মদিনায় চরম হেনস্তার শিকার অসমের হজযাত্রীরা, ১২ ঘণ্টার পর মিলল বাস
এ বি লস্কর লালা।
বরাক তরঙ্গ, ৩ জুন : মক্কা-মদিনায় চরম অব্যবস্থার মধ্যে অসমের হজযাত্রীরা। মদিনায় অবস্থানরত হজযাত্রীরা এক অডিও বার্তার মাধ্যমে নিজেদের অসুবিধার কথা তুলে ধরে রাজ্য হজ কমিটির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগলে দেন। তাঁরা বলেন, ২৪ মে গুয়াহাটি এম্বারকেশন থেকে যাত্রা করা হজযাত্রীরা রীতিমতো ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন আরব বিশ্বে। গুয়াহাটি থেকেই তাদের ভোগান্তি শুরু হয়ে যায়। এখানেও বারবার ফ্লাইট বাতিল সহ সময়সূচি পরিবর্তন করে একপ্রকার চরম হেনস্তা করা হয়। এরপর মদিনায় অবস্থানের তিনদিন পর তাদের ব্যাগ হাতে পৌছয়। যারদরুন ব্যাপক অসুবিধার সম্মুখীন হন তাঁরা। সময়মতো ব্যাগ না পৌছানোয় কাপড় পর্যন্ত বদল করতে পারেননি হাজিরা।
অডিও বার্তা ভাইরাল হলে পদক্ষেপ হজ কমিটির___
তাঁরা অভিযোগ করে বলেন, পবিত্র হজব্রত পালন করতে গিয়ে কোন ধরণের সহযোগিতা পাচ্ছেন না। রাজ্য হজ কমিটির তরফে নিয়োজিত খাদিমুল হুজ্জাজরা কোনও সহযোগিতা করছেন না। এই অডিও বার্তা ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। ভাইরাল অডিও বার্তায় তাঁরা ক্ষোভের সুরে অসম রাজ্য হজ কমিটির চরম অব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে বিষোদগার করছেন। এই সব হাজিরা বিশেষ করে বরাক উপত্যকার বলে উল্লেখ করেছেন।তাঁরা বলেছেন, পৃথিবীর অন্য কোন স্থানের হজযাত্রীরা এরকম অসুবিধার সম্মুখীন নন, যেভাবে অসমের হজযাত্রীরা সমস্যার সম্মুখীন। তাদের অভিযোগ মতে, রবিবার সকালে তাদের মক্কায় নিয়ে যাওয়ার জন্য ফজরের নামাজের পর রুম থেকে বের করে নিয়ে আসার ১২ ঘন্টা অতিক্রম হয়ে যাওয়ার পরও কোন গাড়ি নিতে আসেনি। কাউকে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করলে তাঁরা কোন কিছু জানা নেই বলে এড়িয়ে যান। বরাক উপত্যকার ৩২২ জন হজযাত্রীর মধ্যে ৯২ জন মহিলা হজযাত্রী রয়েছেন। যারা ৪২ ডিগ্রি তাপমাত্রাকে উপেক্ষা করে কেউ রুমের বারান্দায়, কেউ রাস্তায়, কেউ ফুটপাতে বসে বাসের অপেক্ষা করতে থাকেন। সাতসকালে হাজিদের রুম থেকে বের করে নিয়ে আসেন খাদিমুল হুজ্জাজ আহমেদুর রহমান। তিনিও তাদের বের করে নিয়ে এসে বিপাকে পড়ে যান। মহিলা হজযাত্রীরাও চরম হেনস্তার শিকার হয়েছেন। তাঁদের কথায় অসমের হজযাত্রীদের রীতিমতো মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছেন।
এদিকে, অডিও বার্তা রাজ্য হজ কমিটির হাতে পৌছার পর তাঁরা তড়িঘড়ি এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করে। কেন্দ্রীয় হজ কমিটিকে এব্যাপারে অবগত করে। অবশেষে সৌদির কনসুল্যট জেনারেল সংগে যোগাযোগ করা হলে জট খুলে। এক নাগাড়ে ১২ ঘন্টার ভোগান্তির পর অবশেষে বাস এসে হাজির হলে নিরাপদে মক্কায় গিয়ে পৌছেন হাজিরা। পরিশ্রান্ত, ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত হজযাত্রীরা ১২ ঘন্টা ৪২ ডিগ্রির তাপমাত্রা সহ্য করে এমন বিভীষিকাময় কাহানীর বর্ণনা দিতে গিয়ে অনেকে ভেঙে পড়েছেন।