বরাক সেতু ডিমান্ড কমিটির সঙ্গে আছি, থাকব : কঙ্কন
অনিতা পাল, কাটিগড়া।
বরাক তরঙ্গ, ১১ আগস্ট : বৃহত্তর বড়খলা ও কাটিগড়াবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি গণিরগ্রাম-রাজনগর বরাক সেতু নির্মাণ। এই দাবিকে আরও জোরদার করতে এবং আন্দোলনের ধারাবাহিকতাকে স্বীকৃতি দিতে রবিবার পূর্ব কাটিগড়ার শান্তিপুর গণিরগ্রামের এক বিবাহ ভবনে বরাক সেতু ডিমান্ড কমিটির পক্ষ থেকে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের মুখ্য অতিথি ছিলেন কাছাড় জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত সভাপতি কঙ্কন নারায়ণ শিকদার। এদিনের অনুষ্ঠানে কঙ্কন নারায়ণ শিকদার সহ তাপাং, কাটিগড়া, বড়খলা, কালাইন, শালচাপড়া, শ্রীকোণা ইত্যাদি এলাকার নবনির্বাচিত জেলা পরিষদ সদস্য, আঞ্চলিক পঞ্চায়েত সদস্য ও গ্রাম পঞ্চায়েত সভাপতিদের বরাক সেতু ডিমান্ড কমিটির পক্ষ থেকে ফুলের তোড়া, উত্তরীয় ও স্মারক দিয়ে সংবর্ধিত করা হয়।
অনুষ্ঠানে জেলা বিজেপি সহ-সভাপতি বিপ্লবকান্তি পাল, প্রাক্তন বিধায়ক অমরচাঁদ জৈন, তাপাং ব্লক আঞ্চলিক পঞ্চায়েত সভাপতি হরেন্দ্র দাস, কাটিগড়া ব্লক আঞ্চলিক পঞ্চায়েত সভানেত্রী বাবলি নাথ, শ্রীকোণা-ভুবনেশ্বর জেলা পরিষদ সদস্য ফরিদা পারভিন সহ বহু বিশিষ্টজন উপস্থিত ছিলেন। সংবর্ধনার ফাঁকে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ছিল চোখে পড়ার মতো। স্থানীয় শিল্পীরা মনোমুগ্ধকর গান পরিবেশন করেন এবং গণিরগ্রাম গ্লোবাল পাবলিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একটি নাটক মঞ্চস্থ করে দর্শকদের প্রশংসা কুড়ান। অনুষ্ঠানের মধ্যে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানও পরিচালিত হয়, যা আসন্ন মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মার বরাক সফরে স্মারকলিপি আকারে প্রদান করা হবে।
এউপলক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন বরাক সেতু ডিমান্ড কমিটির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী ও সংবর্ধনা কমিটির সভাপতি কুঞ্জমনি সিনহা। স্বাগত বক্তব্যে ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী সেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষ ও কমিটির সদস্যরা সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান, গণস্বাক্ষর অভিযান সহ নানা কর্মসূচি ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কংকন নারায়ণ শিকদার বলেন, গণিরগ্রাম-রাজনগর বরাক সেতু ডিমান্ড কমিটির সঙ্গে আমি অতীতে যেমন ছিলাম, এখনও আছি এবং সেতু নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত পাশে থাকব। এই সেতু নির্মাণ হলে বৃহত্তর কাটিগড়া, বড়খলা, শিলচর সহ আশপাশ অঞ্চলের যাতায়াত ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে আমূল পরিবর্তন আসবে।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মঞ্জুরুল হক লস্কর জানান, কেন্দ্রীয় পরিবহন মন্ত্রী নিতিন গাড়কারি, আসাম সরকারের পূর্তমন্ত্রী অজন্তা নেওগ সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বহুবার স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। কাছাড়ের সাংসদ পরিমল শুক্লবৈদ্য বিষয়টি সংসদে এবং কেন্দ্রীয় পরিবহন মন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেছেন। পূর্ত বিভাগের আধিকারিকরা বরাক নদীর উভয় তীরে সার্ভে করে প্রতিবেদনও জমা দিয়েছেন।
বক্তারা একমত হয়ে বলেন, এই সেতু নির্মিত হলে বরাক উপত্যকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে, যা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে জনজীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। শেষে মঞ্জুরুল হক লস্করের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।