জেলা সম্মেলনে মধ্যাহ্ন ভোজন কর্মচারী ইউনিয়নের নয়া কমিটি গঠিত
বরাক তরঙ্গ, ৪ আগস্ট : সিটু অন্তর্ভুক্ত সারা অসম মধ্যাহ্ন ভোজন কর্মচারি ইউনিয়নের ৫ম কাছাড় জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল। রবিবার শিলচরে আয়োজিত সম্মেলনে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শতাধিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন সংগঠনের রাজ্য কার্যকরী সভাপতি বিবেকানন্দ অধিকারী। সিটু পতাকা উত্তোলন করেন সিটু জেলা সভাপতি সুপ্রিয় ভট্টাচার্য। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বিবেকানন্দ অধিকারী। তিনি মধ্যাহ্ন ভোজন কর্মচারিদের সর্বভারতীয় তথা অসমের পরিস্থিতি বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন। অসমের বিজেপি সরকারের প্রকল্প কর্মচারী তথা সামগ্রিক ভাবে শ্রমিক কর্মচারী বিরোধী নীতির তীব্র সমালোচনা করেন। মধ্যাহ্ন ভোজন কর্মচারিদের মাসিক ভাতা দেশের বিভিন্ন রাজ্যে যেখানে সর্বোচ্চ ষোলো হাজার টাকা সেখানে অসমে মাত্র দেড় হাজার টাকা, তা-ও বছরে দশমাস। কর্মচারীদের দীর্ঘ আন্দোলনের পর অসম সরকার সাম্মানিক বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কিন্তু রক্ষা করেনি। তাছাড়া এই দরিদ্রতম কর্মীদের কোনও সামাজিক সুরক্ষার বন্দোবস্ত নেই। সিটু নেতৃত্বে এই কর্মীদের সারা অসম মধ্যাহ্ন ভোজন কর্মচারি ইউনিয়নের মাধ্যমে সংগঠিত করে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছে। বর্তমান সরকার মধ্যাহ্ন ভোজন প্রকল্পকে এনজিওর হাতে তুলে দিতে চাইছে। এর বিরুদ্ধে আগেও আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিহত করা হয়েছিল। আগামী দিনেও এই ধরনের প্রয়াস প্রতিহত করা হবে বলে স্পষ্ট ঘোষণা করা হয়। সিটু পক্ষে বক্তব্য রাখেন সুপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী লাগাতার অসাংবিধানিক বক্তব্য রাখছেন। তিনি হুমকি দিয়েছেন সিটুর সঙ্গে থাকলে কোনও দাবি পূরণ করা হবে না। এই ধরনের বক্তব্য স্বৈরতান্ত্রিক এবং সংবিধান বিরোধী। দেশের প্রত্যেক শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি ছাব্বিশ হাজার টাকা দাবি করা হয়েছে এবং সেই দাবি সহ শ্রমিক শ্রেনীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় ১৭ দফা দাবিতে গত ৯ জুলাই দেশের ২৫কোটি শ্রমিক কর্মচারি ধর্মঘট করেছেন। এই তীব্র গণ বিক্ষোভকে দুর্বল করতে কেন্দ্রের এবং রাজ্যের বিজেপি সরকার বেপরোয়া সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়িয়ে যাচ্ছে। অসমে দীর্ঘদিন থেকে ভূমিহীনদের জমির পাট্টা দেওয়ার দাবি জানানো হচ্ছে, অথচ সেখানে অমানবিক ভাবে সংখ্যালঘুদের উচ্ছেদ অভিযান চলছে। এই সমগ্র পরিস্থিতির মোকাবিলা শ্রমিকশ্রেনিকে সংগঠিত ভাবে করতে হবে। তাই মধ্যাহ্ন ভোজন কর্মচারিদের জেলার সর্বত্র সংগঠনকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন।

এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রত্না দেব, সিটু সম্পাদক সুরজিৎ ঘোষ, ইউনিয়নের সভাপতি বিমল দাস প্রমুখ। সম্মেলনে বিমল দাসকে সভাপতি ও শীলা মণ্ডলকে সাধারণ সম্পাদক করে একুশ জনের জেলা কমিটি গঠিত হয়।