পূর্ব কচুদরমে আর্ন্তজাতিক ধর্ম সম্মেলন অনুষ্ঠিত
বরাক তরঙ্গ, ৩০ ডিসেম্বর : অসমে বসবাস করা বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি লোকেদের ওবিসি মর্যাদা প্রদান সহ ১৩০ বছরের ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী রাধা মাধব মন্দিরের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের দাবি উঠল আর্ন্তজাতিক ধর্ম সম্মেলনে। শিলচর শহরতলী পূর্ব কচুদরমের শ্রী শ্রী রাধা মাধব বিগ্রহ সর্বজনীন মন্দিরে শনিবার ও রবিবার দু’দিনব্যাপী প্রয়াত মহেন্দ্র রাজকুমারের স্মৃতি মঞ্চে আর্ন্তজাতিক ধর্ম সম্মেলনে এই দাবি জানান আয়োজক কমিটির সভাপতি মানস সিনহা, সম্পাদক রঞ্জু রাজকুমার, ভূমিদাতা সুপ্রভা রাজকুমারী। তাঁরা জানান, ১৩০ বছর পূর্বে মহেন্দ্র রাজকুমার শ্রী শ্রী রাধা মাধব বিগ্রহ সর্বজনীন মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এখানে অসম, ত্রিপুরা সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা এসেছেন। আর্ন্তজাতিক ধর্ম সম্মেলনে ভক্তরা শ্রী কৃষ্ণচৈতন্য ভাগবত ব্যাখার সাথে সাথে বিভিন্ন সামাজিক আলাপ আলোচনা করেন। এই ধর্ম সম্মেলনে ত্রিপুরার প্রাক্তন মন্ত্রী বিজয়লক্ষ্মী সিনহা, প্রাগজ্যোতিষ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্মৃতিকুমার সিনহা। মিজোরাম কলেজের অধ্যাপক হরেন্দ্র সিনহা অংশ গ্রহণ করেছেন।
বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরিদের ওবিসি মর্যাদা সহ ১৩০ বছরের ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী রাধা মাধব মন্দিরের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের দাবি
তাঁরা জানান, মহেন্দ্র রাজকুমার শিক্ষা বিস্তারের জন্য স্কুল দান করেছিলেন, ধর্মীয়ভাবে মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছেন, ভূমি দান করেছেন। কিন্তু ঐতিহ্যবাহী এই মন্দিরের পরিকাঠামো উন্নয়ন জরুরি। তাঁরা বিভিন্ন সময় মন্দিরের পরিকাঠামো উন্নয়নে দাবি জানিয়ে আসছেন। বিশেষ করে মন্দিরের ১৫ বিঘা জমি রয়েছে। তাই বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি সমাজের ছাত্রদের শিক্ষার ক্ষেত্ৰে থাকার জন্য একটি ছাত্ৰাবাস, একটি কমিউনিটি হল সহ অসম দৰ্শন প্রকল্পের অধীনে মন্দিরের পরিকাঠামো উন্নয়নে আর্থিক সাহায্যের দাবি জানান তাঁরা। এছাড়া ত্রিপুরায় বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরিদের যেহেতু ওবিসি মর্যাদা দেওয়া হয়েছে,তাই আসামে বসবাস করা বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরিদের ওবিসি মর্যাদা প্রদানের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। এব্যাপারে কাছাড়ের জেলা আয়ুক্ত মারফত মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন বলে জানান তাঁরা। এদিন তাঁরা মন্দির ও সমাজের উন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
তাঁরা আরও জানান, সমাজকে বিপন্ন অবস্থা থেকে মুক্ত করার জন্য ১৯৩২ সালে ২৫ সেপ্টেম্বর ইউনাইটেড সোসাইটির উদ্দেশ্যে মহাসভার প্রতিষ্ঠা করেছেন। যে মহাসভার উদ্দেশ্য ছিল সমাজ এবং জাতির পুণরুদ্ধার এবং সামাজিক চেতনার বিস্তার। মহেন্দ্র রাজকুমার ওমেন এমপ্রোয়ারমেন্টকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন এবং ১৯৩৯ সালের ৭ এপ্রিল নিজের সভাপতিত্বে একটি মহিলা সভাআয়োজন করেন সেখানে বাস্তবিক মহিলাদের সুললিত ভাষার বক্তৃতা সকল মহিলা পুরুষের মনে সমাজের পরিনাম চিন্তার প্রেরণা সঞ্চার করেছিল ও ক্ষত্রিয় মহিলা সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন এবং অনেক বড় তাঁত কারখানা করে বিভিন্ন জায়গার মহিলাদের কাজ করার সুযোগ করে দেন। তাই শতবর্ষ পুরনো এই মন্দিরের উন্নয়নে স্থানীয় বিধায়ক, মন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান তাঁরা।