হারাং সেতু বিপর্যয়, তদন্তভার সিবিআইকে সমঝে দিতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি বিডিএফের
বরাক তরঙ্গ, ২০ জুন : ওভারলোড লরি পারাপারের জন্য হারাং সেতু ভেঙে পড়ায়, সড়কপথে বহির্ভারতের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বরাক উপত্যকা। আন্তর্জাতিক সীমান্তে অবস্থিত হওয়ায় দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এই উপত্যকার ভৌগলিক অবস্থান ও যোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে উত্তর পূর্বাঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে এমনিতেই বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ রয়েছে। এই অবস্থায় বরাক উপত্যকার এই ধরনের যোগাযোগ বিপর্যয় দেশের নিরাপত্তার জন্য অশনিসংকেত। এই বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানে সিবিআই এর হাতে তদন্তভার তুলে দেবার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি জানাল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
এক প্রেস বার্তায় ফ্রন্টের মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন যে এই সেতু যখন সংস্কার করা হয় তখন স্থানীয় জনগনের পক্ষ থেকে বারবার নিম্নমানের কাজের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। কিন্তু বিভাগীয় কর্মকর্তা সহ সরকার এসবকে পাত্তা দেয়নি। তিনি বলেন, গ্যামন সেতুর মেরামত নিয়েও স্থানীয় জনগন বারবার সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। কিন্তু তাতেও অনাবশ্যক বিলম্ব করা হয়েছে। ফলে যখন গ্যামন সেতু পারাপারের অযোগ্য হওয়ার অবস্থায় চলে আসে তখন তড়িঘড়ি করে এই হারাং সেতুর কাজ শেষ করা হয়। এসবের ফলশ্রুতিতেই আজ সড়ক যোগাযোগে সম্পুর্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বরাক উপত্যকা। তিনি বলেন, এই সেতু বিপর্যয়ের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত জরুরী। একই সাথে অতিরিক্ত পন্যবাহী লরির যাতায়াতের পেছনে যে সিন্ডিকেট বহুদিন ধরে এখানে বর্তমান তারও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এবং মূলোৎপাটন জরুরী। তাই তিনি এই তদন্তভার সিবিআইকে সমঝে দেবার দাবি জানিয়েছেন।

বিডিএফ মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য এদিন বলেন, পূর্ত বিভাগ এই সেতু ভাঙার জন্য অত্যধিক পন্যবাহী লরির উপর দোষ চাপিয়েছে এবং এটা সত্যি যে নির্ধারিত ওজনের দ্বিগুণ পন্যবাহী লরি নির্মানের পর থেকেই এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করছে। বিভাগীয় নির্দেশ এবং নজরদারির জন্য অতিরিক্ত পুলিশ চৌকি বসানোর পরও কিভাবে এবং কেন এই ধরনের ওভারলোড লরি এই রাস্তায় চলছে তা জনগণ মাত্রেই বুঝতে পারছেন। তিনি বলেন প্রতিটি লরি থেকে অবৈধ অর্থ সংগ্রহ করে তা পারাপারের ব্যাবস্থা করে দেওয়া হয় এবং এই ধরনের সিন্ডিকেট বিগত একদশক ধরে এই উপত্যকায় চলছে। বিডিএফ সহ স্থানীয় বহু সংগঠন এই ব্যাপারে বারবার অভিযোগ তুললেও কোন সমাধান হয়নি,কারণ এর সাথে অনেক রাঘব বোয়াল জড়িত যা দিশপুর অব্দি বিস্তৃত। এদের অবৈধ ভুমিকার জন্য এই সেতু বিপর্যয় ঘটেছে। তিনি বলেন স্থানীয়ভাবে তদন্ত হলে শুধু চুনোপুটিরাই ধরা পড়বে। তাঁদের দোষী সাজিয়ে পরোক্ষ হিতাধিকারীদের আড়াল করা হবে, এটা নিশ্চিত, কারণ এর আগেই একই ঘটনা ঘটেছে। তাই তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন যে অবিলম্বে এই ঘটনা ও সিন্ডিকেটের কার্যকলাপের তদন্তভার সিবিআইকে সমঝে দিতে হবে। তিনি উপত্যকার স্বার্থে সমস্ত রাজনৈতিক দল সহ স্থানীয় সংগঠনকে এই দাবিতে সোচ্চার হবার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিডিএফ এর পক্ষ থেকে আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন।