প্রশান্ত চক্রবর্তীর মন্তব্যে তীব্র ভাষায় নিন্দা ও প্রতিবাদ হিন্দু বাঙালি পরিষদের
বরাক তরঙ্গ, ২৯ মে : বরাকবাসী মেরুদণ্ডহীন অধ্যাপক প্রশান্ত চক্রবর্তীর মন্তব্যের তীব্র ভাষায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাল সারা আসাম হিন্দু বাঙালি পরিষদ এবং কাছাড় জেলা হিন্দু বাঙালি পরিষদ। সারা অসম হিন্দু বাঙালি পরিষদের কার্যকরী সভাপতি হেমাঙ্গ শেখর দাস ও কাছাড় জেলা সভাপতি দেবোজ্যতি দেব এক যৌথ বিবৃতিতে গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগের সঙ্গে জনসমক্ষে স্পষ্ট ভাষায় বলেন, অসম বাংলা সাহিত্য সভার সম্পাদক প্রশান্ত চক্রবর্তীর সম্প্রতি এক অমার্জনীয়, বিদ্বেষমূলক এবং বেদনাদায়ক মন্তব্য করে বরাক উপত্যকার বাঙালি হিন্দু সমাজকে “মেরুদণ্ডহীন” বলে অবমাননা করেছেন। এই মন্তব্য শুধু অশালীন নয় — এটি ইচ্ছাকৃতভাবে বাঙালি জাতিসত্তার গৌরব ও আত্মমর্যাদায় আঘাতের এক নগ্ন প্রয়াস। এমন মন্তব্য একটি ঐতিহ্যবাহী, সংগ্রামী এবং সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সরাসরি অপমান, যা কখনোই কোনো সভ্য সমাজে মেনে নেওয়া যায় না।
বরাক উপত্যকার বাঙালি সমাজ ইতিহাসের প্রতিটি সঙ্কটকালে আত্মত্যাগ, সংগ্রাম ও বীরত্বের সাক্ষর রেখেছে। ভাষা আন্দোলনের রক্তাক্ত অধ্যায় হোক, কিংবা সামাজিক-সাংস্কৃতিক অধিকারের লড়াই — বরাকের বাঙালিরা সবসময়ই সম্মানের সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়েছে। আমাদের সমাজ কখনও “মেরুদণ্ডহীন” ছিল না — বরং অসম ও ভারতবর্ষের উন্নয়ন, শান্তি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে এক অগ্রণী শক্তি হিসেবে কাজ করে এসেছি।
প্রশান্ত চক্রবর্তীর এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ, অবমাননাকর ও উসকানিমূলক বক্তব্য শুধু নিন্দনীয়ই নয়, বরং এটি বরাক-অসমের সহাবস্থানে বিভেদ সৃষ্টির এক সুপরিকল্পিত প্রয়াস — যা সাহিত্যিক দায়িত্ববোধ ও বুদ্ধিজীবী সমাজের ন্যূনতম নৈতিক মানদণ্ডেরও ঘোরতর লঙ্ঘন।

এ প্রসঙ্গে অসম বাংলা সাহিত্য সভার সভাপতি খগেন্দ্রচন্দ্র দাসের প্রতি জোরালোভাবে তাঁরা অনুরোধ জানান প্রশান্ত চক্রবর্তীর মতো একজন বিদ্বেষপ্রবণ ব্যক্তিকে অবিলম্বে সম্পাদক পদ থেকে অপসারণ করার। সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ভাষার মতো পবিত্র অঙ্গনে এমন সংকীর্ণ মনোভব ও বিদ্বেষী মানসিকতার কোনও স্থান নেই।
পাশাপাশি অসম সরকারের আহ্বান জানান অধ্যাপকের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে একটি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক, যাতে ভবিষ্যতে কেউ বরাক উপত্যকার গর্বিত বাঙালি হিন্দু সমাজকে অসম্মান করার ধৃষ্টতা দেখাতে না পারে।