“আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি” গান গেয়ে প্রতিবাদ মিছিল কলকাতায়
২ নভেম্বর : অসমের শ্রীভূমি জেলার এক রাজনৈতিক সভায় “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর লেখা এই গানটি গাওয়ায় অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মন্তব্যে ধিক্কার জানান AIDSO পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়। তিনি এক প্রেস বিবৃতিতে বলেন,
গান গাওয়া বা কর্মসূচির উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ খুব উদ্বেগজনক। এই গানটি গাওয়াকে দেশের প্রতি অপমান বলে উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে সমর্থন জানিয়ে এ রাজ্যের বিজেপি নেতা সজল ঘোষ প্রকাশ্যে যে মন্তব্য করেছেন, আমরা তাকে তীব্র ধিক্কার জানাই।
আমরা জানি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই গানটি রচনা করেন ১৯০৫ সালে। যখন লর্ড কার্জন স্বাধীনতা আন্দোলনের পীঠস্থান বাংলাকে ভাগ করতে ডিভাইড অ্যান্ড রুল (বঙ্গভঙ্গ) পলিসি গ্রহণ করে। উপনিবেশিক ব্রিটিশ রাজশক্তির বিরুদ্ধে বাঙালিদের একসাথে লড়াই সংগ্রামে উৎসাহিত করেছিল এই গান। স্বদেশ পর্যায়ের দেশাত্মবোধক এই গান রবীন্দ্রনাথ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর মাটির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক বর্ণনা করেছেন। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অনেক আগেই এই গানের জন্ম। এই গান নিয়ে আসামের বিজেপি সরকার ও পশ্চিমবাংলা রাজ্য বিজেপি নেতার উদ্দেশ্য প্রণোদিত মন্তব্য বাংলা তথা দেশের সম্প্রীতির ঐতিহ্যের পরিপন্থী।
আমরা মনে করি বিজেপি নেতাদের এই গান সম্পর্কে মন্তব্য ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহনের ঘটনা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ধারাবাহিক ইতিহাস বিকৃতি, সিলেবাস পরিবর্তন, সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়ানো, অবৈজ্ঞানিক – অপবিজ্ঞান – কুসংস্কারের প্রসার, যুক্তিবাদ – নবজাগরণের মহান চরিত্রকে কালিমালিপ্ত ঘটনার মতো ধারাবাহিক ঘটনা। একে রুখতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সচেতন ঐক্যবদ্ধ লড়াই প্রয়োজন।
আমরা AIDSO রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে আহ্বান জানাই সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র এ বাংলার তথা দেশের সমস্ত স্তরের নাগরিক এ ঘটনার প্রতি ধিক্কার জানিয়ে রাস্তায় নামুন। আমরা ২-৩ নভেম্বর এ ঘটনার প্রতি ধিক্কার জানিয়ে রবীন্দ্রনাথের কবিতা গান নিয়ে রাস্তায় গান মিছিল ও প্রতিবাদ সভার আহ্বান জানাচ্ছি। ছাত্রছাত্রী সহ সকল নাগরিককে নিজের নিজের ক্যাম্পাস, প্রতিষ্ঠান, এলাকায়, পাড়ায় পাড়ায় এই উদ্যোগ গ্রহণ আহ্বান করছি।

