স্বাধীনবাজার জিপির চারটি স্কুলের পড়ুয়ারা পোশাক থেকে বঞ্চিত, মিশন ডিরেক্টরকে পত্র

বরাক তরঙ্গ, ২ জুলাই : সোনাই শিক্ষা খণ্ডের আওতাধীন স্বাধীনবাজার জিপির অধীনে চারটি স্কুলের ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে ছাত্রছাত্রীরা বঞ্চিত হওয়ায় বৃহৎ কেলেঙ্কারির তদন্ত করার দাবি জানিয়ে অসমের সমগ্রশিক্ষা মিশনের ডিরেক্টরের কাছে এক পত্র প্রদান করলেন স্বাধীনবাজার জিপির সমাজকর্মী রশিদ আহমদ লস্কর। তিনি পত্রে উল্লেখ করে বলেন, অসম সরকারের সর্ব শিক্ষা বিভাগ ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরের ছাত্রছাত্রীদের দুইজোড়া করে ইউনিফর্ম বণ্টনের জন্য ছাত্রছাত্রী প্রতি ৬০০.০০ টাকা করে বরাদ্দ করা হয়। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় সোনাই শিক্ষা খণ্ডের আওতাধীন স্বাধীনবাজার জিপির চারটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা পোশাক থেকে বঞ্চিত হয়। এই স্কুল গুলিতে পাঠরত ছাত্রছাত্রীরা অত্যন্ত নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের। পোশাক না পাওয়ার দরুন তারা কোনও মতে আগের বছরের দেওয়া ছেঁড়া ও ফাঁটা পোশাক নিয়ে নিয়ে স্কুলে আসছে। চারটি স্কুল হল স্বাধীন বাজার হাইস্কুল, বড় ভাউরি এমই স্কুল, ৩১৫ নম্বর গড়রকান্দি এলপি স্কুল ও ১৩৮১ নম্বর মধ্য বড়ভাউরি এলপি স্কুল। মঙ্গলবার তিনি সাংবাদিক ডেকে পুরো বিষয় তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, চারটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা যখন পোশাক থেকে বঞ্চিত হয়েছে তা জানতে পেরে তিনি সহ এলাকার বেশ কয়েকজন লোক প্রধান শিক্ষকদের দ্বারস্থ হন। প্রধান শিক্ষকরা জানান, তাঁরা যে ভেন্ডরকে পোশাক সরবরাহের বরাত দিয়েছিলেন সেই ভেন্ডর টাকা পায়নি বলে পোশাক ফেরৎ নিয়ে যান। ভেন্ডরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনিও সেই কথা জানালেন তাঁর অ্য়াকাউন্টে এই স্কুলগুলির ইউনিফর্ম সরবরাহের কোনও টাকা ক্রেডিট হয়ই। তিনি গুয়াহাটি সর্বশিক্ষার মিশন অফিসে গিয়ে ফাইনান্স ও অ্য়াকাউন্টস অফিসারের সঙ্গে দেখা করে একটি দরখাস্থ দিয়েছিলেন ইউনিফর্মের টাকা অ্য়াকাউন্টে ক্রেডিট করানোর জন্য কিন্তু সেই অফিসার  জানিয়ে দেন এই ফান্ড লেপস হয়ে গেছে তা পাওয়া খুবই কঠিন। তাই তিনি গুয়াহাটি থেকে ফিরে এসে এই চারটি স্কুল থেকে ইউনিফর্ম ফেরত নিয়ে নেন।

এরপর তাঁরা জানতে পারেন খণ্ড প্রাথমিক শিক্ষা আধিকারিক সোনাই প্রধান শিক্ষকদের অফিসে ডেকে নিয়ে ভেন্ডর বদলি করার জন্য চাপ দেন কিন্তু তাঁরা ভেন্ডর বদলি করেনি। কেননা ভেন্ডর মনোনীত করেছেন স্কুলের কোয়ালিটি কন্ট্রোল কমিটি ও স্কুল পরিচালন সমিতি। ভেন্ডর বদলি না করার জন্য তাহাদের স্কুলের ইউনিফর্মের ফান্ড খণ্ড অ্যাকাউটেন্টের মাধ্যমে বন্ধ করে রাখা হয়। এবং মার্চ মাসের অন্তিম লগ্নে ৩০ তারিখ রবিবার দিন ফান্ড রিলিজ করা হয় এবং এর পরের দিন ছিল মার্চ মাসের শেষ দিন এবং এই দিন ছিল আবার ঈদের ছুটির দিন তথাপিও স্কুলের প্রধান শিক্ষকগন কানারা ব্যাঙ্কে গিয়ে তাঁদের স্কুলের পেমেন্ট করা পিপিএ গুলি জমা দেন কিন্তু মার্চ মাসের শেষ দিন হওয়ায় ব‌্য়াঙ্ক কর্তৃপক্ষ এই চারটি স্কুলের ফান্ড ভেন্ডরের অ্য়াকাউন্টে ট্রান্সফার করতে পারেনি। যারদরুন ফান্ড লেপস হয়ে যায়। এরপর স্বাধীন বাজারের কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিক কাছাড়ের জেলা কমিশনার ও অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিইইও এবং অ্য়াকাউটেন্টের উপরে চাপ আসে। চাপে বিইইও এবং অ্য়াকাউটেন্ট খুব বেশি দৌঁড়ঝাপ শুরু করেন। রশিদ আহমদ জানান, সোনাইয়ের বিইইও স্বাধীনবাজার হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষককে শনিবারে অফিসে ডেকে নিয়ে জানিয়েছেন যেকোন ভাবে ইউনিফর্ম বণ্টন করতে হবে। তিনি অভিযোগ করে বলেন,  সরকার ছাত্রছাত্রীদের দুই জোড়া করে ইউনিফর্ম দেওয়ার জন্য ফান্ড বরাদ্দ করে। সেই ফান্ড বিইইওর অ্যাকাউন্টে আসে মার্চ মাসের ১৫ তারিখের আগে কিন্তু বিইইও ইচ্ছাকৃতভাবে এই চার স্কুলের ফান্ড রিলিজ করতে দেরি করায় ফান্ড লেপস হয়েছে। এ নিয়ে তিনি ক্ষোভ ব্যক্ত করেন। পুরো বিষয়ের তদন্তের দাবি জানিয়ে সমগ্রশিক্ষার কাছাড় জেলার কো-অর্ডিনেটর ও ডিরেক্টের কাছে ২৪ জুন লিখিত ভাবে জানিয়েছেন।

Author

Spread the News