শিলচরে শহিদ স্মরণে পদযাত্রা সুরক্ষা সমিতির
বরাক তরঙ্গ, ২১ জুলাই : ২১ শে জুলাই মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার আন্দোলনের অন্যতম দুই শহিদ জগন্ময় দেব ও দিব্যেন্দু দাসের স্মরণে এবং ভাষিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে শিলচরের রাঙ্গিরখাড়িস্থিত ভাষা শহিদ বেদীর পাদদেশ থেকে একটি পদযাত্রার আয়োজন করে ভাষা আইন সুরক্ষা সমিতি, আসাম। বিকেল ৫ টায় সেখানে সমবেত হন বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা। সেখানে প্রথমে শহিদ বেদিতে মাল্যদান করেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য তথা ভাষা আইন সুরক্ষা সমিতির সভাপতি ড. তপোধীর ভট্টাচার্য। তারপর একে একে মাল্যদান করেন হরিদাস দত্ত, কিশোর ভট্টাচার্য, শিহাব উদ্দিন আহমেদ, নির্মল কুমার দাস, দীপঙ্কর চন্দ, অরিন্দম দেব,কমল চক্রবর্তী, তপোজ্যোতি ভট্টাচার্য, হানিফ আহমেদ বড়ভূইয়া, তমোজিৎ সাহা, হিল্লোল ভট্টাচার্য, মধুমিতা দেব, ফারুক লস্কর, বিজিত কুমার সিংহ, নীলু দাস, বিবেক আচার্য, মিহির নন্দী, বিশ্বজিত দাস, ভবতোষ চক্রবর্তী, অসিত রায়, প্রশান্ত ভট্টাচার্য, গৌরা চক্রবর্তী, চাম্পালাল দাস, খাদেজা লস্কর প্রমুখ। মাল্যদান পর্বের পর পদযাত্রার সূচনায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন ড. তপোধীর ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন ১৯৮৬ সালের ২১ শে জুলাই উগ্রপ্রাদেশিকতাবাদীদের চক্রান্তকে বাস্তবায়িত করতে তদানীন্তন এজিপি সরকারের জারি করা কুখ্যাত ‘সেবা সার্কুলার’ প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনে শহিদ হয়েছিলেন জগন্ময় দেব ও দিব্যেন্দু দাস। তাদের আত্মবলিদান সেবা সার্কুলার প্রত্যাহার করতে আসাম সরকারকে বাধ্য করেছিল। কিন্তু ভাষিক আগ্রাসন থেমে যায়নি। বরাক উপত্যকার সরকারি কাজে, বিজ্ঞাপনে অসমীয়া ভাষার প্রয়োগ ঘটানো হচ্ছে অত্যন্ত সুকৌশলে। তিনি ভাষিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একজোট হতে সবাইকে আহবান জানান। পদযাত্রা রাঙ্গিরখাড়ি থেকে শুরু হয়ে ক্রমে ক্রমে হাসপাতাল রোড, অম্বিকাপট্টি, প্রেমতলা শিলংপট্টির শহিদ কমলা ভট্টাচার্যের মূর্তির পাদদেশে পৌঁছায়। মিছিলে পা মেলান পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তমাল বনিক, জয়দীপ ভট্টাচার্য, ঋষিকেশ দে, পরিতোষ চন্দ্র দত্ত, সীমান্ত ভট্টাচার্য প্রমুখ।
পদযাত্রার সমাপ্তিতে বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ পরিতোষ চন্দ্র দত্ত। তিনি ভাষিক আগ্রাসনের পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় চরম ব্যর্থতার বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ সাব্যস্ত করতে আহ্বান জানান। আজকের এই পদযাত্রায় সামিল সদস্যরা ২০১০ সালের ২১ শে জুলাই এনআরসি’র পাইলট প্রজেক্টের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বড়পেটা জেলার চারজন শহিদকেও স্মরণ করেন।