দ্বিতীয় রেলপথ নির্মাণের দাবিতে উত্তপ্ত শিলচর রেলস্টেশন চত্বর, গ্রেফতার চার আন্দোলনকারী
বরাক তরঙ্গ, ১২ জুলাই : চন্দ্রনাথপুর-লঙ্কা দ্বিতীয় রেলপথ নির্মাণের দাবিতে শনিবার শিলচর রেলস্টেশনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শনে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। শিলচর লামডিং ব্রডগেজ রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটির কর্মকর্তারা বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশ হাজির হয়ে কমিটির সদস্যদের গ্রেফতার করে অস্থায়ী জেলে পাঠিয়ে দেয়। এ নিয়ে ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন কর্মকর্তারা। তাঁদের অভিযোগ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে কমিটির কর্মকর্তারা প্রতিবাদ সাব্যস্ত করেছেন এবং তাদের দাবি আদায়ে স্টেশন সুপারিনটেনডেন্টকে একটি স্মারকলিপিও প্রদান করেছেন। এরপরও কাছাড় পুলিশ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ব্যাঘাত ঘটিয়ে কমিটির সদস্যদের গ্রেফতার করেছে। তাঁরা পুলিশের ভূমিকায় ধিক্কার জানান।

এ দিন পূর্ব ঘোষণা মতে, চন্দ্রনাথপুর থেকে লঙ্কা হয়ে গুয়াহাটি যাওয়ার বিকল্প রেলপথ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু করার দাবিতে শিলচর স্টেশন চত্বরে বিক্ষোভে বসে শিলচর-লামডিং ব্রডগেজ রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটি। কমিটির সদস্যরা জমায়েত হয়ে প্লেকার্ড হাতে বিকল্প রেলপথ নির্মাণের সার্ভে রিপোর্ট জনসমক্ষে তুলে ধরার পাশাপাশি ডিপিআর তৈরী করে কাজটা এবছরেই শুরু করার জোরালো দাবি জানিয়েছেন।

কমিটির অন্যতম আহ্বায়ক অধ্যাপক অজয় রায় বলেন, বিষয়টি বরাকের জনপ্রতিনিধিরা সদনে তুললেও জনগণ যাতে আশ্বস্ত না হয়, নিজের সমস্যা ও অধিকারের লড়াইকে জোরদার ভাবে এগিয়ে নিতে সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন। পাশাপাশি আন্দোলনের মাধ্যমে বিকল্প রেলপথ নির্মাণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্যে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে বলেও জানিয়েছেন।
অজয় রায় বলেন, ২০১৫ সালেই চন্দ্রনাথপুর-লঙ্কা দ্বিতীয় রেলপথ নির্মাণের দাবি হাইলাকান্দিতে অনুষ্ঠিত গণ সমাবেশে উত্থাপন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে রেলমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বহু বার স্মারকপত্র প্রদান করা হয়। ২০২২ সালে কেন্দ্র সরকার উক্ত লাইনের জরিপ করার জন্য অর্থ বরাদ্দ করে। রেলমন্ত্রক কর্তৃক পরিচালিত জরিপের কোন রিপোর্ট জনসমক্ষে আসেনি। এবার বর্ষাকাল শুরু হতেই বারবার ভূমি ধসে বন্ধ হচ্ছে পাহাড় লাইনের রেলপথ। ফলে যাত্রীদের অকল্পনীয় দুর্ভোগ পোহাতে বাধ্য করা হচ্ছে। তিনি এও বলেন, শুধু ভূমি ধসে রেলপথ বন্ধ হচ্ছে বলেই দ্বিতীয় রেলপথ নির্মাণ করতে হবে বিষয়টি এমন নয়, বরাক উপত্যকা ও ত্রিপুরার রেলগাড়ির পাশাপাশি মিজোরাম, মণিপুর রাজ্যের রেল যখন একটি মাত্র রেল পথ দিয়ে যাবে তখন কার্যতঃ ট্রাফিক সমস্যায় পড়তে হবে। এই সমস্যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা রেলযাত্রীদের নষ্ট হবে। কমিটির পক্ষ থেকে এই সমস্যা অনুধাবন করে অনেক আগেই দ্বিতীয় রেলপথ নির্মাণের দাবি জানানো হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ টালবাহানার ফল আজ যাত্রীদের ভোগ করতে হচ্ছে।

এ দিন বিক্ষোভে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হরিদস দত্ত, মলয় ভট্টাচার্য, অধ্যাপক অজয় রায়, সীমান্ত ভট্টাচার্য, ভবতোষ চক্রবর্তী, সুব্রতচন্দ্র নাথ, অতনু ভট্টাচার্য, তাপস ভট্টাচার্য, সুকল্পা ভট্টাচার্য, অরিন্দম দেব, খাদিজা বেগম, বিজিত সিনহা প্রমুখ।
পুলিশ অজয় রায়, সীমান্ত ভট্টাচার্য, ভবতোষ ভট্টাচার্য ও খাদিজা বেগমকে গ্রেফতার করে।