শ্রমিকের অন্ন, বাসস্থানের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে বিমানবন্দর কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না :  বিডিএফ

বরাক তরঙ্গ, ২৮ এপ্রিল : ডলু চা বাগান এলাকায় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স্থাপন নিয়ে সাম্প্রতিক যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে এবার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করল বিডিএফ। এক প্রেস বার্তায় বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় এই ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন যে বরাকে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স্থাপন অবশ্যই জরুরী এবং এতে বরাকের কারুর দ্বিমত নেই। কিন্তু যেভাবে এই প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যে এগিয়েছে তাঁতে এর বিনিময়ে সংশ্লিষ্ট বাগান এলাকার চা শ্রমিকদের অন্ন বাসস্থান থেকে বঞ্চিত করা হতে পারে বলে আমরা সন্দেহ করছি এবং তেমন হলে বিডিএফ এই উদ্যোগ কোনো অবস্থায়ই সমর্থন করবে না। তাই আমরা  দাবি জানাচ্ছি যে প্রশাসনকে এই ব্যাপারে সরাসরি শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করার পরই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

প্রদীপ বাবু বলেন, এই ব্যাপারে বাগান কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন ও সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপি অনুমোদিত সিটু, আইএনটিইউসি ও বিএমএস এই তিন ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে একটি চুক্তিপত্র সাক্ষরিত হয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে শ্রমিকরা সেই চুক্তি মানছেন না। প্রদীপ বাবু বলেন, তাহলে কি ধরে নিতে হবে যে এই তিন ইউনিয়নের নেতারা শ্রমিক স্বার্থের পরিপন্থী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ? যদি তা না হয় তবে তাঁরা শ্রমিকদের বোঝাতে কেনো ব্যার্থ হচ্ছেন ? বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক বলেন যে প্রশাসন শ্রমিকদের সাথে এই ব্যাপারে সরাসরি কথা বলার উদ্যোগ নেবেন বলে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।
বিডিএফ মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে এই ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন যে প্রস্তাবিত জমিতেই যে বিমানবন্দর করতে হবে তাঁর কোনো কারণ নেই। বদরপুরেও এটিকে স্থানান্তরিত করা যেতে পারে। কাজেই এই ব্যাপারে শিলচরের বিধায়ক এতো হম্বিতম্বি কেন করছেন তা দুর্বোধ্য। তিনি বলেন বিমানবন্দর অবশ্যই জরুরী তবে শ্রমিকদের অন্ন, বাসস্থানের বিনিময়ে তা মেনে নেওয়া যায়না। এবং এটাও মনে রাখতে হবে যে যাত্রী হিসেবে এর সুবিধা ভোগ করবেন কেবল দুই তিন শতাংশ নাগরিক। দেশের ৮০ শতাংশ নাগরিক এখনো দারিদ্র্য সীমার নিচে অবস্থান করছেন। পণ্য পরিবহন অবশ্যই উন্নয়নে সহায়ক হতে পারে কিন্তু তার সুফল কতটা প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছবে তা বলা মুশকিল। তিনি বলেন, এরচেয়ে অনেক জরুরী ব্যাপার হচ্ছে করিমগঞ্জে প্রস্তাবিত মেডিক্যাল কলেজের বাস্তবায়ন। তার প্রশ্ন সাংসদ রাজদীপ রায় এই ব্যাপারে নীরব কেন ?

হৃষীকেশ আরও বলেন, মাওবাদীদের আনাগোনা এই অঞ্চলে শুরু হয়েছে পাঁচ বছর আগে। কিন্তু তখন সিবিআই এই ব্যাপারে তদন্ত করেও কিছু বের করতে পারেনি। তবে বর্তমান প্রসঙ্গে যদি সত্যিই মাওবাদীদের যোগাযোগ থাকে তবে তাঁর জন্য তাদের দোষারোপ করে লাভ কি ? যদি সরকার, প্রশাসন শ্রমিকদের দের বঞ্চনা, লাঞ্ছনা করে, যদি শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা দালালের ভুমিকা নেয় তবে মাওবাদীরা সেই অবস্থার সুযোগ নেবেই। তাই দরকার শ্রমিকদের আস্থা অর্জন।

Author

Spread the News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *