সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে জোরদার প্রস্তুতি কাছাড় জেলা প্রশাসনের
জনসংযোগ, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ১৯ এপ্রিল : কাছাড় জেলায় শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও স্বচ্ছ পঞ্চায়েত নিৰ্বাচনের জোরদার প্রস্তুতি জেলাপ্রশাসনের। শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রাকপ্রস্তুতি এবং পরিসংখ্যানভিত্তিক বিশ্লেষণ তুলে ধরেন জেলার রিটার্নিং অফিসার তথা জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদব।
সাংবাদিক সম্মেলনে জেলা আয়ুক্ত বলেন, “গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জনগণ যেন নির্ভয়ে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতা এবং সুব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।” নির্বাচনী তথ্য উপস্থাপন করতে গিয়ে তিনি জানান, কাছাড় জেলায় মোট ভোটারের সংখ্যা ১০,৬০,১৫৫ যার মধ্যে পুরুষ ৫,৩১,৬৬১, মহিলা ৫,২৮,৪৭৯ এবং অন্যান্য ভোটার ১৫ জন। জেলায় মোট পোলিং স্টেশনের সংখ্যা ১৭০৬টি, যার মধ্যে কাছাড়ে রয়েছে ১৬২০টি এবং লক্ষীপুর সমজেলায় রয়েছে ৩১০টি। অতিরিক্ত বুথ রয়েছে যথাক্রমে ৮৬ ও ৬টি। নারী পরিচালিত পোলিং স্টেশনের সংখ্যা কাছাড়ে ২৭৪টি, যার মধ্যে লক্ষীপুরে রয়েছে ১৯টি। এছাড়াও, জেলাজুড়ে ৪৯০টি পি-২ পোলিং স্টেশন চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রকাশিত পরিসংখ্যানে জানা যায়, জেলা পরিষদ সদস্য পদে বৈধ মনোনয়নপত্রের সংখ্যা ৬৪ এবং দুইজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। আঞ্চলিক পঞ্চায়েত সদস্য পদে বৈধ প্রার্থী ৩৮১ জন, ১৩টি মনোনয়নপত্র বাতিল এবং ৩৫ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য পদে মোট ৪০৫১টি বৈধ মনোনয়ন গৃহীত হয়েছে, যেখানে ১০৬টি বাতিল হয়েছে এবং ৩১৯ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন।

নির্বাচন পরিচালনার প্রশাসনিক পরিকাঠামো সম্পর্কেও বিস্তারিত জানানো হয়। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে জেলায় ২৫ জন জোনাল অফিসার এবং ১২৫ জন সেক্টর অফিসার নিযুক্ত করা হয়েছে। ব্যালট বাক্স গ্রহণ ও জমা দেওয়ার জন্য যথাযথ কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে – যেমন উধারবন্দ ও সোনাইয়ের ক্ষেত্রে আইএসবিটি রামনগর, আর লক্ষীপুরের ক্ষেত্রে খণ্ড উন্নয়ন আধিকারিকের কার্যালয়।

জেলা পুলিশসুপার নুমাল মাহাতো এই সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “নির্বাচনী শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে জেলা পুলিশ সর্বদা সজাগ ও সক্রিয়।” তিনি জানান, স্পর্শকাতর কেন্দ্রগুলিতে বিশেষ নজরদারির পাশাপাশি অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হবে। এছাড়াও, পর্যাপ্ত সংখ্যক টহলদারি দল, কুইক রেসপন্স টিম এবং ভ্রাম্যমাণ নজরদারি ইউনিট জুড়ে জেলায় সক্রিয় থাকবে। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করাই প্রশাসনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।