বন্যায় পেঁচারঘাটের ভাঙন আরও ভয়াবহ রূপ, আতঙ্কে পঁচিশটি পরিবার
মোহাম্মদ জনি, করিমগঞ্জ।
বরাক তরঙ্গ, ১ জুন : বন্যার জলের তোড়ে ভাঙনের কবলে পড়া পাথারকান্দি বিধানসভা কেন্দ্রের লোয়াইরপোয়া ব্লকের পেঁচারঘাট গ্রামের পঁচিশটি পরিবারের বসতবাড়ির অবস্থা অতন্ত বেহাল আকার ধারণ করেছে। স্থানীয়রা জানান, কুড়ি বছর ধরে চলা ভাঙনে লঙ্গাই নদীতে তলিয়ে যায় বেশ কয়েক বিঘা জমি। এ নিয়ে বিগত দিনে তৎকালীন বিধায়কদের শরণাপন্ন হলেও সমস্যা সমাধানে কেও এগিয়ে আসেননি বলে অভিযোগ। বর্তমানে মানুষ তাঁদের আশিয়ানা নিয়ে ব্যাপক দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। পরে কোনও উপায়ন্তর খোঁজে না পেয়ে গ্রামবাসী শনিবার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের ডেকে নিয়ে তাঁদের করুন অবস্থার কথা তুলে ধরেন।
স্থানীয়দের পক্ষে গোপালজী মিশ্র ও হরিদোয়ার ভর-রা জানান, তাঁদের গ্রামের পঁচিশটি পরিবার নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে। এরা হলেন নিশিকান্ত কৈরী, সুকুমার সিনহা, রামচন্দ্র রায়, শশীভূষন রায়, সুমন্তি ভর, নরেশ কৈরী, পলু দাস, বিদ্যা রবিদাস, সিতারাম গোয়ালা প্রমুখ সহ আরও অনেকের বাড়ি ঘর সহ জমি মাটি নদী গর্ভে চলে গেছে। এখন তাঁদের একমাত্র সম্বল বসত গৃহটি ঝুলে রয়েছে নদীর তীরে। এবারের ভয়বহ বন্যায় তাদের বাড়ি ঘরের আরও দুরবস্থা হয়েছে। লঙ্গাইয়ের জল ফেঁপে ফুলে বন্যার রুদ্ররূপ নিয়েছে। বন্যায় মাটি স্খলন হয়ে এখন ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে গোটা এলাকা। তাঁরা আক্ষেপ করে বলেন, এনিয়ে স্থানীয় কোন নেতৃত্ব সহ সরকারি কর্মীরা এলাকাটি পরিদর্শন করেননি বা তাঁদের কোন খোঁজ নেননি আজঅবদি। তাঁদের অভিযোগ, এ নিয়ে তাঁরা বিগত সময়ে তদানীন্তন সরকারের আমলে স্থানীয় বিধায়ক মণিলাল গোয়ালা সহ কার্তিকসেনা সিনহার দ্বারস্থ হয়ে শুধু মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই জুটেনি। তাই তাদের দীর্ঘ বছরের সমস্যা নিরসনের জন্য এবার পাথারকান্দি বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পালের কৃপা দৃষ্টি আকৰ্ষণ করছেন। আরও জানান, অচিরে ভাঙনের কোন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া না হলে চলতি বর্ষার মরশুমে অনেকের ঘর বাড়ি নদীগর্ভে চলে যাবে। পাশাপাশি আগামী শুকনো মরসুমে স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রয়োজন নদী বাঁধ নির্মাণ। বর্তমানে অনেকের বাঁশ ঝাড় সহ মূল্যবান গাছ গাছালি নদী ভাঙনে কবলে পড়ে নদী গর্ভে চলে গেছে।
তাছাড়া এলাকার সর্বজনীন কালীমন্দিরও নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে। পরিস্থিতি এতই ভয়ানক যে রাতে ঘরে থাকতে ভয় পাচ্ছেন এলাকার লোকজন। কেননা ঘুমন্ত অবস্থায় যদি ভূমিধস হয় তবে বড় অঘটন ঘটে যাবে এমন আশঙ্কা তাড়া করছে তাঁদের। ফলে এলাকার বাসিন্দারা মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার, জলসম্পদ মন্ত্রী পীযূষ হাজরিকা সহ স্থানীয় বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল ও করিমগঞ্জের জেলাশাসক মৃদুল যাদবের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।