ঝুঁকি নিয়ে কাজ কর্মীদের, বন্যার জলে ডুবে যাওয়া বিদ্যুৎ পরিকাঠামো পুনরুদ্ধার
জনসংযোগ, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ৬ জুন : কাছাড় জেলাজুড়ে বন্যার তীব্রতায় সৃষ্ট ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেও জেলা প্রশাসন ও অসম পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (এপিডিসিএল) অসাধারণ সমন্বয়, সাহসিকতা ও কর্তব্যপরায়ণতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। জলমগ্ন সাব-স্টেশন, ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ পরিকাঠামো এবং প্রতিকূল পরিবেশ—এই সব প্রতিবন্ধকতার মাঝেও এপিডিসিএল-এর বাস্তুকার, লাইনম্যান এবং সহায়ক কর্মীরা দিনরাত এক করে কাজ করে চলেছেন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ বজায় রাখতে।
এই দায়িত্বশীলতার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত হলো ৩৩/১১ কেভি চিরুকান্দি সাব-স্টেশন। বন্যার জলে নিমজ্জিত থাকলেও এই কেন্দ্র থেকে সংযুক্ত চারটি ১১ কেভি ফিডারের বিদ্যুৎ সরবরাহ অন্য ৩৩/১১ কেভি সাব-স্টেশন থেকে বিকল্প পথে পুনঃনির্দেশনার মাধ্যমে সচল রাখা হয়েছে। প্রযুক্তিগত সুক্ষ্মতা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের সমন্বয়ে সফল হয়েছে এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি, যাতে ভোক্তারা পাননি কোনো অসুবিধা, এবং বজায় রাখা হয়েছে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা।

দুর্যোগ মোকাবিলায় অগ্রগণ্য পদক্ষেপ হিসেবে, ৩৩/১১ কেভি মেহেরপুর সাব-স্টেশনের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ উচ্চ ভোল্টেজ ট্রান্সমিশন লাইনের সুরক্ষায় ১,০০০ জিও ব্যাগ স্থাপন করা হয়েছে, যার ফলে বড় ধরনের ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়েছে। এই আগাম ব্যবস্থা বিদ্যুৎ পরিকাঠামো সুরক্ষা নিশ্চিত করেছে এবং দুর্যোগ প্রতিরোধে এপিডিসিএল-এর অঙ্গীকারকে সুদৃঢ় করেছে।

মুখ্যমন্ত্রী ড হিমন্ত বিশ্ব শর্মার দূরদর্শী নেতৃত্বে এবং স্থানীয়ভাবে মন্ত্রী কৌশিক রায়ের সক্রিয় সমর্থনে পরিচালিত এই ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে অসম রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএসডিএমএ) ও কাছাড় জেলা প্রশাসন। তাদের সমন্বিত পদক্ষেপ দুর্যোগ মোকাবিলায় গতি ও কার্যকারিতার নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে।

প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও, প্রাণপণে কাজ করে চলেছেন এপিডিসিএল কাছাড় বিভাগের কর্মীরা। তাঁদের সেবামূলক মনোভাব, দায়িত্ববোধ ও মানবিকতা এই দুর্দিনে হয়ে উঠেছে সরকারের অটুট সহমর্মিতার প্রতীক—যা প্রমাণ করে, দুঃসময়ের অন্ধকারেও আলোর দিশা দেখাতে সদা প্রস্তুত প্রশাসন ও সেবাকর্মীরা।