৮৫ হাজার করে নিয়ে ব্যাঙ্কে ২৩ হাজার জমা, শোরুমের কর্ণধারের বিরুদ্ধে মামলা ই-অটো মালিকদের
দীপ দেব, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ২২ জুলাই : সরকারি ভর্তুকির লোভ দেখিয়ে ৮৫ হাজার টাকা নিয়ে ব্যাঙ্কে জমা মাত্র ২৩ হাজার জমা দিয়ে বাকি টাকা হজম করে নিলেন শোরুমের কর্ণধার। এমন অভিযোগ এনে চল্লিশজন ইলেকট্রিক অটো মালিকের পক্ষে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন সৈদপুরের আলতাফ হোসেন লস্কর।
তিনি বলেন, ই-অটো কিনতে শিলচরে ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক এবং ইউনিক অটোমোবাইলস-এর দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সরকারের প্রধানমন্ত্রী কর্মসংস্থান সৃষ্টিরপ্রকল্পের নাম ব্যবহার করে তাদের সঙ্গে যেভাবে প্রতারণা করা হয়েছে, তা শুধু আর্থিক নয়, আত্মবিশ্বাস ও সম্মানেরও চরম অপমান করা হয়েছে। এই দুর্নীতির মূল চক্রে রয়েছেন শিলচরের সোনাই রোডে অবস্থিত ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার শাখা ব্যবস্থাপক এবং আউলিয়া বাজারের শোরুম ইউনিক অটোমোবাইলসের কর্ণধার মুস্তাক আলম লস্কর। অতুল গ্রিন প্রাইভেট লিমিটেড মূলত এই ইলেকট্রিক অটো সরবরাহ করত।
ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ চালকদের আশ্বস্ত করেন, সরকারি প্রকল্পের অধীনে ইলেকট্রিক অটো কেনা হলে ভর্তুকি মিলবে। সেই আশ্বাসে চালকেরা ৮৫ হাজার টাকা করে শোরুমে জমা দেন। কিন্তু কেলেঙ্কারি শুরু হয় তখনই যখন ২-৩ মাস পর হঠাৎ ব্যাঙ্ক থেকে চুক্তিপত্রে সই করাতে ডাকা হয় এবং সেখানে উল্লেখ থাকে মাত্র ২৩ হাজার টাকার হিসেব।

এই বিশাল অমিল দেখে চালকেরা ব্যাঙ্কের ম্যানেজারকে প্রশ্ন করলে তিনি কেবল বিষয়টি দুই দিনের মধ্যে দেখে নেওয়ার আশ্বাস দেন। পরে দেখা যায়, শোরুম মালিক মুস্তাক আলম লস্কর ব্যাঙ্কে জমা দিয়েছেন কেবলমাত্র ২৩ হাজার টাকা বাকি ৫৮ হাজার টাকার কোনও হিসেব নেই। আরও অবাক করার বিষয় বলে অটো মালিকরা জানান, যখন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার ফোনে শোরুম
মালিককে বিষয়টি জিজ্ঞেস করেন, তখন শোরুম মালিকের নির্লজ্জ জবাব, ‘আপনি তো সব জানেন’। এখানে প্রতারণা শুধু টাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। চালকদের হাতে যে অটো তুলে দেওয়া হয়েছে, তার নেই কোনও সঠিক কাগজপত্র, নেই বৈধ মালিকানা নথি, নেই রেজিস্ট্রেশন কিংবা বৈধ চালান।
চালকেরা শিলচর সদর থানায় প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগ দায়ের করেন। তারা অভিযোগ জানান এ ধরনের চক্র যদি আইনের আওতায় না আনা হয়, তাহলে আরও অনেক দরিদ্র মানুষ এভাবে প্রতারিত হবেন। এই প্রতারণার শিকার চালকদের মধ্যে রয়েছেন আনম উদ্দিন, আফতর হুসেন লস্কর, আজির উদ্দিন লস্কর, সুজন উদ্দিন লস্কর, নির্মল রায়, সুমন দাস, গোবেশ দাস, আব্বাস উদ্দিন লস্কর, আহমেদ হুসেন লস্কর, বিজু রায় সহ প্রায় চল্লিশ জন। এ দিকে, শোরুম মালিকের কোন প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। তবে শোরুমের কর্তা শাহাজাহান মজুমদার বলেন, তিনি মাত্র তিন দিন আগে যোগ দিয়েছেন। কিছুই জানেন না। আগে কর্মীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মালিকের ফোন নম্বর চাইলে তাঁর কাছে নেই বলে জানান।