরনের অবিমৃষ্যকারিতার জন্য বন্যাক্রান্ত হয়ে বৃহত্তর শিমুলতলা অঞ্চলের প্রায় ১৫০০০ নাগরিককে ঘরছাড়া হতে হয়েছে। তাঁরা হয় বাঁধের উপর অস্থায়ী আশ্রয় শিবির বানিয়ে কোনক্রমে দিন গুজরান করছেন বা সরকারি আশ্রয় শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।

হারাধন বলেন, বিধায়ক মিহিরকান্তি সোমের ভুয়ো আশ্বাসে ভরসা রাখার জন্যই বর্তমানে এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে অসীম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, তাঁরা দাবি জানাচ্ছেন যে এই বিধায়ককে অবিলম্বে এজন্য শিমুলতলাবাসীর কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। যেহেতু আগামী আরও একমাস বর্ষার মরশুম রয়েছে তাই তিনি একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে অবিলম্বে এই অঞ্চলের জরাজীর্ণ স্লুইস গেটগুলির মেরামতির দাবি জানিয়েছেন। হারাধন এদিন বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই ব্যাপারে কোন অগ্রগতি দেখা না গেলে তাঁরা স্থানীয়দের নিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করতে বাধ্য হবেন। বিডিএফের পক্ষ থেকে আহ্বায়ক দেবায়ন দেব এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন।

Author

Spread the News