আমরা তদন্তের জন্য বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি : এসআইটির প্রধান
বরাক তরঙ্গ, ২৪ অক্টোবর : অসমের প্রিয় শিল্পী জুবিন গর্গের মৃত্যুর এক মাস পর তদন্তের জন্য সিঙ্গাপুরে গিয়েছিল অসম পুলিশের এসআইটির দুই সদস্যের একটি দল। তাঁরা বৃহস্পতিবার দেশে ফিরে আসে। সিঙ্গাপুর থেকে ফেরার পর শুক্রবার গুয়াহাটির সিআইডি কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন এসআইটির প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (এডিজিপি) মুন্না প্রসাদ গুপ্ত।
সিঙ্গাপুর সফর সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমরা তদন্তের জন্য বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। ২০ অক্টোবর আমরা প্রথমে সিঙ্গাপুরে অবস্থিত ভারতীয় উচ্চায়ুক্তের সঙ্গে বৈঠক করি। সেই বৈঠকে আমরা সিঙ্গাপুর থেকে প্রয়োজনীয় আইনি সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করি। এরপর ২১ অক্টোবর আমরা সিঙ্গাপুর পুলিশের উচ্চপর্যায়ের পাঁচ সদস্যের একটি দলের সঙ্গে বৈঠক করি।”
বৈঠক সম্পর্কে তিনি বলেন, “বৈঠকটি অত্যন্ত সফল হয়েছিল। সেই বৈঠকে আমরা সিঙ্গাপুর পুলিশের সঙ্গে তদন্ত সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য বিনিময় করেছি। সিঙ্গাপুর পুলিশ সেখানে সম্পন্ন করা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ভারতীয় উচ্চায়ুক্তের মাধ্যমে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে, যা আমাদের তদন্তের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
সিঙ্গাপুর পুলিশের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে এসআইটির প্রধান আরও বলেন, “আমরা তাদের জানিয়েছি যে, আমাদেরও নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তদন্ত সম্পূর্ণ করতে হবে। তাই তাদের আইনি সহযোগিতা সময়মতো পাওয়া প্রয়োজন। তারা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে এবং জানিয়েছে যে, তাদের নিজস্ব আইনি ব্যবস্থার মধ্যে থেকে যতটুকু সহযোগিতা সম্ভব, তা দ্রুত আমাদের দেবে।”
তিনি আরও জানান, “আমরা মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত সিঙ্গাপুরের ঘটনাস্থলগুলো পরিদর্শন করেছি। আইনি প্রক্রিয়ার সীমার মধ্যে থেকে আমরা যা যা তদন্ত করতে পারি, তা সম্পন্ন করেছি। তদন্তের সহায়ক হিসেবে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমরা সংগ্রহ করেছি। আমাদের এই সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে।”
সিঙ্গাপুরে পরিচালিত তদন্ত সম্পর্কে তিনি বলেন, “হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজের বিষয়টি আমরা সিঙ্গাপুর পুলিশকে জানিয়েছি। সেই ফুটেজ আমরা তাদের মাধ্যমেই পেতে পারব। সিঙ্গাপুর পুলিশ আশ্বাস দিয়েছে যে, দশ দিনের মধ্যেই তারা আমাদের তা সরবরাহ করবে।”
সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত প্রবাসী অসমিয়া ওয়াজিদ আহমেদের সাক্ষ্যগ্রহণের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “শুধু তিনিই নন, সিঙ্গাপুরের আরও কয়েকজন নাগরিকের বয়ানও আমাদের প্রয়োজন। আমরা আগেই সেই অনুরোধ পাঠিয়েছি এবং বৈঠকে এই বিষয়ে জোর দিয়েছি। সিঙ্গাপুরের নাগরিকদের বয়ান সিঙ্গাপুর পুলিশের মাধ্যমেই নেওয়া হবে। তাঁরা জানিয়েছে, দশ দিনের মধ্যেই সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আমাদের দেবে। তদন্ত চলছে, তাই এই মুহূর্তে তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।”
সিঙ্গাপুর পুলিশের সহযোগিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সিঙ্গাপুর পুলিশ ইতিমধ্যে প্রেস বিবৃতির মাধ্যমে জানিয়েছে যে, তারা ৯০ দিনের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন করনারের (Coroner’s Office) দপ্তরে জমা দেবে। পরবর্তী পদক্ষেপ করনারই গ্রহণ করবে। আমরা আমাদের তদন্ত প্রতিবেদনও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আদালতে দাখিল করব।”
এসআইটির সাক্ষ্যগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “আমাদের বয়ানগ্রহণ প্রক্রিয়া এখনো চলছে। আজ গরিমা শইকিয়া গর্গের বয়ান নেওয়া হয়েছে। তাঁর বয়ানও তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয়। এখন পর্যন্ত ৭০ জনেরও বেশি ব্যক্তির বয়ান নেওয়া হয়েছে। ইয়টের নাবিক বা চালকের বয়ান সিঙ্গাপুর পুলিশ নেবে এবং দশ দিনের মধ্যে আমাদের তা দেবে। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে, প্রয়োজনে আবারও সিঙ্গাপুর যেতে হতে পারে।”

