ইমরানের স্ত্রী ও বিজুকে রিমান্ডে নিল পুলিশ, ৪ জন হাজতে
রাজীব মজুমদার, ধলাই।
বরাক তরঙ্গ, ২৩ আগস্ট : গত ১০ আগস্ট রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হওয়া রাজনগর-খুলিছড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নবনির্বাচিত সভাপতি ইমরান হোসেন বড়ভূইয়ার মামলার তদন্তে নতুন মোড়। শনিবার অভিযুক্তদের আদালতে তোলা হলে আদালতের নির্দেশে ইমরানের স্ত্রী রিনা বেগম বড়ভূইয়া এবং তার প্রেমিক বশিরুজ্জামান লস্কর ওরফে বিজুকে তিন দিনের পুলিশি রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। বাকি চার অভিযুক্তকে পাঠানো হয়েছে কারাগারে।
গত ১০ আগস্ট ভোরে ইমরান বড়ভূইয়ার মৃত্যু হলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয় যে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তাই ময়নাতদন্ত ছাড়াই দ্রুত তাকে কনরস্থ করা হয়। কিন্তু ইমরানের পরিবারের সদস্যরা, বিশেষত তার ভাই নাগিব আহমেদ বড়ভূইয়া, তার স্ত্রী রিনা বেগমের সন্দেহজনক আচরণে বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ করতে শুরু করেন। তাদের প্রচেষ্টায় রিনা ও তার প্রেমিক বিজুর হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ফাঁস হলে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে। চ্যাটে রিনা বিজুকে লেখেন, “ইতিমধ্যে কবরে মৃতদেহ পচে গিয়েছে, এখন আর কোনো টেনশন নেই।” এই মেসেজ হাতে পেয়ে বিজুকে থানায় নিয়ে গেলে সে পুলিশের কাছে ইমরানকে বিষ দিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করে।
এই স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর থেকে ইমরানের লাশ তোলা হয় ময়নাতদন্তের জন্য। এর আগে বুধবার রাতে জনতা রিনা, বিজু এবং ইমরানের শ্বশুর বাবুল উদ্দিন লস্কর, শাশুড়ি আনোয়ারা বেগম, শ্যালক সাদিক আহমদ, ও শ্যালিকাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
ইমরানের ভাই নাগিব আহমেদ বড়ভূইয়া এই ছয়জনের বিরুদ্ধে ধলাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার গুরুত্ব অনুধাবন করে ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার দিলরাজ পাঠককে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। দু’দিন পর অভিযুক্তদের আদালতে তোলা হয় এবং পুলিশ রিনা ও বিজুর পুলিশ রিমান্ডের আবেদন জানায়। আদালত তাদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে, শুক্রবার বিকেলে শিলচর মেডিক্য়াল কলেজ থেকে ময়নাতদন্ত শেষে ইমরানের মরদেহ তার বাড়িতে পৌঁছায়। এরপর দ্বিতীয় দফায় তাকে কবরস্থ করা হয়।