পরেশ বরুয়া ও স্বামী বিদ্যুৎ মহন্তের উদ্দেশে স্ত্রীর ফেসবুক পোস্ট
বরাক তরঙ্গ, ২২ ডিসেম্বর : সাংবাদিক বিদ্যুৎ মহন্ত উগ্রপন্থী সংগঠন আলফা (স্বাধীন) যোগদান করেছেন বলে গত ষোল দিন আগে স্ত্রীকে জানিয়ে ছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্বামী মহন্ত ও আলফ (স্বাধীন) এর প্রতি তাঁর স্ত্রী ফেসবুক মারফতে এক বার্তা সহ নানা উত্তর চাইলেন।
আমি বিদ্যুৎ মহন্তের স্ত্রী। হ্যাঁ, সেই একই বিদ্যুৎ মহন্ত যিনি হঠাৎ করেই আলফা (স্বাধীন) যোগ দিয়েছিলেন দীর্ঘ ফেসবুক পোস্ট এবং তার স্ত্রীকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ বার্তার পরে (!)
তিনি গেলেন, আজ ১৬ দিন হয়ে গেল। এই ১৬ দিনে আমরা কেমন ছিলাম তা কেবল আমরা অনুভব করেছি। কারণ আজ পর্যন্ত আমরা তার সিদ্ধান্তের কোনো সঠিক খবর পাইনি। কাকে জিজ্ঞেস করব, কে বলবে? আমার প্রিয় মানুষটি যে খবরের পেছনে ছুটতে থাকে সে নিজেই সংবাদের বস্তু হয়ে আমাকে চিরতরে বাকরুদ্ধ করে কোনো ঠিকানা না দিয়ে অজানা স্থানে চলে গেল। আমি একজন সাধারণ মহিলা, এই দুর্ঘটনার পর আমার মাথায় অনেক কিছু আছে। আমি এই পোস্টটি লিখে কারো কাছে লজ্জার কারণ হতে চাই না।
আমি জিজ্ঞাসা করছি, মিঃ পরেশ বরুয়া মহাশয়, আলফা কমান্ডার (স্বা), আপনি যদি কখনও এই পোস্টটি দেখেন তবে দয়া করে আমাকে আমার উত্তর দিন –
১) আমার স্বামী মিঃ বিদ্যুৎ মহন্ত কি সত্যিই আপনার সংগঠনে গেছেন?
২) যদি সে চলে যায়, তাকে জিজ্ঞাসা করুন সে কি লিখে আমাকে দিয়ে গেছে। একটি ছোট ছেলে, আমি কীভাবে তার নিজের বৃদ্ধ বাবা-মাকে কষ্ট থেকে রক্ষা করতে পারি?
৩) তাকে উত্তর দিতে বলুন, কার ভরসায় তিনি আমাকে রাস্তার মাঝখানে রেখেছিলেন, যাকে তিনি স্বামী হিসাবে অগ্নি সাক্ষী রেখে নিয়ে এসেছিলেন?
৪) সাহস থাকলে বলুন, একবার নিজের মুখে বলুন, আমার কি ভুলের ফলে এটা হয়েছে।
৫) কোন স্বাধীনতার জন্য তিনি গিয়েছিলেন, কোন্ স্বাধীনতা যেখানে একে অপরের রক্ত চুষে খায়?
৬) আপনি কি প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন যে অসমের আদিবাসীরা তাদের প্রাপ্য স্বাধীনতা পেলে ন্যায়বিচার ও শান্তি পাবে? হবে না এমন হবে না। যতদিন মানুষ প্রকৃত মানুষ না হবে, ততদিন শিক্ষা প্রকৃতপক্ষে, কোনো স্বাধীনতা মানুষকে মুক্ত করতে পারে না যতক্ষণ না শিক্ষা মানুষের হৃদয় স্পর্শ করে, যতক্ষণ না মানুষ তাদের লোভনীয় উদ্দেশ্য মনে রাখে। হাজার বিদ্যুৎ মহন্ত যাক কিন্তু এই স্বাধীনতা মরিচিকা বাইরে কেউ নয়।
আমি তাকে ফিরে পেতে চাই না, তাকে সেখানে রাখতে হবে, আমার শুধু উত্তর চাই যে সে সত্যিই চলে গেছে। যদি সে আমাকে একবার বলে যে সে তার নিজের ইচ্ছায় চলে গেছে, আমি অবিলম্বে আমার জীবন থেকে তার নাম মুছে ফেলব। সে গিয়ে অসমকে স্বাধীন করুক। আমরা সবাই এর সাক্ষী থাকব। তবে একটা কথা বারবার বলব, তাকে এই যাত্রার নিশ্চয়তা দিন। সে আপনার সংগঠনে না থাকলে তাকেও বলুন। শুধু ঘর এগিয়ে যেতে আপনার মতামত জানান।