ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চক্রান্তের তীব্র বিরোধিতা সিআরপিসিসির

বরাক তরঙ্গ, ২২ জুলাই : নাগরিক অধিকার রক্ষা সমন্বয় কমিটি, আসাম এর কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বানে বরাক উপত্যকার তিন জেলার বিশিষ্ট জনদের উপস্থিতিতে একটি সভা শিলচরের সিটিভিওএ চত্বরের সভাঘরে অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার সিআরপিসিসি, আসাম এর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপোধীর ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বর্তমানে আসামে বসবাসকারী ধর্মীয় ও ভাষিক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরীহ, নিরপরাধ মানুষ সহ বহু উপজাতি অধ্যুষিত এলাকার জনগণকে তাদের নিজস্ব বাস্তুভিটা থেকে অমানবিকভাবে উচ্ছেদ এবং উচ্ছেদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলনকারীদের নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা, লোকগণনায় বাংলাভাষী জনগণকে নিজেদের মাতৃভাষা বাংলা লেখালে তাদের বাংলাদেশি হিসেবে সনাক্ত করার হুমকি প্রদান এবং বিহারের ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধনীর মতো একই ধরণে অসমেও ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চক্রান্তের তীব্র বিরোধিতা করা হয়।

সভায় উল্লেখিত বিষয়গুলো নিয়ে বিশদ আলোচনার পর সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে আগামী ২৮ জুলাই সোমবার সংগঠনের বরাক উপত্যকার তিন জেলা যথাক্রমে কাছাড়, শ্রীভূমি ও হাইলাকান্দি এর পক্ষ থেকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে অন্যায় ও অমানবিকভাবে দরিদ্র নিরপরাধ মানুষকে উচ্ছেদ বন্ধ করা, বরাক উপত্যকার জনগণের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত মাতৃভাষার মর্যাদাকে খাটো করে কোনো ধরনের মন্তব্য সাংবিধানিক পদে আসীন কোন ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে না করা এবং বিহার মডেলে আসামে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধনী অভিযানের নামে বৈধ ভারতীয় নাগরিকদের নাম অন্যায়ভাবে কর্তনের চক্রান্ত বন্ধের দাবি জানিয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি, আসামের রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, ভারতের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের নিকট স্মারকপত্র প্রদান করা হবে। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে জনসচেতনতা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে প্রচারপত্র বিলি করা, রাজ্যের গণতন্ত্রপ্রিয় বিভিন্ন ভাষিক গোষ্ঠীর জনসাধারণ ও সম মনোভাবাপন্ন সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে একটি অভিবর্তন আয়োজন করা হবে।

সভার শুরুতে বক্তব্য রাখেন সিআরপিসিসি, আসাম এর কো- চেয়ারম্যান সাধন পুরকায়স্থ। তিনি বলেন সাধারণ মানুষের উপর জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার যে ধরনের ন্যক্কারজনক আক্রমণ নামিয়ে এনেছে তা ভারতের ঐতিহ্য, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও সর্বোপরি সংবিধানের মূল সিদ্ধান্তের পরিপন্থী। এই গভীর সংকটকালে জাতি, ধর্ম, বর্ণের ঊর্ধ্বে উঠে উপজাতি ও অনুপজাতি নির্বিশেষে সম্ভাব্য ব্যাপকতম ঐক্য গড়ে তুলে গণতান্ত্রিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।

সভায় এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কিশোর ভট্টাচার্য, শিহাব উদ্দিন আহমেদ, ডা এম শান্তি কুমার সিংহ, দুলাল মিত্র, আলী রাজা ওসমানী, নির্মল কুমার দাস, হিল্লোল ভট্টাচার্য, আব্দুল হাই লস্কর, অপূর্ব কুমার দে, মিলন উদ্দিন লস্কর, অরিন্দম দেব, মইনুল হক, ওসামা মজরুর চৌধুরী, অধ্যাপক ফজলুর রহমান লস্কর, রাজেশ সিনহা, জুয়েব আলম লস্কর সহ বিশিষ্ট জনেরা। এছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক নিরঞ্জন দত্ত, সুব্রত চন্দ্র নাথ, হায়দার হোসেন চৌধুরী, আদিমা মজুমদার, রঞ্জিত চৌধুরী, সমিরণ চৌধুরী, গিয়াসউদ্দিন বড়ভূইয়া প্রমুখ।

Spread the News
error: Content is protected !!