বইমেলার আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আবশ্যক
বরাক তরঙ্গ, ২ ডিসেম্বর, সোমবার,
বর্তমান সময়ে বইমেলার প্রয়োজন আরও জরুরি হয়ে দেখা দিয়েছে । একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, ডিজিটাল যুগে উঠতি প্রজন্মের এক বৃহৎ অংশ বই পড়া থেকে ক্রমেই দূরে সরে যাচ্ছে। এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বৃহৎ আকারে বইমেলা আয়োজন করে আসছে। বইমেলা মূলত একটি আন্দোলন। সংস্কৃতি চর্চার একটি অঙ্গ হিসেবে পরিচিত বইমেলা। সুষ্ঠু সংস্কৃতি গড়ে তুলতে বইমেলার ভূমিকা অপরিসীম।
বই বা গ্রন্থ মানুষের জ্ঞানের উন্মেষ ঘটায়, পাশাপাশি সংস্কৃতিমনস্ক করে তুলে। সেই বাস্তবকে মাথায় রেখে যুগ যুগ ধরে উত্তরপূর্বের এই প্রত্যন্ত শহর শিলচরেও চলে আসছে বইমেলা। শিলচরে একাধিক সংগঠন বইমেলার আয়োজন করে আসছে। এরমধ্যে প্রয়াত পরিতোষ পাল চৌধুরীর নেতৃত্বে বইমেলা ছিল ঐতিহ্যপূর্ণ। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বইপ্রেমী মানুষসহ স্কুল কলেজের পড়ুয়াদের ভিড় জমে উঠতো। বাংলাদেশ সহ দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ ইত্যাদি রাজ্য থেকে বই বিক্রেতারা মেলায় অংশ নিতেন। সরকারি অনুদান ছাড়াও জমজমাট ছিল সেই বইমেলা।
কিন্তু গত কয়েকবছর ধরে শিলচরে বইমেলার অবস্থা বড়ই করুণ। বিশেষ করে ২০১৮ সাল থেকে বইমেলার অবস্থা খুবই সূচনীয় হয়ে পড়েছে । এরপর কোভিড-১৯ বইমেলাকে আরও দুর্বল করে ফেলে। কোভিডের পর থেকে সেই যে ভাঁটার টান, তা থেকে আর উত্তরণ ঘটছেই না। সেই পরিস্থিতির পর থেকে বইমেলায় সেভাবে আর লোকজনের জমায়েত চোখে পড়েনি। এমনকি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পুস্তকবিক্রেতাদেরও দেখা যায়নি।
শিলচর বইমেলার বর্তমান অবস্থার জন্য দায়ী কে কোভিড না সরকারি অনুদান না পাওয়া, না অন্য কোনও কারণ– তা খুঁজে বের করে বইমেলার আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আবশ্যক। বই-ই মানুষকে সঠিক পথ দেখাতে পারে। তাই বই পড়ার মানসিকতা গড়ে তুলতে বইমেলার বিকল্প নেই। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আগের মতোই সাড়ম্বরে বইমেলার আয়োজন করা হোক।