দেবজিৎ হত্যাকাণ্ড : হাজার হাজার জনতা বিচার চেয়ে প্রতিবাদে সোচ্চার
বরাক তরঙ্গ, ১২ আগস্ট : ধোয়ারবন্দের বছর দশের দেবজিত রী-র মরদেহ ময়নাতদন্তের পর ধোয়ারবন্দ বাজারে পৌঁছালে হাজার হাজার জনতা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে প্রতিবাদে সোচ্চার হন। প্রতিবাদী জনতার কন্ঠে ধ্বনিত হয় দেবজিৎ রী-র হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই, এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত অপরাধীদের বিচার ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে সম্পন্ন করতে হবে, শিশু হত্যাকারীদের কোন ভাবেই রেহাই দেওয়া চলবে না। ধোয়ারবন্দ বাজার থেকে থানার সামনে হয়ে প্রতিবাদী জনতার স্রোত দক্ষিণ টিলা পর্যন্ত গিয়ে সমাপ্ত হয়। মিছিলে অংশগ্রহণ করা এলাকার বিশিষ্ট সংগ্রামী নেতা এসইউসিআই (কমিউনিস্ট) দলের ধোয়ারবন্দ আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক মাধব ঘোষ বলেন, যোগীরবন্দ এলাকার স্কুল পড়ুয়া শিশু দেবজিত রী-র বাবা দিলীপ রী তাঁর দলের একজন সক্রিয় কর্মী ও অত্যন্ত অমায়িক প্রকৃতির একজন শ্রমজীবী মানুষ। তাঁর দ্বিতীয় ছেলেকে গত পরশু দিনের বেলা জনৈক জয়প্রণেশ কেঁওট ঘরে কেউ না থাকার সুযোগে ফুসলিয়ে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যায়। সন্ধ্যায় ছেলেটির মা অনিতা রী ঘরে ফিরে এসে তাঁকে না পেয়ে প্রতিবেশি শিশুদের কাছ থেকে ঘটনা শুনতে পান। ছেলেকে বিভিন্ন স্থানে খুঁজে না পেয়ে তার বাবা দিলীপ রী রাতে পুলিশের দারস্থ হন।

এদিকে, দেবজিৎ রী মরদেহ সেখানে পৌঁছালে এক শোকাকূল পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ধোয়ারবন্দ বাজারের সমস্ত দোকান বন্ধ করে ব্যাবসায়ীরাও প্রতিবাদে সামিল হন। দেবজিৎ রী এর পিতা দিলীপকুমার রী, মা অনিতা সিং, এসইউসিআই (সি) দলের অসম রাজ্য কমিটির অন্যতম সদস্য তুষার পুরকায়স্থ, জেলা সম্পাদক ভবতোষ চক্রবর্তী, মাধব ঘোষ, এআইকেকেএমএসএস’র লক্ষীচরণ আকুড়া, এআইইউটিইউসি’র রামকুমার বাগতি, এআইএমএসএস এর মায়া বাগতি, এআইডিওয়াইও’র সুজিত আকুড়া, এআইডিএসও’র নিরোজ কালোয়ার, কমসোমলের সুমি আকুড়া প্রমুখ দেবজিৎ রী-র মরদেহে মাল্যদান করে গভীর শোক প্রকাশ করেন।

উল্লেখ্য, ধোয়ারবন্দের নিখোঁজ শিশুর নিথর দেহ গভীর জঙ্গল থেকে উদ্ধার হল। সোমবার রাতে বিনোদনগরের মুল্লিটিলার ঘন জঙ্গল থেকে অপরাধীকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ বছর আটের দেবজিত রী-র দেহ উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে মৃতদেহ শিলচর মেডিক্যালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে দেবজিতের নিথর দেহ। দেবজিত রী রবিবার সকাল ১১টা থেকে নিখোঁজ ছিল। বিকেলে তার কোন হদিশ না পেয়ে পরিবারের লোকরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।
পুলিশ ইতিমধ্যে মূল অভিযুক্ত পালই বাগানের জয়প্রণেশ কেওট, অমিত কুমার সহ এক মহিলা ও যুবককে হেফাজতে নিয়েছে।