ডলুতে এয়ারপোর্ট নির্মাণে পুনরায় অধিকতর জমি অধিগ্রহণে সিটু বিরোধিতা
বরাক তরঙ্গ, ২ জুলাই : ডলু বাগানে গ্রিন ফিল্ড এয়ারপোর্ট নির্মাণে প্রাথমিক ভাবে ২৫০০বিঘা জমি অধিগ্রহণের পর পুনরায় ১৭১ একর জমি অধিগ্রহণের সরকারি সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করলো সিটু অন্তর্ভুক্ত অখিল ভারতীয় চা-মজদুর সংঘ। এই সরকারি সিদ্ধান্তের পরই সংগঠনের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকপত্র প্রেরণ করা হয়েছিল। গত ২৭ জুন পুনরায় এব্যাপারে স্মারকলিপির মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে শ্রমিকদের আপত্তির কথা মনে করিয়ে দেওয়া হয়। এব্যাপারে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য যে গত ২৩ জুন প্রশাসনিক উদ্যোগে এক গণশুনানির আয়োজন করা হয় কিন্তু ডলুর বৃহত্তম স্বীকৃত শ্রমিক সংগঠন এবিসিএমএস-কে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সেখানে ঘোষণা করা হয় যে এয়ারপোর্ট নির্মাণে আনুমানিক তিন হাজার বিঘা জমির প্রয়োজন। সে অনুযায়ী ১৭১ একর জমি অধিগ্রহণের বিজ্ঞপ্তি আগেই জারি করা হয়েছিল, এবং এসংক্রান্ত কোনও মতামত শ্রমিকদের কাছ থেকে নেওয়া হয়নি। এই অধিগ্রহণের ফলে ১৭৩ টি শ্রমিক পরিবার উচ্ছেদ হবে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে বাগান মালিকের সঙ্গে সরকারের চুক্তি মোতাবেক ২৫০০ বিঘা জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়, এবং তার তিন মাস পর মার্চমাসে শ্রমিকদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বহু পাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী আর কোনও জমি নেওয়া হবে না, কোনও শ্রমিকের ঘর ভাঙ্গা হবেনা, কোনও শ্রমিকের কাজ বন্ধ হবেনা ইত্যাদি সহ বিভিন্ন শর্ত মেনে নেওয়া হয়। কিন্তু সরকার নিজেই সেই চুক্তি ভঙ্গ করছে। অথচ চুক্তিতে অথবা সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কোথাও ২৫০০বিঘার বাইরে কোনো জমির উল্লেখ নেই। এদিকে বাগানের উৎপাদন প্রায় ৫০% কমে গেছে। পুনরায় জমি অধিগ্রহণের ফলে এই সংগঠিত চা শিল্প এবং তার শ্রমিক কর্মচারীদের জীবন জীবিকা বিপদের সম্মুখীন হবে। ১ জুলাই ডিসি অফিসে এসংক্রান্ত মনিটরিং কমিটির সভায় বিষয়টি উত্থাপিত হলে সিটু র পক্ষ থেকে বিষয়টি বিস্তারিত ভাবে পেশ করা হয়। সিটু মনে করে যে অধিক জমির প্রয়োজন হলে ডলুর পূর্বদিকে অপর্যাপ্ত অনাবাদি জমি আছে, সেই জমি ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু কোনও ভবেই একটা সংঘটিত চা শিল্পকে বন্ধ হতে দেওয়া যাবে না। এব্যাপারে সরকার যদি আগ্রাসী মনোভাব পোষণ করে তবে শ্রমিকরা তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলবে, এবং উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য দায়ী থাকবে সরকার এবং প্রশাসন। ফাইল ছবি।