লিঙ্গসাম্য নিয়ে কাজের জন্য দিল্লিতে পুরস্কৃত শিলচরের তানিয়া
বরাক তরঙ্গ, ২৯ সেপ্টেম্বর : সমাজে লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে কাজের জন্য প্রতিষ্ঠিত মার্থা ফারেল পুরস্কার পেলেন কাছাড় জেলার আইনজীবী তানিয়া সুলতানা লস্কর। দেশের ২১ রাজ্যের বিভিন্ন স্তরের সমাজসেবীরা ৮ম মার্থা ফারেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন তবে এর থেকে যে পাঁচজনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছেন তানিয়া। গোটা অসম এবং উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলো থেকে তিনিই একমাত্র পুরস্কারটি পেয়েছেন।
শনিবার নয়াদিল্লিতে আয়োজিত ৮ম মার্থা ফারেল পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি বিশেষ সম্মানটি গ্রহণ করেন তানিয়া। সেখানে দাঁড়িয়ে বরাক উপত্যকার ভাষা আন্দোলনের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘দিল্লি বরাবর ক্ষমতার কেন্দ্র তবে এখান থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কি হচ্ছে সেটা অনেকের চোখে পড়ে না। আমি যে জায়গায় থাকি, সেখানে মাতৃভাষার অধিকার রক্ষার জন্য ১৯৬১ সালে ১১ জন ব্যক্তি প্রাণ দিয়েছিলেন। এখনও আমাদের ভাষার ভিত্তিতে বৈষম্যের শিকার হতে হয় এবং প্রতিনিয়ত লড়াই করে যেতে হয়। এই পুরস্কার গ্রহণ করতে এসে মনে হচ্ছে আজ দিল্লি আমাদের কাছে এসেছে।’
মার্থা ফারেল ফাউন্ডেশনের তরফে তানিয়ার বিষয়ে লেখা হয়েছে, তিনি সমাজের পিছিয়ে পড়া বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মহিলাদের জন্য যে আইনি সহায়তা প্রদান করছেন এতে অনেকেই লাভবান হয়েছেন। বিশেষ করে লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে তার লড়াই দৃষ্টান্তমূলক। অসমের এনআরসি প্রক্রিয়ার সময় তিনি সমাজের বিভিন্ন স্তরের লোকেদের সহায়তা করেছেন। এছাড়া সেইজ নামের সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে তারা তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের অধিকারের জন্য লড়াই করছেন।
তানিয়া এদের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘আমাদের সমাজে এখনও অনেক লোক রয়েছেন যারা নিজেদের অধিকারের বিষয়ে কিছুই জানেন না। অনেকেই শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাননি যার ফলে তাদের নিজের অধিকার নিয়ে জানার মতো সুযোগ গড়ে ওঠেনি। আমরা যখন তাদের পাশে দাঁড়াই মনে হয়, আমরা অনেক ভালো আছি কারণ নিজেদের অধিকারের বিষয়ে আমরা অবগত। সমাজে এখনও শিক্ষার অভাবে অনেকেই বাল্যবিবাহ সহ আরও বেশ কয়েকটি বিষয়কে স্বাভাবিক মনে করেন, তারা জানেন না এগুলো আইনত দণ্ডনীয়। আমরা এসব লোকেদের কাছে গিয়ে তাদের বিষয়গুলো বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করি।’