রাঙ্গিরখালে আবর্জনার বিশাল স্তূপ, ১৯ নং ওয়ার্ডের মানুষের চরম দুর্ভোগ, ক্ষোভ
বরাক তরঙ্গ, ১৬ মে : সম্প্রতি রাঙ্গিরখাল নালার জল নিষ্কাশন ও সাফাইর কাজে জেলা প্রশাসনের সেই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছিলেন সচেতন নাগরিকরা। উল্লেখ্য, চলিত বছরের এপ্রিল মাসের শেষ দিকে শিলচরের বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী ব্যক্তিগতভাবে রাঙ্গিরখাল ও সিঙ্গেরখাল নালা দুটোর সাফাই ও জল নিষ্কাশনের উদ্যোগ নেন। কিন্তু দিনকয়েকের টানা বর্ষণের দরুণ সেই কাজের জন্য জেলা প্রশাসনের বরাতপ্রাপ্ত কর্মীরা কাজ অধরা রেখে চলে যান। যার ফলে ব্যাপক মাশুল গুনতে হচ্ছে বিশেষ করে শিলচর শহরের ১৯ নং ওয়ার্ডের জনসাধারণকে। টানা বর্ষণে রাঙ্গিরখাল নালার জল নিষ্কাশন তো দুরেরই কথা বরং নালার স্থানে স্থানে বিরাট রকমের আবর্জনার স্তূপ পরিলক্ষিত হচ্ছে।
রবিবার সংবাদমাধ্যম ডেকে এলাকার বিশিষ্ট নাগরিক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য, প্রিয়তোষ ভট্টাচার্য, বিবেকানন্দ ব্রহ্মচারী, পরিতোষ নাগ, ব্রজগোপাল চক্রবর্তী, প্রসেনজিৎ ভট্টাচার্য, শঙ্কর দেব, প্রীতম ভট্টাচার্য, বাবলি দেবরা তীব্র ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন, প্রতিবছরেই শুকনোর মরশুমে এলাকায় তেমন অসুবিধে না হলেও বর্ষার মরশুমে তাদের ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বর্ষার মরশুমে নালার নোংরা জল অনেকের বাড়িতে ঢুকে নানা সমস্যার সৃষ্টি করে। এছাড়াও নালায় স্থানে স্থানে অবর্জনীয় সামগ্রীর স্তূপ জমা হয়ে নালার ওপারে জনগণের চলাচলের জন্য থাকা সেতুগুলোর বিশেষ ক্ষতি করে। এলাকার বহু লোকেরা নিজস্ব উদ্যোগে আবর্জনার স্তূপ সারাইয়ের কাজ করতে দেখা গেছে। সম্প্রতি শিলচরের বিধায়ক ব্যক্তিগতভাবে নালা সাফাইয়ের কাজ হাতে নিলেও দিনকয়েকদিন সাফাই এবং জল নিষ্কাশনের কাজ করে চলে যান বরাতপ্রাপ্ত কর্মীরা।
স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করে জানান, এলাকার কিছুদুরে রয়েছে মিউনিসিপাল মার্কেট। সেখানের মাছ-মাংসের ব্যবসায়ীরা নিজেদের কার্যসিদ্ধি করতে মাছ-মাংসের পরিত্যক্ত জিনিষগুলো নালার জলে ছুঁড়ে ফেলে দেন এবং জলের স্রোতে তা স্থানে স্থানে জমাট বেঁধে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। ফলে নানা রোগের মোকাবিলা করতে হচ্ছে সেই ওয়ার্ডের জনগণদের। এহেন পরিস্থিতিতে তীব্র সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে এলাকার আবাল-বৃদ্ধ-বণিতাদের। বিধায়কের তৎপরতায় কাজ শুরু হলেও কেনো মাঝপথে কাছ অসূম্পর্ণ রেখে চলে গেলেন বরাতপ্রাপ্ত শ্রমিকরা এনিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেন তারা। এদিন তারা আরও অভিযোগে জানান, সরকার উন্নয়নমূলক কাজ করতে অর্থবরাদ্দ করলেও তাদের এলাকায় তার কোনো ছোঁয়া লাগেনি। বিগতদিনে মহিলা কংগ্রেস সভানেত্রী তথা বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সুস্মিতা দেবের শাসনকালে এলাকায় থাকা জনগণের চলাচলের একমাত্র সড়কটি সিসি ব্লকের কাজ করা হয়। তাও শুধু একশো মিটার কাজ করা হয়। পরবর্তীতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার আরও একশো মিটার কাজ করে। এরপরও পুরো সড়কটিতে সিসি ব্লকের কাজ সম্পন্ন হয়নি।
শুধু তাই নয় এলাকায় থাকা স্ট্রিটলাইটগুলো প্রায় সময়েই অকেজ থাকে। বিষয়টি বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের নজরে দিলে তারাও তেমন তাতে কর্ণপাত করেন না বলে অভিযোগের সুরে জানান স্থানীয়রা। তাই অতিসত্ত্বর সাফাইর কাজ সম্পন্ন সহ এলাকায় প্রত্যেকটি বৈদ্যুতিন খুঁটিতে স্ট্রিটলাইট সংযোজন করতে এবং জল নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা করে দিতে শিলচরের সাংসদ ডাঃ রাজদীপ রায়, বিধায়ক দীপায়ণ চক্রবর্তী এবং কাছাড় জেলার জেলাশাসক কীর্তি জল্লির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।