কৃষ্ণপুরে প্রৌঢ়কে খুনের অপচেষ্টা সৎ ভাইয়ের, দিব্যি ঘুরছে আসামী, পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ

ফের হামলার আশংকায় ভুগছেন পরিবারের সদস্যরা

বরাক তরঙ্গ, ২৭ জুন : সৎ ভাইয়ের প্রাণঘাতী হামলার শিকার হলেন ৫৫ বছরের এক প্রৌঢ় ল। গত ২৪ জুন মঙ্গলবার রাত ৮-৪৫ টায় এ ঘটনা সংঘটিত হয়। লালা থানাধীন কৃষ্ণপুর বাজার সংলগ্ন কাটলিছড়ার বিধায়ক সুজাম উদ্দিন লস্করের বাড়ির সম্মূখে খুনের অপচেষ্টা চালানো হয় মোহাম্মদপুর দ্বিতীয় খন্ডের আবুল হুসেন বড়ভূইয়ার উপর। এনিয়ে আব্দুল্লাপুর পুলিশ ফাঁড়িতে এক এজাহার জমা করেছেন আক্রান্ত প্রৌঢ়ের কন্যা মেহবুবা আলম বড়ভূইয়া। জানা গেছে, ঘটনার তিনদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত মামালা রেজিস্ট্রার্ট করেনি পুলিশ।

এজাহারের বিবরণ মতে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে কৃষ্ণপুর  বাজার মসজিদে ইশার নামাজ আদায় করে ৬ নং জাতীয় সড়ক দিয়ে ঘরে ফিরছিলেন তিনি। বিধায়কের বাড়ির সম্মূখে পৌছতে সৎ ভাই নজমুল হুসেন বড়ভূইয়া হঠাৎ বাইক নিয়ে সামনে এসে রাস্তা আগলে ধরে বাইক থেকে নেমে তার পেছন থেকে ধারালো অস্ত্র (দা) দিয়ে আবুল হুসেনের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। সৎ ভাইয়ের প্রাণঘাতী হামলা উপলব্ধি করতে পেরে তিনি তা প্রতিহত করার চেষ্টা করে বিফল হন।  অন্ধকারের সুযোগে সে ভাইয়ের মাথায় উপর উপর্যুপুরি কোপ বসিয়ে দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় আবুল হুসেন বড়ভূইয়া হাল্লা চিৎকার করে প্রাণ বাঁচাতে কাটলিছড়ার বিধায়ক সুজাম উদ্দিনের বাড়িতে প্রবেশের সময় স্থানীয় জনগনের নজরে আসে ব্যাপারটি। তারা সঙ্গে সঙ্গে আবুল হুসেনের বাড়িতে খবর দেন। পুত্র ইয়াহহিয়া আলম ও স্থানীয়দের সহযোগে রক্তাক্ত অবস্থায়  লালা প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে আসার পথে আব্দুল্লাহপুর পুলিশ ফাঁড়িকে ঘটনা অবগত করা হয়।পুলিশ রক্তমাখা দেহ ভিডিও ক্যামেরায় ধারণ করে রাখে হাসপাতালে পৌছে। লালা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর মাথার জখম গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিসৎক উন্নত চিকিৎসার জন্য হাইলাকান্দি এসকে রায় সিভিল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু আবুল হোসেনের জখম শুরুতর হওয়ায় এস কে রায় সিভিল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।

মঙ্গলবার রাতেই শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।জানা গেছে, পৈতৃক সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে বিগত এক বছর থেকে সৎ ভাই নজমুল বড়ভাই আবুল হুসেনকে আক্রমণ করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ পরিবারের লোকেদের। বারবার স্থানীয় বিশিষ্টদের নিয়ে বিচার সভা আহ্বান করা হয়। প্রতিটি বিচার সভায় সৎ ভাই নজমুল হুসেন মধ্যস্থতাকারীদের ডিঙ্গিয়ে বিচার সভা ত্যাগ করে চলে যায় বলে জানা যায়। এমনকি তার নিজের পছন্দমতো ব্যাক্তিদেরকে নিয়ে বিচার সভা আহ্বান করে তা মেনে নিতে রাজি হয়নি। শেষ পর্যন্ত নজমুলের বড়ভাই আবুল হুসেন তার সমস্ত দাবিকে মেনে নিয়ে ঝগড়া বিবাদ না করে তা সমাধানের চেষ্টা করেন। সে অনুযায়ী ফের বিচার সভার মাধ্যমে সম্পত্তির ভাগবাটোয়ারা করে তা নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করা হয়। এতে কিছুটা অংশ বিচারের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হলে কিছু অংশ রেখে দেয় নজমুল। প্রায় ৬ মাসের ব্যবধানে হঠাৎ করে মগংলবার রাতে আচমকা প্রাণঘাতী  আক্রমণ চালায় সৎ ভাই নজমুল। এমন ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।

এদিকে আব্দুল্লাহপুর আউট পোস্টে নজমুল ও তার আরেক ভাই আলতা হুসেন বড়ভূইয়াকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করা হলে পুলিশ তদন্তে নেমে  নজমুলের ভাইকে আটক করে নিয়ে আসে বুধবার বিকালে। ঘাতক নজমুলকে হাজির করার জন্য তিনদিনের সময়সীমা দিয়ে তার ভাইকে ছেড়ে দিলে এখনও অভিযুক্তকে আটক করতে সমর্থ হয়নি আব্দুল্লাপুর পুলিশ।সুত্রে জানা গেছে, ঘাতক নজমুল দিব্যি ঘুরাফেরা করছে তবে কোনও রহস্যজনক কারণে নজমুলকে আটক করেছেনা পুলিশ। পরিবারের লোকেদের মধ্যে এমন  সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

এদিকে, আবুল হুসেনের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন বলে জানিয়েছেন পরিবারের তরফে। ঘাতক নজমুল ফের প্রাণঘাতী হামলা করতে পারে পরিবারের লোকেরা আশংকা প্রকাশ করছেন।এ ব্যাপারে লালা পুলিশের ওসি এবং হাইলাকান্দির পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন আক্রান্ত ব্যাক্তি আবুল হুসেন বড়ভূইয়া ন্যায় বিচারের জন্য।।

Author

Spread the News