অসমে কাজি প্রথা বিলুপ্ত, ‘দ্যা আসাম রিপিলিং বিল-২০২৪’ পাস
বরাক তরঙ্গ, ২৯ আগস্ট : ‘দ্যা আসাম রিপিলিং বিল-২০২৪’ পাস হল। বৃহস্পতিবার অসম বিধানসভায় পাস হয়েছে এই বিল। একই সঙ্গে বাতিল হল ‘দ্যা আসাম মুসলিম মেরেজ অ্যান্ড ডিভোর্স রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট ১৯৩৫’। এখন থেকে কার্যকর হবে Assam Compulsory Registration of Muslim Marriages and Divorces Bill,2024 এর।
বিধানসভায় এই বিল পাস হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, “১৯৩৫ সালের শরিয়ত আইনের সঙ্গে ‘দ্যা আসাম রিপিলিং বিল-২০২৪’ এর কোনও সম্পর্ক নেই। কাজীরা বাল্য বিবাহ প্রতিরোধের পক্ষে নয়। অতএব তাঁরা এই আইনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেছেন।
তিনি আরও বলেন, কাজিরা বিশ্বস্ত ব্যক্তি নন। কাজী প্রথা বাতিল করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। ১৯৩৫ সাল থেকে কাজিরা মুসলিম বিবাহ নিবন্ধন করেন। এসব কাজিরা বেআইনিভাবে উপ-কাজি নিয়োগ করেন। এ কারণে কাজি প্রথা বিলুপ্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, কোন বেসরকারি ব্যক্তিকে মুসলিম বিবাহ নিবন্ধনের দায়িত্ব দেওয়া হবে না। শুধুমাত্র সরকারি ব্যক্তিরা ডেপুটি রেজিস্ট্রারের দায়িত্বে থাকবেন। মুসলিম বিয়ের রেজিস্ট্রেশনের জন্য ফি হবে মাত্র ১ টাকা।
তিনি কাজি প্রথা বিলুপ্তির কথা উল্লেখ করে বলেন, কাজির মানা বা না-মানা উপর বিধানসভা চলে না। তিনি শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ রণোজ পেগুকে গুয়াহাটি সদর কাজির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

এ দিকে, বিধানসভায় বিল নিয়ে বিতর্ক চলাকালীন এআইইউডিএফ বিধায়কদের প্রশ্নের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা মুসলমানদের বিয়েতে হস্তক্ষেপ করিনি।” আপনারা বাইরে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবেন না, দয়া করে নিকাহের সংজ্ঞাটি মনোযোগ সহকারে অধ্যয়ন করুন।
তিনি বলেন, প্রথমে বিয়ে করতে হবে। এই বিয়ের সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। নিয়ম, নীতি ও মুসলিম পার্সোনাল ল’ অনুযায়ী বিয়ে হলে দুই ব্যক্তি স্বামী-স্ত্রী। লিভ-ইন সম্পর্কের প্রশ্নই আসে না।

কাজী প্রথা বন্ধ করতে আমরা অধ্যাদেশ জারি করেছি। মাঝখানে অনেক বিয়ে হয়েছে। ইতিমধ্যে বিবাহিত পুরুষ ও মহিলারা নিবন্ধনের জন্য অপেক্ষা করছেন। কাজেই যারা ইতিমধ্যে কাজির কাছে নিবন্ধন করেছেন তাদের এই আইনে অবৈধ ঘোষণা করা হয়নি।
অসমে আজ থেকে ছয় মাস ধরে কোনো কাজি নেই। এই ছয় মাসে অসমে যারা বিয়ে করেছেন এবং হবেন তাদের উভয়ের নিবন্ধনের সুবিধার্থে সোলেমেনাইজড এবং ইনটেন্ডেন্ট শাখা স্থাপন করা হয়েছে। অনেক মুসলিম নর-নারী তাদের বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে আসবে এবং কেউ কেউ বিয়ের আগে রেজিস্ট্রি করবে। সাব-রেজিস্ট্রারদের বিয়ে দেওয়ার অধিকার নেই। বিয়ে বা নিকাহ হতে হবে মুসলিম পার্সোনাল ল’ ও রীতিনীতি অনুযায়ী।